পুষ্টিগুণে ঠাসা ছয় খাবার

পেঁপে, অ্যালো ভেরা, নারিকেল ও জলপাইয়ের তেল ইত্যাদি সাধারণ খাবার পুষ্টিগুণে অসাধারণ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2019, 01:41 PM
Updated : 20 Dec 2019, 01:41 PM

প্রাকৃতিক সব খাবারেই কোনো না কোনো পুষ্টিগুন থাকে নির্দিষ্ট মাত্রায়, যা শরীরের কোনো নির্দিষ্ট অঙ্গের জন্য উপকারী। তবে এদের মাঝে কিছু সাধারণ খাবার আছে যা কয়েক ধরনের পুষ্টিগুণে থাকে টইটম্বুর, আর স্বাস্থ্যগত দিক থেকে পুরো শরীরের জন্যই উপকারী। এই খাবারগুলো আবার বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়, যোগ করা যায় অসংখ্য রান্নার পদে।

খাদ্য ও পুষ্টি বিষয়ক ওয়েবসাইটের প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হলো এমনটি ছয়টি খাবার সম্পর্কে।

শনের বীজ: আকারে এর দানাগুলো ছোট হতে পারে, তবে পুষ্টিগুণে ভরপুর প্রতিটিই। শনের বীজে থাকে উচ্চমাত্রায় ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড’ যা শরীরের জৈবিক তেল উৎপাদনের মাত্রা বাড়ায় এবং ত্বক রাখে লাবণ্যময়। ওজন কমাতেও শনের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী। এতে নেই কোনো ‘কোলেস্টেরল’, ফলে হৃদযন্ত্রের জন্যও উপকারী। অকালে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা অনেকের মাঝেই দেখা যায় আজকাল, আর শনের বীজ এই সমস্যা সমাধানেও অতুলনীয়।

নারিকেল তেল: পুষ্টি উপাদানে ভরপুর ভোজ্য উপাদানগুলোর তালিকায় উপরের সারিতে আছে নারিকেল তেল। রান্নায়, ত্বকের যত্নে, সরাসরি খাওয়া ইত্যাদি নানাভাবে এই তেল ব্যবহার করা যায়। যেভাবেই ব্যবহার হোক না কেন, উপকারিতার দিক থেকে কোনটাই কম যায় না। লোশন, ক্রিম ইত্যাদিতে তো থাকেই, সরাসরি নারিকেল তেল গায়ে মাখা সম্ভব। আর ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও ভোজ্য আঁশে ভরপুর এই তেল খাদ্যাভ্যাসে যোগ করলেও মিলবে অসংখ্য স্বাস্থ্যগুণ।

পেঁপে: পাকলে ফল আর কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে খাওয়া হয় পেঁপে। যে অবস্থাতেই খাওয়া হোক না কেনো পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে বিন্দুমাত্র ত্যাগ স্বীকার করতে হবে না। পেঁপেতে থাকা ‘পাপাইন’ ত্বকের রং ফর্সাকারী ক্রিম, মাস্ক, লোশনে ব্যবহার হয়ে আসছে বহু বছর ধরে। এছাড়াও পেঁপেতে আছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই। ফলে ডায়াবেটিসজনীত হৃদরোগ দূরে রাখতে এর জুড়ি মেলা ভার। নারীদের ঋতুস্রাব চক্রের অনিয়ম দূর করতে বেশ উপকারী এই খাবারটি। আর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম আদর্শ খাবার এই পেঁপে।

কাওন: ত্বক ভালো রাখতে এই শষ্যজাতীয় খাবার বিশেষভাবে উপকারী। কাওন বাড়ায় ‘কোলাজেন’য়ের উৎপাদন, যা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। পাশাপাশি ত্বকে বয়সের ছাপ যেমন, বলিরেখা, ছোপ, দাগ ইত্যাদি দূরে রাখে এই ‘কোলাজেন’। কাওনে থাকা আরেকটি অত্যন্ত উপকারী উপাদান হলো এর ‘সেবাম’ নিয়ন্ত্রণকারী উপাদান। এই উপাদানগুলো ব্রনের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

অ্যালো ভেরা: এই ভেষজ উপাদানের গুনাগুন সম্পর্কে জানা আছে অনেকেরই। অ্যালো ভেরার পাতার ভেতরের অংশের জেলজাতীয় উপাদানটির উপকারিতার কথা বলে শেষ করা যাবে না। ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত অসংখ্য প্রসাধনীতে অ্যালো ভেরা বিদ্যমান। ত্বকের যত্নে সরাসরিও ব্যবহার করা যায় অ্যালো ভেরা যা ত্বকের মসৃণতার বাড়ায় এবং বয়সের ছাপ পড়া বিলম্বিত করে। অ্যালো ভেরার সরবত পান করলে দূর হয় কোষ্ঠ্যকাঠিন্য ও বুক জ্বালাপোড়া। এছাড়াও হজমের সমস্যা সমাধানেও অত্যন্ত উপকারী অ্যালো ভেরা।

জলপাইয়ের তেল: স্বাস্থ্যকর তেলের তালিকায় বিশেষ স্থানে রয়েছে ‘অলিভ অয়েল’ বা জলপাইয়ের তেল। ‘এক্সট্রা-ভার্জিন অলিভ অয়েল’ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সঙ্গে কমায় ‘কোলেস্টেরল’য়ের মাত্রা, হৃদরোগের ঝুঁকি, স্তনের রোগের ঝুঁকি এবং হজমের সমস্যা। রান্নায় জলপাইয়ের তেল ব্যবহারে খাবার তো সুস্বাদু হবেই, রূপচর্চাতেও জলপাইয়ের তেলের আছে অসংখ্য উপকারী ভূমিকা। এতে প্রাকৃতিকভাবে থাকে ত্বক লাবন্যময় ও আদ্র রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান। ত্বকের পাশাপাশি চুল, নখ ও ঠোঁটের যত্নেও জলপাইয়ের উপকারিতা অনেক।