দম্পতি হিসেবে একসঙ্গে অবসর জীবনে যেতে চাইলে কিছু পরিকল্পনার প্রয়োজন পড়েই।
Published : 12 Oct 2021, 10:17 PM
এই সময়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটাতে চাইলে পরিবারে স্বামী স্ত্রী দুজনকেই কমবেশি উপার্জনক্ষম হতে হয়। আর উপার্জনের বাড়লে জীবনযাত্রার মান বাড়ে। সেই মান বজায় রাখতে বাড়ে খরচও।
একসময় জীবন থেকে ভালোবাসা কমে গিয়ে আর্থিক চিন্তাই হয়ে ওঠে মুখ্য। আর এমন যখন পরিস্থিতি তখন সেচ্ছায় সময়ের আগে অবসর নেওয়ার কথাটা অবাস্তব মনে হয়।
তবে এই অবাস্তবটাও দুজন মিলে চেষ্টা করলে বাস্তব করা সম্ভব।
‘ফায়ার মুভমেন্ট (ফাইন্যানশিয়াল ইনডিপেনডেন্স, রিটায়ার আর্লি)’র উদ্দেশ্যটা ঠিক তেমনই। এই পদ্ধতির মুল ভিত্তি হল কষ্ট করে উপার্জনের ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ সঞ্চয় করা এবং বিনিয়োগ করা।
সম্ভব হলে একটি দম্পতি সময়ের আগেই চাকরি-জীবন থেকে অবসর নিয়ে আর্থিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হতে পারেন ১০ বছরেই।
রিয়েল সিম্পল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হল এই পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত।
ঋণ শোধ করে জরুরি মুহুর্তের জন্য বরাদ্দ তৈরি
সঞ্চয়ের আগে অবশ্যই আপনাকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। কারণ বড় কোনো ঋণের বোঝা মাথায় রেখে সঞ্চয় আর বিনিয়োগের চিন্তা করাটা মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর হাতে নিতে হবে জরুরি মুহুর্তের জন্য অর্থের বরাদ্দ তৈরি করার পরিকল্পনা।
পাঁচ থেকে ছয় মাসের থাকা খাওয়ার খরচ সামলানো যায় এমন অর্থ আলাদা করে এই বরাদ্দ তৈরি করতে হবে। এই দুই বিষয়ে ব্যবস্থা হয়ে এবার শুরু হবে সঞ্চয় ও বিনিয়োগের পালা।
আগে পরিকল্পনা
পরিকল্পনার শুরুতেই নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি ও আপনার সঙ্গী দুজনেরই লক্ষ্য একই। সেজন্য দুজনের মধ্যে ভবিষ্যত লক্ষ্য, জীবনের চাহিদা, স্বপ্ন ইত্যাদি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়া জরুরি।
আগামী ১০ বছরের মধ্যে অবসর নেওয়া কি দুজনের জন্য জরুরি? দুজনেই কী আসলেই তাই চান?
একেবারেই অবসর নিতে চান, নাকি ‘পার্ট-টাইম’ কাজ করতে চান? সম্পত্তির দিকে থেকে পরিকল্পনা কী? অবসরের পরে কী করে সময় কাটাতে চান?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে হবে। বুঝতে হবে দুজনের স্বপ্ন কতটুকু একই রকম। এরপর আসবে স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা
সঞ্চয় ও বিনিয়োগ পরিকল্পনায় আগ্রাসী মনোভাব
প্রথমে দুজনের মোট মিলিত উপার্জন আর খরচের হিসাব করতে হবে। বাজেট করতে হবে, খরচ কমাতে হবে, বিলাসিতা বাদ দিতে হবে। যতটুকু খরচ না করলেই নয়, ততটুকুতে নেমে আসতে হবে।
খরচ কমানো পর এবার উপার্জন বাড়াতে হবে। খুঁজতে হবে কীভাবে বাড়তি উপার্জন করা যায়।
পাশাপাশি নিরাপদ বিনিয়োগের ব্যবস্থাও যাচাই বাছাই করতে হবে। সঞ্চয়ের এই বিষয়কে কষ্ট মনে না করে খেলায় রূপান্তরিত করতে পারেন।
যেমন- একবার ব্যাংক থেকে টাকা তুলে কতদিন চলা সম্ভব দেখি তো। যদি রেস্তোরাঁয় একদম না খাই তবে সপ্তাহের কত টাকা বাঁচানো যেতে পারে!
এই অভ্যাসগুলো অনুশীলন করলে একসময় বুঝতে পারবেন ঠিক কতটুকু আসলে আপনার প্রয়োজন।
পরিকল্পনা মাফিক চলতে হবে
মনে রাখতে হবে, এই পরিকল্পনা আপনাদের দুজনের মিলিত প্রয়াস। তাই একজন যদি পরিকল্পনা মাফিক কাজ না করেন তবে পুরো পরিকল্পনাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই দুজনের খরচের লাগামটা একে অপরের হাত থাকতে হবে।
কেউ পরিকল্পনা থেকে সরে গেলে অপরজনকে তাকে আবার পরিকল্পনায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। আর নিজে পরিকল্পনার বাইরে চলে গেলে সঙ্গীকে পরিকল্পনায় ফিরিয়ে আনার সুযোগটাও দিতে হবে।
বছরে এক বা একাধিকবার লক্ষ্যের দিকে কতটুকু অগ্রসর হলেন তার হিসাব করতে হবে।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন