দেহের চর্বি পোড়াতে বিভিন্ন খাবারের সমন্বয় ঘটালে ওজন কমাতে সাহায্য করে।
Published : 30 Jul 2023, 12:16 PM
ওজন কমানো ও সুস্বাস্থ্য রক্ষায় ক্রাশ ডায়েট কোনো সমাধান নয়।
বরং পুষ্টিকর ও ‘তাপ উৎপাদক’ খাবার খাওয়া এবং সঠিক জীবনযাত্রা চর্বি কাটাতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মুম্বাইয়ের মুলুন্দে অবস্থিত ফোর্টিস হসপিটালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টি প্রশিক্ষক মৈত্রি গালা এই বিষয়ে বলেনম, “টিইএফ’ বা শরীরে খাবারের তাপীয় প্রভাব বলতে বোঝায়। আমরা যে খাবার খাই তা বিপাকের জন্য যে শক্তি ব্যয় করে এবং সঠিক খাদ্য সংমিশ্রণে চর্বি কাটাতে সহায়তা করে।”
ওটমিল ও বাদাম
দিনের শুরুতে এক বাটি ওটমিল ও এক মুঠ বাদাম যেমন- কাঠবাদাম বা আখরোট যোগ করে খাওয়া যায়। বাড়তি ওজন কমাতে এগুলো চমৎকার কাজ করে।
ব্যাখ্যা করে গালা বলেন, “ওটস আঁশ সমৃদ্ধ যা ‘ঘ্রেলিন’ নামক ক্ষুধা নিয়ন্ত্রক হরমোন নিঃসরণ বাড়ায় ফলে পেট ভরা অনুভূত হয়।”
তাছাড়া, বাদামে আছে মনোআনস্যাচুরেইটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড চর্বি যা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখার পাশপাশি প্রয়োজনীয় পুষ্টি যোগায় ও খাবারের স্বাদ বাড়াতে সহায়তা করে।
দই ও বেরি
দই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যা ওজন কমাতে সহায়ত করে। এর উচ্চ মাত্রার প্রোটিন দেহে তাপীয় প্রভাব বাড়ায়; ফলে হজমের সময় ক্যালরি খরচ হয়।
“এছাড়াও দই ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ যা চর্বি থেকে উৎপাদিত মানসিক চাপ হরমোন কর্টিসোল উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দ্রুত ওজন কমে,” বলেন এই বিশেষজ্ঞ।
দইয়ের সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ বেরি যেমন- ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি বা রাসবেরি যোগ করা অক্সিডেটিভ চাপ কমিয়ে সার্বিক সুস্বাস্থ্যে ভূমিকা রাখে।
পিনাট বাটার ও আপেল
পিনাট বাটার ও আপেল খাবারে স্বাদ বাড়ায় এবং চর্বি কমাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবারহ করে।
পুষ্টিবিদ গালা ব্যাখা করেন, “জেনিস্টিন’ ও ‘রেসভারেট্রল’ পুষ্টি উপদানের উৎস হল বাদাম, যা চর্বি জমাট বাঁধা এড়াতে সহায়ক।”
এছাড়াও, পিনাট বাটারের মনোআনস্যাচুরেইটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিডস ক্ষুধাভাব দূরে রাখে। ফলে বাড়তি ওজনের ঝুঁকি কমে।
আপেলে ক্যালরির মাত্রা কম এবং আঁশ বেশি। পিনাট বাটারের সাথে আপেলের সংমিশ্রণ স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমাতে সহায়তা করে।
ডিম ও ক্যাপ্সিকাম
ডিম প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎস। এতে রয়েছে ‘কোলিন’ ও উচ্চ মানের প্রোটিন যা বিপাক বাড়াতে সহায়তা করে।
গালা বলেন, “ক্যাপ্সিকাম ভিটামিন সি ও ক্যাপসাইসিন সমৃদ্ধ। ভিটামিন সি পেটের মেদ সৃষ্টিকারী কর্টিসোলের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ক্যাপসাইসিন ক্ষুধা কমায় ও পেট ভরা রাখে।”
ডার্ক চকলেট ও বাদাম
পরিমিত পরিমাণে ডার্ক চকেলেট (কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কোকোয়া সমৃদ্ধ) ও এক মুঠ বাদাম খাওয়া ওজন কমাতে সহায়তা করে।
ডার্ক চকলেটে আছে পলিফেনল, যা দেহে চর্বি গঠন প্রতিরোধ করে এবং চর্বির কোষ দূর করতে সহায়তা করে। এর থার্মোজেনিক বা তাপীয় শক্তি ক্যালরি পোড়াতে ভূমিকা রাখে।
বাদামে আছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস ও আঁশ। এগুলো দ্রুত বিপাক বাড়াতে ও ওজন কমাতে সহায়তা করে।
এসব খাদ্য সংমিশ্রণ সুষম খাবারের পাশাপাশি গ্রহণ ও শারীরিক পরিশ্রম করলে একই সঙ্গে সুস্থ থাকা যায় এবং ওজন কমানো সহজ হয়।
আরও পড়ুন