Published : 08 Jun 2022, 03:46 PM
হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের রাসায়নিক নাম: H2O2, আর পানির রাসায়নিক নাম, আমরা সবাই জানি: H2O। এই দুই যৌগের মধ্যে পার্থক্য এটুকুই, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের তুলনায় পানিতে একটা অক্সিজেন পরমাণু কম থাকে। কোনো উপায়ে যদি পানির সঙ্গে একটা অক্সিজেন পরমাণু যোগ করে দেয়া যায়, তাহলেই হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড তৈরি হবে। ১৭৯৯ সালে বিখ্যাত জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রিডরিখ হুমবোল্ড (১৭৬৯-১৮৫৯) 'অক্সাইড' আবিষ্কার করেন। এর ঊনিশ বছর পর ফরাসি বিজ্ঞানী লুই জ্যাক থেনার (১৭৭৭-১৮৫৭) আবিষ্কার করেন হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড। ফরাসিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডকে 'অক্সিজেন-মিশ্রিত পানি' বলা হয়। এই যৌগ প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়, মানবদেহেও আছে, কারখানাতেও তৈরি করা হয়, ফার্মেসিতেও বিক্রি হয়। এটা বৃক্ষের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, অ্যান্টিসেপ্টিক হিসেবেও এর ব্যবহার আছে।
পানির সঙ্গে যখন অতিরিক্ত একটি অক্সিজেন পরমাণু যোগ করা হয়, শক্তিপ্রয়োগ করেই সেটা করা হয়। বাইরের কারও উড়ে এসে জুড়ে বসা মানুষ যেমন পছন্দ করে না, যৌগও এমন ধারা আচরণ পছন্দ করে না (যৌগ বলে কি মানুষ নয়!) হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড চায়, কোনো ফিকিরে, কোনো অজুহাতে অতিরিক্ত অক্সিজেন পরমাণুটিও ঝেড়ে ফেলে দিয়ে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতে, পূর্বাবস্থায় ফিরে গিয়ে আবার পানি হয়ে যেতে। অক্সিজেন পরমাণুটিও খামাখা পানিতে ডুবে থাকতে পছন্দ করে না, সেও চায় ছুটে বেরিয়ে যেতে, কারণ 'স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায়!' যদিও মুক্তি অত সহজ নয়, বন্ধন যখন টুটে যায়, শক্তিও তখন মুক্তি পায়। শক্তির এই মুক্তিই বিষ্ফোরণের কারণ।
আলোর সংস্পর্শে আসামাত্র হাইড্রোজের পারঅক্সাইডে আটকে থাকা উটকো অক্সিজেন পরমাণুরা একে একে, ধীরে, অতি ধীরে, নিজেদের মুক্ত করতে শুরু করে। আলোর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখার জন্যে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডকে নীল বা বাদামি রঙের কাচের বোতলে রাখা হয়। ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার উত্তাপে পানি বাষ্পায়িত হয়, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড বাষ্পায়িত হতে একটু বেশি, ১৫০ ডিগ্রি উত্তাপ হলেই চলে। তাপের সংস্পর্শে আসলে অক্সিজেন অনুদের পোয়াবারো! এক সঙ্গে অগণিত অক্সিজেন পরমাণু 'আজ আমাদের ছুটি ও ভাই!' বলে যৌগের বাঁধন ছেড়ে বের হতে চাইলেই ঘটে বিষ্ফোরণ!
ধাতুর কনটেইনারে নাকি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রাখা যায় না, সেক্ষেত্রে অক্সিজেন পরমাণুটি অক্সিডাইশন করে জং ধরিয়ে দেবে ধাতুতে। সোনায় জং ধরে না, কিন্তু সোনার কনটেইনার তৈরিতে অকল্পনীয় খরচ। সুতরাং বিশেষভাবে তৈরি প্ল্যাস্টিক কনটেইনারে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রাখা হয়। তুরষ্ক থেকে আমদানি করা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের কয়েক হাজার কনটেইনার খালাস হবার অপেক্ষায় চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে ছিল কয়েক দিন আগপর্যন্ত। বাংলাদেশে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড প্ল্যাস্টিকের তৈরি যে কনটেইনারে রাখা হয় কিংবা যে কনটেইনারে করে এই যৌগ বিদেশে রপ্তানি করা হয়, সেগুলো উপযুক্ত মানের কিনা সেটা দেখা বিষ্ফোরক অধিদপ্তরের দায়িত্ব।
জুন মাসে এমনিতেই বেশ গরম পড়ে বাংলাদেশে, তার ওপর লোহার কনটেইনারের ভেতরে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের প্লাস্টিক কনটেইনারগুলো রাখা ছিল। কনটেইনারের ভিতরে উত্তাপ যদি কোনো কারণে বেড়ে যায়, তাতেই অক্সিজেন পরমাণুগুলো মুক্তির সুযোগ পেয়ে যাবে। লক্ষ লক্ষ অক্সিজেন পরমাণু যখন একসঙ্গে মুক্ত হতে চেষ্টা করে, তখন প্রচণ্ড চাপ ও উত্তাপের সৃষ্টি হয়, ধরা যাক, প্রতিটি কনটেইনারে কয়েক শ বা হাজার ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। কনটেইনারের প্লাস্টিক যদি উপযুক্ত মানের না হয়, তবে সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে ফেটে যায় এবং দাহ্য পদার্থ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন হতে পারে, দুই অক্সিজেন পরমাণুর মধ্যে কোনটি বন্ধনমুক্ত হয়? পানি হবার সময় যে অক্সিজেন পরমাণুটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে মিলিত হয়েছিল সেটির বন্ধন দৃঢ়, আর যে পরমাণুটি পরে এসে যুক্ত হয়েছে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড গঠনের সময়ে, সেটির বন্ধন ঢিলা। ঢিলা বন্ধনের অক্সিজেন পরমাণুটি প্রথম সুযোগে বন্ধনমুক্ত হয় এবং এর ফলে হাইড্রোজের পারঅক্সাইড পানিতে পরিণত হয়। বিষ্ফোরণে সেই পানির কিছুটা মুহূর্তে বাষ্পায়িত হয়ে উবে যায়, বাকিটা আগের মতোই তরল হয়ে পড়ে থাকে। তরল আর বাষ্পীভূত উভয় পানির কারণে বিষ্ফোরণের ভয়াবহতা কিছুটা কমে।
আগুন একাধিক রকমের হয় এবং একেক ধরনের আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে একেক পদ্ধতি কার্যকর হয়। কাঠ-কাপড় ইত্যাদি কার্বনে আগুন লাগলে পানি ছিটালে আগুন নিভে যায় দুই কারণে। প্রথমত কাঠ বা কাপড় ভিজে গিয়ে তার দাহ্যতা কমে যায় এবং পানি বাষ্প হয়ে অক্সিজেন-সংযোগে বাধা প্রদান করে। তেলে বা বৈদ্যুতিক সার্কিটে আগুন লাগলে পানি ঢেলে সেই আগুন নেবানো যায় না। পানি বরং আগুনকে উসকে দেয়। বালি ছিঁটিয়ে বা কম্বল চেপে ধরে এ ধরনের আগুনে অক্সিজেনের সংযোগ বন্ধ করতে হয়। ফোমও অনেকটা কম্বলের কাজই করে। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের (কিংবা যে কোনো পারঅক্সাইডের) আগুন না কাঠ-কাপড়ের মতো, না তেলের মতো। এ আগুন একেবারে আলাদা। আগুন জ্বলার জন্য এক্ষেত্রে অক্সিজেন সংযোগের প্রয়োজন নেই, আগুনের উৎসেই বিপুল পরিমাণ অক্সিজেন রয়েছে। এই আগুন পানি দিয়ে নেবানো যাবে না, ফোম দিয়ে নেবানো আরও বিপদজনক, কারণ প্রথমত, ফোম নিজেই দাহ্য পদার্থ এবং দ্বিতীয়ত, যে পরিমাণ অক্সিজেন পরমাণু প্রতি সেকেণ্ডে অবমুক্ত হচ্ছে, ফোমের আবরণ দিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।
কনটেইনার টার্মিনালে অনেক রকম পণ্যের কনটেইনার ছিল। গার্মেন্টের কাপড় কিংবা প্রাণ কোম্পানির খাবার ছিল যেসব কনটেইনারে সেগুলো পানি দিয়ে নেভানো যেতেই পারে। তবে একটি ক্ষেত্রে অবশ্য পানি বিপদজনক হতে পারে। আমরা ছোট বেলায় দেখেছি, হারিকেনের চিমনিতে পানির ছিটা পড়লে চিমনি ফেটে যেত। উত্তপ্ত একটি চিমনিতে যেখানে পানির ছিঁটা পড়ে সেখানে উত্তাপ হঠাৎ কমে যায় এবং চাপ হঠাৎ বেড়ে-কমে কাচ ফেটে যায়। উত্তপ্ত কনটেইনারে পানি ছিঁটালেও একই ঘটনা ঘটতে পারে। যে কনটেইনার কোনো কারণে তখনও ফাটেনি, পানি লেগে হঠাৎ সেটি ফেটে ছিঁটকে আসতে পারে মরণান্তক আগুন নিয়ে কোনো উল্কাপিণ্ড বা বোমার মতো।
পানি দিয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করে সীতাকুণ্ডে ফায়ার ব্রিগেড হয়তো ভুল করেছে কিংবা হয়তো কোনো ভুল করেনি। কিন্তু এই ভুল না করেও তাদের উপায় ছিল না। ওদের একটাই বিকল্প ছিল, আগুন জ্বলছে, হা করে তাকিয়ে দেখা, কিংবা পাকিস্তানে সম্প্রতি যেমন দেখা গেছে, জড়ো হওয়া লোকজনের সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের সামনে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করা।
দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, কিন্তু 'দুর্ঘটনার উপর কারও হাত নেই'– এ কথাটা সত্য নয়। দোষতো কারও না কারও আছেই, কম আর বেশি। সাবধানের মার নেই, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা সময় থাকতে সাবধান হয়েছিলাম কিনা। কী কারণে আগুন লেগেছে, কোন ব্যবস্থা নেওয়া হলে আগুন লাগত না কিংবা আগুন নিয়ন্ত্রণ করা যেত, কোন ধরনের আগুন কীভাবে নেভানো যেতে পারে… এই সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পেশাদার জ্ঞানের প্রয়োজন।
কয়েক বছর আগেও বাংলাদেশ সরকারের একেকটি 'প্রযুক্তিভিত্তিক' অধিদপ্তর বা পরিদপ্তরের দায়িত্বে ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত, শিক্ষিত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা। গত দেড় দশকের শাসনামলে এই পেশাদারদের সরিয়ে প্রতিটি অধি ও পরিদপ্তরে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একেক জন অ্যাডমিন আমলাকে। সব আমরা খাবো! সমস্যা হচ্ছে, 'যার কাজ তার সাজে, অন্য লোকের লাঠি বাজে।' লাঠি বাজছে, মানুষ মরছে এবং মূল গলদটা আসলে কোথায় বুঝতে না পেরে, কী সরকার, কী প্রশাসন, কী জনগণ, এখানে ওখানে হাতড়ে বেড়াচ্ছে।
কর্তাব্যক্তিরা নিজেদের সবজান্তা বলে দাবি করলেও, সবাই সব কিছু জানবে– এমনটা হতেই পারে না। প্রশাসন-নির্ভর সরকারও চায় না সাংবাদিকেরা কিংবা বিশেষজ্ঞরা সরকারের কোনো ব্যাপারে মুখ খুলুক, কারণ মুখ খুললেই তাদের অজ্ঞতা ও আনাড়িপনা দৃশ্যমান হবে। যেহেতু দুই নম্বরী ছাড়া ব্যবসা হয় না আজকাল, বিশেষজ্ঞ বা সাংবাদিকেরা উচিৎ কথা বললে ব্যবসায়ীরাও নাখোশ হয়। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রশাসনের গাঁটছড়া বাঁধা আছে, থাকতেই হয়, কেন, সেটা বলা বাহুল্য।
যখনই কোনো বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা দেশের, জনগণের নিরাপত্তা ও টেকসই অগ্রগতিকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে আইনের প্রয়োগ করতে চায়, লাভ কমে যাবার ভয়ে ব্যবসায়ীরা প্রশাসনকে বাধ্য করে সেই কর্মকর্তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে। দুদকসহ বিচিত্র সব অস্ত্র প্রশাসনের হাতে আছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাঁধে সেই সব অস্ত্র রেখে দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ রাখে। এই দুষ্ট গোলকধাঁধা থেকে সহজে আমাদের মুক্তি নেই। সীতাকুণ্ডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড কিছুটা হলেও সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতন্ত্রহীনতা এবং পশ্চাদপদ, ঔপনিবেশিক ও গণবিরোধী প্রশাসনের ফলশ্রুতি– এই ধারণা ভিত্তিহীন বলা যাবে না।
বাংলাদেশের অনেক জায়গায় হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড কিংবা অন্য অনেক মারাত্মক রাসায়নিক মজুদ করা আছে। সব জায়গায়, সব দিন বিষ্ফোরণ হয় না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লোকজন প্রতিবাদ করে না, ভয়ে নীরব থাকে। নীরবতা ও শান্তি সমার্থক নয়। নীরবতা সম্মতির লক্ষণও নয়। 'ঘুমন্ত জলের চেয়ে বিপদজনক কিছু নেই!' ফরাসি প্রবাদ। মানুষকে চুপ করাতে সক্ষম হয়ে যারা সাফল্যের হাসি হাসছে, দীর্ঘমেয়াদে তারা নিজের পায়েই কুড়াল মারছে! প্রশাসন এবং ব্যবসায়ী দুষ্টচক্র মানুষের মুখ বন্ধ করতে সক্ষম হচ্ছে বটে, কিন্তু এই চাপিয়ে দেওয়া নীরবতা একের পর এক বিপদও ডেকে আনছে।
গত কয়েক দশকে সীতাকুণ্ড উপজেলার অনেক উন্নয়ন হয়েছে সত্য, কিন্তু প্রকৃতি এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অনেক অপূরণীয় ক্ষতিও হয়েছে। পাহাড়, নদী, খাল, সমুদ্র, ভূগর্ভস্থ জল, কৃষি গত দুই দশক যাবৎ চরম দূষণের শিকার বলে অভিযোগ করছেন সীতাকুণ্ডের সংবেদনশীল অধিবাসীরা। এক কালের পর্বত-কুন্তলা, সাগরমেখলা সীতাকুণ্ড দিন দিন নরককুণ্ডে পরিণত হচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা এর মূল হোতা, কিন্তু রাজনীতিবিদ আর প্রশাসনের সহায়তা ছাড়া তাদের একার পক্ষে এই অপকর্ম সম্ভব হতো না নিশ্চয়ই। মানুষের মনে দিনকে দিন ক্ষোভ জমা হচ্ছে। উপযুক্ত পরিবেশ এবং প্রতিবেশ পেলেই এই ক্ষোভ বিষ্ফোরিত হবে, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের মতো। অগ্নিদাহ বিপদজনক, আমার, আপনার, সবার জন্যেই। আজ সীতাকুণ্ড অগ্নিকুণ্ড হয়েছে, কাল সারা দেশ অগ্নিকুণ্ড হয়ে আমাদের জীবনটা নরককুণ্ড বানিয়ে দেবে।
স্কুলের সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ে ভোল্টার বিদ্যুৎকোষের কথা পড়েছিলাম। একটি বিকারে অ্যাসিড-মিশ্রিত পানিতে তামা ও দস্তার পাত দাঁড় করিয়ে দিলে দুই পাতের সংযোগ তারে বিদ্যুৎপ্রবাহ শুরু হয়। এই পানি কিছুটা দূষিত হতে হয়, ঠিক যেমন রাজনীতি শতভাগ খাঁটি হয় না। সমস্যা হচ্ছে, ধাতব পাতে বুদবুদ জমে কিছুক্ষণ পর বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। তখন অবশ্য পানিটা বদলে দিলে বিদ্যুৎপ্রবাহ পুনরায় চালু হতে পারে।
প্রকৃত গণতন্ত্রে নির্দিষ্ট সময় পর পর রাজনীতির দূষিত জল বদলানোর ব্যবস্থা থাকে। পরিবারতন্ত্র, রাজতন্ত্র. গোষ্ঠীতন্ত্র এবং স্বৈরতন্ত্রে টেকসই উন্নয়ন না হওয়ার একটি প্রধান কারণ, একই (দূষিত) পানির পৌনপুনিক ব্যবহার। ভাগ্য, স্বভাব এবং চেষ্টা– মনুষ্য জীবনের তিন প্রধান নিয়ামক। বেশির ভাগ জাতি ভাগ্যদোষে, স্বভাবদোষে এবং চেষ্টার অভাবে সমাজ-রাজনীতির বিকারের পানিটা বদলাতে পারে না। মাঝেমাঝেই তারা রাসায়নিক বিষ্ফোরণে বেঘোরে মরে এবং প্রজন্মান্তরে গণতন্ত্রের বৈদ্যুতিন প্রবাহের সুফল থেকে বঞ্চিত থাকে।