যেভাবে খেলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে

দ্রুত খেলে ওজন বাড়ে। অন্যদিকে বেশি খাওয়া কমাতে পরিমাণের সঙ্গে ক্যালরিও হিসেব করাটা জরুরি।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Feb 2023, 01:33 PM
Updated : 15 Feb 2023, 01:33 PM

খাদ্যাভ্যাস ওজন কমাতে সহায়ক। তবে খাবারের মান ও খাওয়ার ধরন থেকেও ওজন বাড়তে পারে।

আর এই তথ্যই উঠে এসেছে ‍যুক্তরাষ্টের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানসাস’, ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ডায়াবেটিস অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ অ্যান্ড কিডনি ডিজিজ’য়ের মিলিত গবেষণায়।

‘ন্যাচার ফুড’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণার জন্য ১৮ থেকে ৫০ বয়সের ৩৫জনকে বেছে নেওয়া হয়। ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের খাদ্যাভ্যাসের মাঝে রাখা হয়।

কেউ কেউ বেছে নেয় অল্প প্রক্রিয়াজাত খাবার। যেগুলো মধ্যে ছিল বিভিন্ন মাত্রায় কার্বোহাইড্রেইট ও চর্বি।

আবার অন্যরা বেছে নেয় অল্প ও অতি-প্রক্রিয়াজাত খাবার। এর মধ্যে রয়েছে মধ্যম মানের কার্ব ও চর্বি।

দুই সপ্তাহ ধরে একইভাবে চলার পর, এই দুই দলের মধ্যে খাদ্যাভ্যাস উল্টিয়ে দেওয়া হয়। পর্যবেক্ষণ চলাকালে তাদেরকে যত ইচ্ছা তত বেশি খাওয়াতে উৎসাহ দেওয়া হয়।

একই সাথে তারা কত দ্রুত খেয়েছে, কতটা প্রোটিন, কী পরিমাণে চর্বি, লবণ, চিনি বা কার্ব গ্রহণ করেছে সেই তথ্যও সংগ্রহ করেন গবেষকরা।

ফলাফলে দেখা গেছে, খাবারের পদের পরিবর্তন ছাড়াও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা দ্রুত খেয়েছে, ক্যালরিযুক্ত সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করেছে বেশি- তাদের ওজন বেড়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়া নিবাসী পুষ্টিবিদ জনা বুর্দেয়োস এই গবেষণার ফলাফলকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, “হাইপার-প্যালাটেবল ফুডস (এইচপিএফ)’ বা অতি-মুখরোচক খাবার কার্বস, চর্বি, লবণ বা চিনিতে ভরপুর থাকে। এই ধরনের খাবার অন্যান্য খাবারের সমপরিমাণ খেলে ক্যালরি বেশি গ্রহণ করা হয়।”

যেমন ধরা যাক- ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরি আইসক্রিম থেকে আসবে ২০০ ক্যালরি। সেখানে ১০০ গ্রাম স্ট্রবেরি থেকে মিলবে ৩২ ক্যালরি।

বুর্দেয়োস বলেন, “বরং স্ট্রবেরি থেকে আরও পাওয়া যাবে আঁশ, যা দেবে পেটভরা বা মনভরা অনুভূতি। যা কিনা কম সময়ের মধ্যে ক্ষুধার্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাবে।”

এছাড়াও ক্যালরি একই কিন্তু পরিমাণে কম বেশি হতে পারে কোনো কোনো খাবার।

যেমন- প্রায় ১শ’ ক্যালরি পাওয়া যাবে, কোনো উপাদান মিশ্রণ করা হয়নি এরকম ৩ কাপ পপকর্ন থেকে। তবে মাত্র ১ কাপ আলুর চিপস থেকে মিলবে ১শ’র একটু বেশি ক্যালরি।

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, পরিমাণে বেশি হলেও ক্যালরি সমান থাকছে পপকর্নে। অতিরিক্ত উপকার হিসেবে মিলছে আঁশ।

তাই যেসব খাবারে আঁশ ও জলীয় পরিমাণ কম সেসব খাবার খাওয়া হবে বেশি। কারণ অল্প খেয়েও তখন পেট ভরে না। যে কারণে ক্যালরি স্বাভাবিকভাবেই বেশি গ্রহণ করা হতে থাকে। ফলাফল ওজন বৃদ্ধি।

বুর্দেয়োস বলেন, “প্যাকেটের গায়ে পুষ্টির পরিমাণ বোঝার জন্য ক্যালরির পাশাপাশি পরিমাণের হিসাবটাও খেয়াল করতে হবে। পাশাপাশি নজর দিতে হবে আঁশ ও প্রোটিনের দিকে, যা দেবে পরিতৃপ্তি।”

“অল্প ক্যালরির খাবার সাধারণভাবেই উচ্চ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন, পানি ও আঁশ নির্ভর হয়ে থাকে। সার্বিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখা জরুরি”, পরামর্শ দেন বুর্দেয়োস।

খাবার খেয়ে অল্পতে পরিতৃপ্ত হওয়ার ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতির কথা জানান এই পুষ্টিবিদ।

খাবারে প্রথম কামড় দেওয়ার পর থেকে খেতে খেতে মস্তিষ্কে তৃপ্তির সংকেত পৌঁছাতে সময় নেয় ২০ মিনিট। তাই দ্রুত খেলে বেশি খাওয়া হবেই। আর বেশি খাওয়া মানে বেশি ক্যালরি গ্রহণ। তাই খেতে হবে ধীরে।

তাই অতিরিক্ত খিদা লাগিয়ে খাওয়া যাবে না। আর মানসিক উদ্বেগ, উত্তেজনায় অন্যমনস্ক হয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

আরও পড়ুন

Also Read: অতিরিক্ত খাওয়ার পরে অস্বস্তি কমাতে

Also Read: বাইরে খেয়েও ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার উপায়

Also Read: ক্যালরির হিসাব রাখতে পারলে ওজন কমানো যায় বেশি

Also Read: দৈনিক যতটুকু ক্যালরি খরচ হওয়া উচিত

Also Read: ক্যালরির হিসাব রাখতে পারলে ওজন কমানো যায় বেশি