খিদা পেয়েছে বলে গপাগপ মুখে খাবার পুরলেন আর পেটে চালান করে দিলেন। এতে না পেলেন খাবারের আস্বাদ আবার খেলেনও বেশি। ফলাফল পেটে অস্বস্তি আর দেহে চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি।
তবে যে কোনো খাবারই যদি মন ভরে খাওয়া যায় তাহলে সেটা শরীরের জন্যই উপকারী। আর এজন্য ধীরে খাওয়ার অভ্যাস করতে হয়।
‘মাইন্ড ফুল ইটিং’ বা মন ভরে খাওয়ার ধারণাটা এসেছে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের কাছ থেকে।
‘হেল্থ লাইন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, এই ধারণার বিশ্বস্ততা প্রমাণ করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা ২৭৮ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর পর্যবেক্ষণ চালায়।
ফলাফলে দেখা গেছে- মনোযোগ দিয়ে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস গড়ার পর অংশগ্রহণকারীদের পেটে সমস্যা, খাবারে অরুচি এবং হযবরল ভাবে খাওয়ার বদোভ্যাসগুলো চলে গেছে।
অর্থাৎ মনোযোগ দিয়ে ও ধীরে খাবার খাওয়া শরীরে জন্য উপকারী। আর এটা খাবারের চাহিদা ও হজমক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, মনোযোগ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস হজম প্রক্রিয়াকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। খাবারের ঘ্রাণ, স্বাদ ও সৌন্দর্য আগ্রহ সৃষ্টি করে ফলে পাচন রস নিঃসৃত হয় এবং খাবার ভালো মতো হজম হয়।
খাবারের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে অভ্যন্তরীণ ক্ষুধা মিটায় এবং হজমের ধারাবাহিকতা ও ছন্দ ঠিক রাখতে সহায়তা করে। এভাবে খাবার খাওয়া সহজ ও উপকারী।
মনোযোগ দিয়ে খাবার খাওয়ার অনুশীলনের কয়েকটি উপায় হল-
* খেতে বসার আগে মনোযোগ বিচ্ছিন্ন হয় এমন সব কিছু থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।
* কেবল ক্ষুধা মেটাতে বা অভ্যাসের কারণে একঘেয়েমিভাবে খাচ্ছেন কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি। ক্ষুধা ও খাবারের আগ্রহের প্রতিও মনোযোগ দেওয়া উচিত।
* প্লেটে কী খাবার আছে সেটার রং, আকার, ঘ্রাণ ও স্বাদের দিকে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন।
* যা খাচ্ছেন তার জন্য তুষ্ট থাকা।
* খাবার পরে যা খেয়েছেন তা নিয়ে পর্যালোচনা করুন। পরিতৃপ্ত, পেট ফোলাভাব, ক্লান্ত বা উৎফুল্লভাব ইত্যাদি অনুভূত হয় তাহলে পরবর্তীতে খাবার নির্বাচনের সময় তা বিবেচনায় রাখুন।
* মনোযোগ দিয়ে ধীরে খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়তে এক সপ্তাহের মতো সময় লাগতে পারে, এরপরে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন