দীর্ঘসময় উপবাস করার মাধ্যমে চর্বির ঝরানোর প্রক্রিয়াকে বলে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’।
Published : 24 Sep 2024, 05:20 PM
খাবার গ্রহণে কঠিন মাত্রায় সময় মেনে চলার মাধ্যমে ওজন কমাতে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ বেশ জনপ্রিয়।
তবে এই পদ্ধতি কতটা কার্যকর সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে।
এই বিষয়ে ‘হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ের মহামারী ও পুষ্টি বিষয়ক অধ্যাপক ডা. ফ্র্যাংক হু বলেন, “সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, ওজন কমানোর জন্য ক্যালরি গ্রহণে পরিমাণ কমানোর মতোই ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’ সহায়ক উপকারী ভূমিকা পালন করে।”
হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য ওজন কমানোর পদ্ধতির থেকে এই পন্থার প্রধান সুবিধা হল এটা সহজ।”
সময় বিবেচনা করে খাওয়া
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাসে যেখানে বলা হয় কী খাবেন আর খেতে পারবেন না, সেখানে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’য়ে বলা হয়, কখন খাবেন আর কখন খাবেন না।
মানে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় খাওয়া যাবে না।
এক্ষেত্রে নানান নিয়মের মাঝে প্রচলিত ও জনপ্রিয় হল ১৬/৮ পদ্ধতি- জানান ডা. হু।
যেমন- সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খাওয়া যাবে। এরপর ছয়টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত উপবাস থাকতে হবে। এভাবে চালাতে হবে প্রতিদিন।
এই না খেয়ে থাকার সময় পানি, চিনি ছাড়া চা ও কফি পান করা যাবে। আর খাওয়ার সময়ে অনুসরণ করতে হবে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ‘ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’য়ের ক্ষেত্রে কম ক্যালরির ডায়েট অনুসরণ করা বেশি উপকারী।
ডা. হু বলেন, “১৬/৮ পদ্ধতি অনুসরণ করা অনেক সহজ। কারণ না খেয়ে থাকার সময়ের বেশিরভাগ অংশ ঘুমিয়ে কাটানো হয়।”
কিটোসিস পর্যায়
“দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকলে শরীর ‘কিটোসিস’ পর্যায়ে চলে যায়। মানে এই সময়ে দেহ শক্তির উৎস হিসেবে চর্বি পোড়াতে শুরু করে”- বলেন ডা. হু।
দেহের গ্লুকোজের পরিমাণ শেষ হয়ে গেলেই বিপাক প্রক্রিয়া ‘কিটোসিস’ পর্যায় শুরু হয়। জমাকৃত চর্বি পুড়িয়ে শক্তি যোগাড় করে দেহ।
ডা. হু বলেন, “১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার মাধ্যমে সহজেই দেহকে কিটোসিস পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়।”
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং’য়ের আরও অনেক উপকারী দিক রয়েছে। যেমন- স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, উচ্চ কোলেস্টেরল এই ধরনের হৃদসংক্রান্ত রোগ হওয়ার বিভিন্ন প্রভাবকের মাত্রা কমায়।
পাশাপাশি সংক্রমণ থেকে রক্ষা ও হজম প্রক্রিয়া উন্নত করার মাধ্যমে অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ‘মাইক্রোবায়োম’ তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
এই উপবাস পদ্ধতি অনুসরণ করে শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও দাবি করেন অনেকে।
আরও পড়ুন
কিটো ডায়েটের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া