কাশ্মীরে ২৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত করবে ভারত, স্থানীয়দের উদ্বেগ

কাশ্মীরের আধা-স্বায়ত্তশাসন তুলে দিয়ে সেখানে কাশ্মীরি নয় এমন মানুষজনকে ভোটার এবং জমি কেনার সুযোগ দিতে সংবিধান বদলেছে ভারত।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 August 2022, 07:22 AM
Updated : 18 August 2022, 07:22 AM

ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরে নতুন করে প্রায় ২৫ লাখের মতো ভোটার নিবন্ধিত হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন অঞ্চলটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর আশঙ্কা, আসন্ন নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলার চেষ্টাতেই নতুন করে এ বিপুল সংখ্যক ভোটারকে তালিকায় যুক্ত করতে চাচ্ছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি।

ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের পুরোটা দাবি করলেও পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ এর অংশবিশেষ শাসন করে আসছে। ভূখণ্ডটির কর্তৃত্ব নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দুটি যুদ্ধও হয়েছে।

২০১৯ সালে ভারত তাদের নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর অংশের আধা-স্বায়ত্তশাসন তুলে দিয়ে সেখানে কাশ্মীরি নয় এমন মানুষজনকে ভোটার এবং জমি কেনার সুযোগ দিতে সংবিধান বদলায়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা হৃদেশ কুমার নভেম্বরে হতে যাওয়া স্থানীয় নির্বাচনের আগে এলাকাটিতে ২০ লাখের বেশি নতুন ভোটার নিবন্ধিত হবে বলে সাংবাদিকদেরকে তার প্রত্যাশার কথা জানান।

“চূড়ান্ত তালিকায় ২০ থেকে ২৫ লাখ নতুন ভোটার যুক্ত হতে পারে বলে ধারণা করছি আমরা,” এর মধ্যে অঞ্চলটিতে বসবাসরত অ-কাশ্মীরিরাও আছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

অঞ্চলটির বর্তমান ভোটার প্রায় ৭৬ লাখ। কিন্তু নতুন নিবন্ধিতরা এ সংখ্যা এক তৃতীয়াংশের বেশি বাড়িয়ে দিতে পারে, যা নিয়ে উদ্বিগ্ন কাশ্মীরিরা।

স্থানীয়দের ভয়, রাজ্যের মর্যাদা তুলে নতুন নিয়মকানুন আরোপের মধ্য দিয়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের কয়েক দশকের স্বাধীনতা আন্দোলনকে দমাতে অঞ্চলটির জনমিতি বদলে দিতে চায়।

অন্যদিকে বিজেপি বলছে, তাদের নীতি ‘সাধারণ কাশ্মীরিদের সুবিধার কথা’ বিবেচনা করেই নেওয়া হয়েছে।

নতুন করে বিপুল সংখ্যক ভোটার নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়ার পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা এসেছে কাশ্মীরের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে।

সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও জম্মু-কাশ্মীর পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টির (পিডিপি) প্রেসিডেন্ট মেহবুবা মুফতি বলেছেন, এই পদক্ষেপের লক্ষ্যই হচ্ছে ভোটের ফলে প্রভাব ফেলা।

“স্থানীয় নয় এমন ব্যক্তিদের ভোটদানের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ভোটের ফলে প্রভাব ফেলতে। আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে, স্থানীয়দের ক্ষমতাহীন করে লৌহমুষ্টিতে জম্মু-কাশ্মীরকে শাসন করে যাওয়া,” টুইটারে এমনটাই বলেছেন মুফতি।

আরেক সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

“জম্মু-কাশ্মীরের আসল ভোটারদের সমর্থন পাওয়া নিয়ে বিজেপি কী এতই দুশ্চিন্তায় যে আসন জিততে তাদের অস্থায়ী ভোটার আমদানি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে,” টুইটে লিখেছেন জম্মু অ্যান্ড কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের এ নেতা।