কলম্বোতে বিক্ষোভকারীদের শিবিরে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান

সেনা ও পুলিশের কমান্ডোরা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কাছে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হয়।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 July 2022, 04:24 AM
Updated : 22 July 2022, 04:24 AM

রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শ্রীলঙ্কার নিরাপত্তা বাহিনী রাজধানী কলম্বোতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের প্রধান শিবিরে অভিযান চালিয়েছে।

শুক্রবার প্রথম প্রহরেই শত শত সেনা ও পুলিশের কমান্ডোরা প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের কাছে বিক্ষোভকারীদের ওপর চড়াও হন এবং শিবিরটির একাংশ খালি করে ফেলেন বলে বিক্ষোভকারীদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

অভিযানে বিবিসির এক সাংবাদিক সেনাসদস্যদের হাতে পিটুনি খেয়েছে; এক সেনা তার ফোন ছিনিয়ে নিয়ে সেখানে থাকা ভিডিও মুছে দিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

প্রেসিডেন্ট সচিবালয় পুনরুদ্ধারে রাতে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ বাহিনী এই অভিযানে নামে; জায়গাটি দখলে রাখার কোনো এখতিয়ার নেই বিক্ষোভকারীদের।
পুলিশের মুখপাত্র নালিন থালদুয়া

শুক্রবার দিনের আলো ফোটার পর কয়েক ডজন সেনা সদস্য রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়কের দুই পাশে থাকা বিক্ষোভকারীদের তাঁবু খুলতে শুরু করেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে এই সড়কটিই গেছে।

গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা এপ্রিলে এই ‘গোটা গো গামা’ শিবিরটি স্থাপন করেন।

“প্রেসিডেন্ট সচিবালয় পুনরুদ্ধারে রাতে সামরিক বাহিনী, পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ বাহিনী এই অভিযানে নামে; জায়গাটি দখলে রাখার কোনো এখতিয়ার নেই বিক্ষোভকারীদের।

“আহত দুই ব্যক্তিসহ ৯ জনকে আটক করা হয়েছে,” রয়টার্সকে বলেছেন পুলিশের মুখপাত্র নালিন থালদুয়া।

নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে আহতের সংখ্যা অর্ধশত বলে দাবি করেছেন সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা; এদের মধ্যে একাধিক সাংবাদিকও আছে।

আহতদের মধ্যে দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্রগুলো।

“তারা আমাদের নির্দয়ভাবে মেরেছে। বিক্রমাসিংহে জানেন না, গণতন্ত্র কী,” বলেছেন ৩৪ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী বুদ্ধিকা আবেইরত্নে।

বিক্রমাসিংহে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সোমবার থেকেই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা চলছে।

বিক্ষোভকারীরা জানান, গভীর রাতে বিক্ষোভকারীদের শিবিরটি চারপাশ থেকে ঘিরে ফেলার পর সেনারা প্রেসিডেন্ট সচিবালয়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন এবং পথে থাকা তাঁবু খুলে ফেলার পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের বেধড়ক পেটান।

গণমাধ্যমে আসা ফুটেজে দাঙ্গা মোকাবেলার পোশাক পরিহিত সশস্ত্র সেনাদেরকে বিক্ষোভকারীদের তাঁবু তুলে ফেলতে দেখা গেছে।

বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যে বিক্ষোভকারীদের ওপর দমনপীড়ন নেমে আসবে সেই ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। তিনি সরকারি ভবন ও জায়গা দখল করে রাখা বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করেছিলেন।

ছয়বার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েও কোনোবারই মেয়াদ শেষ করতে না পারা বিক্রমাসিংহে বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে আইনপ্রণেতাদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি রাজাপাকসেদের ঘনিষ্ঠ দিনেশ গুনাবর্ধনেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিতে চলেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।