বিয়ের আগে আর্থিক আলাপ

কথায় বলে ‘পেটে ভাত না থাকলে ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়’। তাই বিয়ের আগে অর্থনৈতিক বিষয়গুলো খোলসা করে নেওয়া ভালো।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2019, 09:59 AM
Updated : 4 March 2019, 10:01 AM

মেয়েদের বয়স আর ছেলেদের বেতন নাকি জিজ্ঞেস করতে হয় না! প্রাচীন এসব রীতি বর্তমান যুগে মানায় না। বরং যত বেশি খোলামেলা আলাপ হবে পরে গণ্ডগোল বাঁধার সম্ভাবনাও কমবে।

তাই প্রেম কিংবা পারিবারিক সিদ্ধান্ত- বিয়ে যেভাবেই হোক, অর্থকড়ি সংক্রান্ত বিষয়ে আগেই পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিত।

আর অর্থ সংক্রান্ত কোন বিষয়গুলো জেনে রাখা দরকারী তা জানানো হল সম্পর্ক-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।

অর্থনৈতিক লক্ষ্য: আলোচনা শুরু করার মোক্ষম অস্ত্র হতে পারে এই বিষয়টি। হবু জীবনসঙ্গীকে তার স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে সেই মানুষটি কেমন জীবনযাপন করতে চায় এবং কীভাবে সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে চায় সে সম্পর্কে ধারণা পাবেন। সঞ্চয়ের প্রতি সে কতটা আগ্রহী সে বিষয়েও জেনে নিতে ভুলবেন না।

মাসের বেতন কি পুরোটাই খরচ করে নাকি কিছু অংশ জমা রাখে? প্রশ্নগুলো হেয়ালিপনা মনে হতে পারে, তবে সুখী বৈবাহিত জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঋণ: সংসার শুরু হয়ে গেলে সঙ্গীর ঋণের বোঝা আপনার ঘাড়েও পড়বে। তাই বড় কোনো ঋণের বোঝা আছে কি না? থাকলে তা পরিশোধের পরিকল্পনা কি? সংসারিক খরচে সাহায্য করতে পারবে কি না?- এসব ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।

ঋণ শোধ করে দেওয়ার নিশ্চিত ব্যবস্থা থাকলে সমস্যা নেই। যদি না থাকে এবং কোনো সুষ্ঠু পরিকল্পনাও না থাকে তবে আপনাকে আরেকবার ভাবতে হবে।

ভবিষ্যত বড় খরচ: বাড়ি, গাড়ি কেনা, উচ্চশিক্ষার জন্য কর্মবিরতি নেওয়া ইত্যাদি নানান পরিকল্পনা থাকতে পারে একটা মানুষের। আপনার সঙ্গীর এমন কোনো বড় খরচের পরিকল্পনা আছে কিনা এবং থাকলে তা সংসারের স্বাভাবিক খরচের উপর কী প্রভাব ফেলবে এসব ব্যাপারে আগেভাগে জেনে নেওয়া ভালো।

পরিবারের কেউ আর্থিক দিক থেকে আপনার হবু সঙ্গীর উপর নির্ভরশীল কিনা তাও জেনে নিতে হবে। সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনি নিজে এই খরচগুলো সহজভাবে মেনে নিতে পারবেন কিনা সে বিষয়ে নিজেকেই প্রশ্ন করতে হবে।

বিলাসিতা: দৈনন্দিন স্বাভাবিক খরচ বাদে আর কি কাজে হবু সঙ্গী অর্থ ব্যয় করে বা করতে চায় সেটা জানতে হবে। হতে পারে সেটা কোনো বিলাশবহুল শখ, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় লাগামহীন খরচ, মদ্যপান, জুয়া খেলা, অতিরিক্ত কেনাকাটার অভ্যাস ইত্যাদি অনেক কিছুই।

আপনি তা মেনে নিতে পারবেন কিনা সেটা ভাবতে হবে। আর না পারলে আগেই সরে আসতে হবে।

বর্তমান আয়: যে কোনো সাধারণ আলোচনাতেও কাউকে তার বেতন নিয়ে প্রশ্ন করাটা বিব্রতকর। তবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই আলোচনা হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এতে এক অপরের আর্থিক অবস্থার ধারণা মেলে। আর এই ধারণা থেকে হবু সঙ্গী সংসারে আর্থিক দিক থেকে কতটা সহায়ক হতে পারবে সে বিষয়েও ধারণা পেয়ে যাবেন।

দুজনে অর্থনীতি: একে অপরের আয়-ব্যয়ের ধারণা পেয়ে গেলে এবার আলোচনা করতে হবে কীভাবে দুজন মিলে সংসারের খরচ সামলানো হবে?

খরচ কি একজনের ঘাড়েই পড়বে না কি অপরজন তাতে সাহায্য করবে? বিপদ-আপদের সহায় হওয়ার অর্থ কীভাবে জমবে? আর্থিক এই আলোচনার মধ্য দিয়ে হবু সঙ্গীকে আরও ভালোভাবে চিনতে ও বুঝতে পারবেন।

মনে রাখতে হবে

আর্থিক এই বিষয়গুলো একটি সম্পর্ক ভাঙা কিংবা গড়ার মূল কারণ হতে পারে। তাই এই বিষয়ে সুষ্ঠুভাবে বোঝাপড়া করতে পারলে আপনারা যে একটি শক্ত জুটি সে বিষয়ে অনেকটা আস্থা পাওয়া যায়। সততা এখানে সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মিথ্যে আশা কিংবা মিথ্যে তথ্য কোনোটাই ভবিষ্যতে সুখকর হবে না।

আরও পড়ুন