রেফ্রিজারেইটর কিংবা ফ্রিজ যাই বলা হোক, তাপমাত্রা ঠিক না থাকলে খাবারও ঠিক থাকবে না।
Published : 26 Jan 2022, 01:16 PM
ঘরের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা ফ্রিজটা কত ঝামেলা থেকে মুক্তি দেয়, তখনই বোঝা যায় যখন সেটা নষ্ট হয়।
খাবারের তাপমাত্রা ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলেই সেই খাবারে উপকারী ও ক্ষতিকর দুই ধরনের ব্যাক্টেরিয়ার বংশবিস্তার শুরু হয় ব্যাপকহারে।
খাবারের মান ঠিক রেখে খাদ্যে-বিষক্রিয় রোধ করতে রেফ্রিজারেইটরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হবে।
ফ্রিজে রাখা খাবারের মান ভালো রাখতে হলে যন্ত্রটি নিয়মিত পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। আর যে বিষয়টা খেয়াল রাখা জরুরি, তা হল ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা।
ফ্রিজের তাপমাত্রা কত হওয়া উচিত?
‘দ্য ইউ.এস. ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)’য়ের মতে, “ফ্রিজের ভেতরের অংশের তাপমাত্রা অবশ্যই ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে হতে হবে।”
আদর্শ তাপমাত্রা হবে ৩৫ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ১.৬ ডিগ্রি থেকে ৩.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রায় খাবার ঠাণ্ডা থাকবে কিন্তু বরফ জমবে না।
আর ডিপ ফ্রিজের আদর্শ তাপমাত্রা হবে ০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ‘মাইনাস ১৭.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে।
রেফ্রিজারেইটরের তাপমাত্রা মাপার উপায়
বাজারে বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রা পরিমাপক ‘থার্মোমিটার’ পাওয়া যায়। এদের মধ্য থেকে বেছে নিতে হবে ‘এপ্লায়ান্স থার্মোমিটার’, যা ফ্রিজের ভেতর রাখলে তাপমাত্রা জানা যাবে।
যদি আদর্শ তাপমাত্রায় না থাকে তবে ফ্রিজের ‘টেম্পারেচার কন্ট্রোল’ থেকে বাড়িয়ে কিংবা কমিয়ে নিতে হবে।
ফ্রিজে থাকা ‘টেম্পারেচার কন্ট্রোল’য়ে লেখা তাপমাত্রা সব সময় নিঁখুত হয় না।
রিয়েলসিম্পলডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নির্দিষ্ট করা থাকলেও তা কম কিংবা বেশি হতে পারে।
আবার কিছু ফ্রিজে তাপমাত্রা দেখানোর ব্যবস্থাই থাকে না। বেশিরভাগ ফ্রিজের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের সুইচে সেলসিয়াস কিংবা ফারেনহাইট লেখা থাকে না।
এজন্য নিশ্চিতভাবে জানতে ‘এপ্লায়ান্স থার্মোমিটার’ ব্যবহার করা উচিত।
রেফ্রিজারেইটর ঠাণ্ডা রাখতে
তাপমাত্রা সঠিকভাবে সমন্বয় করার পরও ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা কম বেশি হওয়া সম্ভব। এজন্য ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেইটর ব্যবহারের কিছু নিয়ম মানতে হবে।
খাবার আগে ঠাণ্ডা করা: ফ্রিজের কোনো খাবার রাখার আগে তা কক্ষ তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে হবে। গরম খাবার ফ্রিজে রাখলে স্বভাবতই তা ঠাণ্ডা করতে সময় বেশি লাগবে। ততক্ষণে খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
আবার গরম খাবারের কারণে ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যেতে পারে। ফলে অন্যান্য খাবার নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
দরজা পরীক্ষা: ফ্রিজের ঠাণ্ডা কম হলে দরজার ‘রাবার সিল’ বা ‘গ্যাসকেটস’ পরীক্ষা করতে হবে। এতে কোনো ‘লিক’ থাকলে ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে না। ফলে খাবার তো নষ্ট হবেই, বিদ্যুত বিলও বাড়বে।
বার বার দরজা না খোলা: ঘন ঘন ফ্রিজের দরজা খোলার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। দরজা খুললে ভেতরের ঠাণ্ডা বাতাস বেরিয়ে যায়, বাইরের গরম বাতাস প্রবেশ করে। দরজা লাগানো পর আবার আগের তাপমাত্রা নিয়ে আসতে হয়।
বারবার ফ্রিজ খুললে ভেতরটা ঠাণ্ডা হওয়ার সুযোগ পায় না। আবার লম্বা সময় ফ্রিজের দরজা খুলে রাখলেও একই সমস্যা।
ভর্তি রাখা: ফ্রিজ যতটা সম্ভব পরিপূর্ণ রাখার চেষ্টা করুন। তবে বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
ফ্রিজ ভরা থাকলে খাবার লম্বা সময় ঠাণ্ডা থাকবে। তবে ফ্রিজের যে অংশগুলো দিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস বের হয় সেগুলো আটকে দেওয়া যাবে না। গুছিয়ে খাবার রাখতে হবে।
ছবির মডেল: বৈশাখী। আলোকচিত্র: অপূর্ব খন্দকার।
আরও পড়ুন