বিএনপি কেন আন্দোলন করে না– শেষ পর্ব

একটি দলের ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন যে সমার্থক নয়, সে সম্পর্কে বিএনপির মাঠপর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী ওয়াকিবহাল নয়। তাদের কাছে গণতন্ত্র মানে হচ্ছে দলকে ক্ষমতায় আসীন করা।

সাঈদ ইফতেখার আহমেদসাঈদ ইফতেখার আহমেদ
Published : 24 May 2023, 10:52 AM
Updated : 24 May 2023, 10:52 AM

বিএনপি সম্পর্কে জনমানসের একটা বড় অংশের ধারণা, তারা যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে আওয়ামী লীগের সমর্থক এবং অমুসলিম জনগণের ওপর ব্যাপক হামলা, লুটপাট চালানো হবে। দেশে নৈরাজ্য, অরাজকতা হবে।

২০০১-এর অভিজ্ঞতা, মাঠপর্যায়ের কিছু নেতাকর্মীর বক্তব্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু বিএনপি অ্যাক্টিভিস্টের কথাবার্তা শুনে অনেকের মনে এ ধারণা জন্মেছে। তারা মনে করছে, বিএনপির ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তনের মানে হচ্ছে রাজনৈতিক বিরোধী এবং অমুসলিমদের ওপর জামায়াত এবং বিএনপির যৌথ সন্ত্রাসের ক্ষেত্র তৈরি করা।

সাধারণ মানুষের প্রবণতা হচ্ছে সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্য থেকে দূরে থাকা। কেননা, এসব তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপনকে নানাভাবে ব্যাহত করে। বিএনপিকে ঘিরে গড়ে ওঠা এ ধরনের উপলব্ধি দলের সমর্থকদের একটা অংশকেও দলের আন্দোলন প্রচেষ্টা থেকে দূরে রাখছে। এ ধরনের ধারণার একটা প্রভাবশালী উপস্থিতি ক্ষমতাসীন দলকেও তাদের ক্ষমতায় থাকার যৌক্তিকতার বয়ান নির্মাণে সহায়তা করছে।

ঠিক একইভাবে ক্ষমতাসীনদের সহায়তা করছে, অমুসলিমদের প্রতি বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের দৃষ্টিভঙ্গি। অবশ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের অন্তত তিন শতাংশ অমুসলিম। তাদের অনেকেই দলের প্রতি নিবেদিত। দলের জন্য জেল-জুলুমের শিকার হয়েও তারা একনিষ্ঠভাবে দল করে যাচ্ছেন।

জাতীয় এবং স্থানীয় নির্বাচনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্তত ৭ থেকে ৮ শতাংশ নিয়মিত বিএনপিকে ভোট দিয়ে থাকেন। কিন্তু দেখা গেছে, বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের একটা বড় অংশ অমুসলিম, বিশেষত হিন্দুদের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। এটি তাদের কথায়, আচরণে, সোশ্যাল মিডিয়ায় বক্তব্যে, ক্ষেত্রবিশেষে স্লোগানে প্রকাশ পায়। বস্তুত এসবের ফলে অমুসলিম জনগণের উল্লেখযোগ্য অংশ নিজেদের বিএনপি থেকে দূরে রাখছে।

বর্তমান সময়ে নানাবিধ সাম্প্রদায়িক হামলা, নির্যাতনের শিকার হলেও অমুসলিম জনগণের বেশিরভাগ মনে করছে, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হবে।

দীর্ঘ সময়েও বিএনপি অমুসলিম জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারেনি। আস্থা অর্জনের সে ধরনের চেষ্টাও তাদের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়নি। আস্থা অর্জিত না হবার মূল কারণ বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের বড় অংশের অমুসলিম জনগণের প্রতি জামায়াত, মুসলিম লীগের যে দৃষ্টিভঙ্গি, অনেকটা সেভাবেই তাদের দেখবার কারণে।

বর্তমানে পশ্চিমা দুনিয়ার সমর্থন পাবার জন্য বিএনপি মরিয়া। এ সমর্থন পাবার অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হচ্ছে বিভিন্ন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের—ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত, বর্ণ, যৌন আচরণগত—প্রতি দলের দৃষ্টিভঙ্গি উদার করা।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে বিষয়টি বোঝেন না এমন নয়। ব্যক্তিজীবনে তারা প্রায় কেউই সাম্প্রদায়িক নন। তারা প্রায় সবাই সেক্যুলার, অনেকে বড় দাগে যাকে বলে পশ্চিমা জীবনাচারণ, সেটাতেও অভ্যস্ত।

জিয়াউর রহমান নিজেও ব্যক্তিজীবনে সেক্যুলার এবং মননের দিক থেকে পশ্চিমা বা ‘আধুনিক’ হওয়া সত্ত্বেও সংবিধানে ধর্মীয় পরিভাষা অন্তর্ভুক্ত করেন রাজনৈতিক সুবিধা পাবার জন্য। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিকাশের পথ তার হাত দিয়েই তৈরি হয়। একইসঙ্গে তিনি এ বিষয়েও সচেতন ছিলেন যে, জামায়াতের সঙ্গে তার দল সংশ্লিষ্ট হলে তা দলটির জন্য ক্ষতিকর হবে।

জিয়ার সময় এবং এরশাদ আমলে বিএনপি কিছু ধর্মীয় রেটোরিক ব্যবহার করলেও মাঠপর্যায়ের কর্মীরা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের মতো দৃষ্টিভঙ্গি ওই অর্থে ধারণ করতেন না। কিন্তু পরবর্তীতে দীর্ঘসময় জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা, মাঠপর্যায়ের কর্মীদের দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। ফলে অমুসলিম জনগণের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে শুরু করে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের বড় অংশের সঙ্গে ইসলাম ধর্মভিত্তিক দলসমূহের নেতাকর্মীদের পার্থক্য করা অনেক সময়েই দুরূহ হয়ে পড়ে।

বিএনপির বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যে ধারণা, সেখানে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বসবাসকারী সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণের মানুষ সমঅধিকার এবং সমমর্যাদা সম্পন্ন বলে দাবি করা হয়। তাদের ভাষায় বাংলাদেশের সকল জনগণের জাতীয়তাবাদ, জাতিভিত্তিক নয়—সমান অধিকার এবং মর্যাদার ভিত্তিতে, ভূখণ্ডকেন্দ্রিক, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানসহ শীর্ষ বিএনপি নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক বাস্তবতায় তাদের ভাষায় অবিশ্বাসী (নাস্তিক) এবং সংশয়বাদীদের স্বীকৃতি দিয়ে তারাও সমমর্যাদাভুক্ত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের অন্তর্গত বলে বলছেন।

এটি পরিষ্কার যে, বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব দলের অবস্থান কিছুটা উদারীকরণ করে, আজকে দলের যে অতি ডান অবস্থান, সেখান থেকে কিছুটা বামে সরে কেন্দ্রীয় ডানে (central right) ফিরে যেতে চাইছেন। কিন্তু বামের দিকে সরবার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দলটির তৃণমূলের কর্মীদের বড় অংশটি।

বাস্তবতা হচ্ছে, অতি ডান অবস্থান থেকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দলকে বের করে না আনতে পারলে, একদিকে যেমন অমুসলিম জনগণের মূল অংশের সমর্থন না পাওয়ার যে ধারা, সেটা যেমন অব্যাহত থাকবে, তেমনি পশ্চিমা দুনিয়ার কাছেও তাদের আশানুরূপ গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া দুরূহ হবে।

কিছুটা বামে সরে আসবার চেষ্টা থেকেই বিএনপি জামায়াতসহ ধর্মভিত্তিক দলগুলো থেকে সাময়িক বা কৌশলগতভাবে হলেও দূরত্ব বজায় রাখবার নীতি নিয়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে ক্ষমতাসীন বলয়ের বাইরে নাম বা প্যাডসর্বস্ব কিছু দল ব্যতিরেকে অন্য যে সমস্ত দল রয়েছে, তাদের সবাইকে বিএনপি তার ধারার আন্দোলনে যুক্ত করতে পারছে না। ফলে প্যাডসর্বস্ব দলগুলোর সঙ্গেই বিএনপিকে বারবার বৈঠক করে সময় নষ্ট করতে দেখা যাচ্ছে। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর যে শক্তি ভারসাম্য, সে ভারসাম্যে আওয়ামী লীগের বিপরীতে বিএনপির দুর্বল অবস্থানকে প্রতিভাত করছে।

অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে এককালের আওয়ামী লীগ ঘেঁষা সিপিবি এবং বাসদ বিএনপির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। এটা বিএনপিকে কিছুটা সুবিধা দিলেও সার্বিকভাবে দলগুলোর ক্ষমতা ভারসাম্যের যে সমীকরণ, সে সমীকরণে তেমন ভূমিকা পালন করতে পারছে না, দল দুটোর রাজনৈতিক অঙ্গনে অতীব দুর্বল অবস্থানের জন্য।

বিএনপি দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করছে বলে দাবি করছে। তবে ইংরেজিতে যাকে irony বলে, সে irony হলো, বিএনপি তার দলের অভ্যন্তরেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। গণতান্ত্রিক পন্থায় দল পরিচালনার কোনো প্রচেষ্টাও তাদের মাঝে কখনো পরিলক্ষিত হয়নি।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত বিএনপি চলে আসছে একক নেতৃত্বে। নেতার ইচ্ছা, অনিচ্ছা, নির্দেশই দলের শেষ কথা। অর্থাৎ, বিএনপি অভ্যন্তরীণভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে স্তালিনের নেতৃত্বাধীন সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টি বা উত্তর কোরিয়ার কিম জং উনের নেতৃত্বাধীন ওয়ার্কার্স পার্টির মতো করে।

বিএনপিতে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। আবার দেখা গেছে, বিএনপির মতো দলগুলোতে যখন কাউন্সিল বা সম্মেলন হয় তখন গণতান্ত্রিকভাবে ভোটের মাধ্যমে না হয়ে এক ব্যক্তির ইচ্ছায় বিভিন্ন পদে নেতা ‘নির্বাচন’ করা হয়। ফলে জনমানসের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের কাছে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে, যারা নিজেদের দলে গণতন্ত্রের চর্চা করছে না, তারা কীভাবে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।

একটি দলের ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই আর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন যে সমার্থক নয়, সে সম্পর্কে বিএনপির মাঠপর্যায়ের অধিকাংশ নেতাকর্মী ওয়াকিবহাল নয়। তাদের কাছে গণতন্ত্র মানে হচ্ছে দলকে ক্ষমতায় আসীন করা। কিন্তু জনগণের অন্তত সচেতন অংশটি যে এত সাধারণভাবে বিষয়টিকে দেখছে না, সেটা বিএনপির অনেকে এখনো বুঝতে অক্ষম।

ঠিক একইভাবে তারা বুঝতে অক্ষম যে, জনমানসে এ ধরনের ধারণাও রয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে দুর্নীতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। এ ধারণার পেছনে মূল কারণ, বিএনপির ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তাদের ব্যাপক দুর্নীতির ইতিহাস।

খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতার সময় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বাংলাদেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ হয়। ফলে দলমত নির্বিশেষে জনমানসের বড় অংশের মাঝে এ ধারণা প্রোথিত হয়ে গেছে যে, বিএনপি আবার ক্ষমতায় এলে ব্যাপক দুর্নীতিতে লিপ্ত হবে, কেননা দীর্ঘদিন তারা ক্ষমতার বাইরে রয়েছে। ক্ষমতায় না থাকবার ফলে যে অবৈধ আর্থিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে, ক্ষমতায় আসলে তা তারা দ্রুত পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করবে।

জনগণের সব মহলের আস্থা অর্জনের জন্য এ ধরনের ধারণা গ্রহণযোগ্যভাবে ভেঙে দিতে বিএনপি নেতৃত্বকে তেমন ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারা সোচ্চার হলেও আস্থা সহকারে তারা বলতে পারেননি, ঠিক কোন পরিবর্তন তারা দলের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আনতে পেরেছেন যে, সামনের দিনগুলোতে দল ক্ষমতায় গেলে, তারা নিজেরা আর আগের মতো দুর্নীতিতে লিপ্ত হবেন না। এ না বলতে পারবার ফলেই সাধারণ জনগণের অনেকেই বিএনপির বক্তব্য বা রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্পর্কে নির্লিপ্ত থাকছেন।

নিজেদের ‘ভবিষ্যৎ দুর্নীতি’ সম্পর্কে যেমন বিএনপি নেতৃত্ব স্পষ্ট বক্তব্য দিতে পারছেন না, তেমনি পারছেন না আওয়ামী লীগের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ,’ বা ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ বিপরীতে উন্নয়নের বিকল্প রোডম্যাপ হাজির করতে। বিএনপির পুরো রাজনীতিই পরিচালিত হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতিবাচকসহ সব রকমের কার্যকলাপ বা ক্রিয়ার সমালোচনা করে। অর্থাৎ, বিএনপির রাজনীতি মূলত ক্রিয়া করবার চেয়ে প্রতিক্রিয়া দেখানোর মাঝে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে— সে অর্থে বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে প্রতিক্রিয়াশীলতার রাজনীতি।

এ প্রতিক্রিয়াশীলতার রাজনীতির মাঝে বিএনপির সামনে যে চ্যালেঞ্জ আসতে যাচ্ছে সেটি হলো আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবার প্রশ্নটি। বিএনপি বর্তমানে সমস্ত স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকছে, যদিও স্থানীয় পর্যায়ে তাদের অনেকে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন।

এখন বিএনপি যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে অনেকটা ২০১৪-এর মডেলে আর যদি অংশ নেয় তাহলে ২০১৮-এর মতো করে নির্বাচন হবে— এরকম একটা ধারণা জনমানসে প্রোথিত রয়েছে। অর্থাৎ,নির্বাচনে অংশগ্রহণ বা বর্জন, কোনোভাবেই বিএনপির পক্ষে ক্ষমতায় ফিরে আসা সম্ভব হচ্ছে না।

এখন প্রশ্ন হলো বিএনপির মতো একটি দল, যে দলটির একটা বড় সংখ্যক নেতাকর্মী রাজনৈতিক মতাদর্শের চেয়েও ব্যক্তিগত সুবিধার হিসেব করে দলটিতে যুক্ত হয়েছে বলে মনে করা হয়, সে দলটির অবস্থা নির্বাচন পরবর্তী সময়ে কেমন হবে?

বিএনপি গঠনের পর অনেকে মনে করেছিলেন, যেহেতু ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাব করে নেতাকর্মীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বিএনপিতে যোগদান করেছেন, ফলে ক্ষমতায় না থাকলে দলটিকে টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে শুধু ক্ষমতাবলয়ের বাইরে গিয়েই নয় বরং চরম প্রতিকূল অবস্থার মাঝেও বিএনপি তার সাংগঠনিক কাঠামো বজায় রেখে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ বা বর্জনের যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি তার বর্তমান অবস্থান অক্ষুণ্ণ রাখতে পারবে। তবে ক্ষমতাবলয়ের বাইরে থাকার এ দীর্ঘ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে, সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঝে বর্তমানে যে হতাশা রয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং দলটি এখনকার চেয়েও বেশি নিস্ক্রিয় হয়ে যাবে।