শ্রীলঙ্কা হামলার দায় স্বীকার করে আইএসের বার্তা

শ্রীলঙ্কায় কয়েকটি চার্চ ও হোটেলে একযোগে আত্মঘাতী বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যের জঙ্গি দল ইসলামিক স্টেট-আইএস।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2019, 11:26 AM
Updated : 23 April 2019, 06:35 PM

গত রোববার ইস্টার সানডের প্রার্থনার মধ্যে ওই হামলার ৩২১ জন নিহত হন, আহত হয় পাঁচ শতাধিক মানুষ।

আইএসের বার্তা সংস্থা আমাক-এ মঙ্গলবার হামলার দায় স্বীকার করে আরবিতে লেখা একটি বার্তা আসে।

তবে সেখানে এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রাভন বিজয়বর্ধনে এদিন পার্লামেন্টে এক বিবৃতিতে বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, নিউ জিল্যান্ডের মসজিদে চালানো হামলার প্রতিশোধ হিসেবে এটা (শ্রীলঙ্কার হামলা) করা হয়েছে।”

তবে নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে নামাজের সময় গুলি চালিয়ে ৫০ জনকে হত্যার সঙ্গে শ্রীলঙ্কার ঘটনার যোগসূত্র কীভাবে খুঁজে পাওয়া গেল - তা বিশদ করেননি বিজয়বর্ধনে। 

তার ধারণা, শ্রীলঙ্কার দুটো উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত এবং জমিয়াতুল মিল্লাতু ইব্রাহিম-জেএমআই ইস্টার সানডের সকালে গির্জা আর হোটেলে হামলার সঙ্গে জড়িত।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পার্লামেন্টে বলেছেন, হামলার সঙ্গে বিদেশি যোগসাজশের বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। 

একই ধরনের বিবৃতি আগের দিন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার দপ্তর থেকেও এসেছিল। তিনি বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কার যে সংগঠনই ওই হামলা চালিয়ে থাকুক,তারা বাইরে থেকে সহযোগিতা পেয়েছে।

এ বিষয়ে তদন্তে আন্তর্জাতিক সহায়তাও চাওয়া হয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকারের তরফ থেকে। পুলিশের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারপোলের একটি প্রতিনিধি দল ইতোমধ্যে সেখানে কাজ শুরু করেছে।

গত দুই দিনে সব মিলিয়ে ৪০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একজন সিরীয় নাগরিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সেনা সূত্রের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।

গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় এ হামলার পর ভারত লাগোয়া দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় সোমবার রাত থেকে জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা আগেই বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনাগুলোর সঙ্গে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) কাজের ধরনের মিল পাচ্ছেন তারা।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সোমবার শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহকে ফোন করে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।  

তদন্তে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই এবং যুক্তরাজ্যের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে কলম্বো পৌঁছেছেন বলে খবর দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

শ্রীলঙ্কার একজন মন্ত্রী বলেছেন, উগ্রপন্থি ইসলামী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত গির্জা ও কলম্বোর ভারতীয় হাই কমিশনে হামলার পরিকল্পনা করছে বলে সপ্তাহ দুই আগেই সতর্ক করেছিল একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা।

কিন্তু সেই সতর্কবার্তা প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের মন্ত্রীদের কাছে পৌঁছেনি, কারণ দেশটির বিভিন্ন বাহিনীর সিকিউরিটি ব্রিফিং প্রেসিডেন্ট সিরিসেনার হাতে যায়, প্রধানমন্ত্রীকে তা দেখানো হয় না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করে বলেছে, শ্রীলঙ্কায় আরও সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি রয়েছে।

একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে শ্রীলঙ্কায় বিপুল বিনিয়োগ করা দেশ চীন। এক ভ্রমণ সতর্কতায় চীন সরকার তার নাগরিকদের বলেছে, আপাতত শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে যাওয়া নিরাপদ নাও হতে পারে।      

আরও খবর