এই সময়ে সুস্থ থাকতে

খাবারের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান দেহঘড়িকে সচল রাখতে সহায়তা করে।

তৃপ্তি গমেজবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 March 2023, 01:19 PM
Updated : 31 March 2023, 01:19 PM

সাহরী ও ইফতারে যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার খাওয়া গেলে সুস্থ থাকা যায়।

রোজা রেখে সুস্থ থাকতে নিয়ম মেনে ইফতারি ও সাহরী করা প্রয়োজন। অনেকে সাহরী না করে রোজা রাখেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

“এই সময়ে অনেকেই পেট ফাঁপা, গ্যাসের সমস্যা অথবা হজম জনিত সমস্যায় ভোগেন। এর পেছনের প্রধান কারণ হল অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস। রমজান মাসে সুস্থ থাকতে সঠিক উপায়ে সাহরী ও ইফতার করা জরুরি”, বলেন সাভারের ‘বিজিএমইএ’ হাসপাতালের ‘ফ্যামিলি মেডিসিন’ বিশেষজ্ঞ ডা. লিন্ডা এস সমদ্দার।

বাংলাদেশ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারাহ মাসুদা বলেন, “দেহে পানির চাহিদা পূরণ করতে ইফতারে তরল-জাতীয় খাবার ও পানি পান করতে হবে। বাইরের জুস বা কৃত্রিম পানীয় পান না করে তাজা রসালো ফল ও ফলের রস খাওয়া ভালো।”

দুপুরের পর থেকে মানুষের হজম ক্রিয়া দুর্বল হতে থাকে। তাই গুরুপাক-জাতীয় ও বেশি ভারী খাবার ইফতারে খাওয়া ঠিক না। ইফতারে সহজপাচ্য ও কম মসলাযুক্ত খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন, ফারাহ মাসুদা।

খেজুর দেহের শর্করার পরিমাণ বাড়ায় এবং এর ‘এঞ্জাইম’ হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও অন্যান্য তাজা ফলমূল খাওয়া দেহে আঁশ, খনিজ ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে।

ডা. লিন্ডা বলেন, “সাহরীতে সুষম খাবার খাওয়া, ধীরে ধীরে পানি পান করা উচিত। যথা সম্ভব সবজি, প্রোটিন-জাতীয় খাবার- মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও দুধ খাওয়া উপকারী।”

দেহের আর্দ্রতা নিশ্চিত করার বিষয়ে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

“পানি পান করতে হবে ধীরে। একবারে ও বেশি পরিমাণে পানি পান করা কিডনি বা বৃক্কের ওপরে চাপ বাড়ায়। তাই সতর্ক থাকা উচিত”, বলেন এই চিকিৎসক।

স্বাস্থ্যকর ইফতার প্রসঙ্গে ফারাহ মাসুদা বলেন, “ইফতারে প্রথমে পানি পান করে যে কোনো মিষ্টি ফল ও শরবত গ্রহণ করা ভালো। তারপর পাঁচ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করে মূল খাবার খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ মস্তিষ্কে খাবারের সংবেদন পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। তাই ইফতার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাড়াহুড়া করে খাবার খেলে বেশি খাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় যা মোটেও ঠিক না। এতে ওজন বেড়ে যাওয়া ও শরীরে মেদ জমার সম্ভাবনা থাকে।”

“ইফতারে খাবার খেতে হবে ধীরে, কিছুটা সময় নিয়ে ও ভালো মতো চিবিয়ে”, বলেন এই অধ্যাপক। 

ইফতারে ভারী বা তেল-মসলা যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে শরীরে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। ইফতারে এসব খাবার হজমে সমস্যা করে গ্যাস্ট্রিকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই পেট গরম করে এমন খাবার খাওয়া উচিত নয়।

পেটের সমস্যা এড়াতে পেট ঠাণ্ডা রাখে এমন খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. লিন্ডা সমদ্দার।

তার মতে, “ডাবের পানি, তোকমা ও ইসবগুলের শরবত এবং তাজা ফলের রস বেশ উপকারী।”

ইফতারের পর অতিরিক্ত চা বা কফি এবং কোমল পানীয় পান এড়িয়ে চলতে হবে। কারণ অতিরিক্ত চা ও কফি শরীরে পানি শূন্যতার সৃষ্টি করে।

দুজনেই পরামর্শ দেন, রোজার দিনে সুস্থ থাকতে আর্দ্র থাকার কোনো বিকল্প নেই। তাই ইফতারের পর থেকে সাহরী পর্যন্ত যতটা সময় পাওয়া যায় অল্প অল্প করে পানি পান ও ফল খাওয়ার অভ্যাস করা ভালো। এতে শরীর সুস্থ থাকে।

ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যা রয়েছে এবং ওষুধ খাচ্ছেন এমন রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ওষুধ খাওয়ার সময় নির্ধারণ করার পরামর্শ দেন ডা. লিন্ডা।

আরও পড়ুন

Also Read: ইফতারে যেভাবে খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর

Also Read: খালি পেটে কী খাবেন আর কী এড়াবেন

Also Read: অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকার পর যা খাওয়া যাবে না