গরম বাড়ছে। এই সময়ে সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি।
Published : 05 Mar 2024, 10:40 AM
দেহের প্রায় ৬০ ভাগ পানি। যা শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি, অক্সিজেন ও পুষ্টি কোষের কোণায় কোণায় পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।
যে কারণে পর্যাপ্ত পানি পান না করলে নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। তৃষ্ণার্ত বোধ করা ছাড়াও হতে পারে- মাথা হালকা লাগা, মুখ শুকানো এমনকি মাথাব্যথা।
তবে শরীরে পানির মাত্রা কমার কারণে বুকে ব্যথাও হতে পারে। যা কি-না মারাত্মক পানিশূন্যতার লক্ষণ হিসেবে বিবেচিত।
পানিশূন্যতা থেকে বুকে ব্যথা হওয়ার কারণ
দেহে পর্যাপ্ত তরলের অভাবে রক্তচাপের পরিবর্তন থেকে হৃদযন্ত্রে ব্যথা বোধ হয়।
এই বিষয়ে ক্যালিফোর্নিয়া’র ‘মেমোরিয়াল কেয়ার স্যাডেলব্যাক মেডিকেল সেন্টার’য়ের পরিচালক ডা. মার্ক টাব ব্যাখ্যা করেন, “পানিশূন্যতার কারণে রক্তচাপ কমে। পাশাপাশি টাটকা রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান দেহের সব জায়গায় ঠিক মতো পৌঁছায় না। যে কারণে ধমনী সংকুচিত করে ও হৃদগতি বাড়িয়ে রক্তচাপ বাড়ানোর চেষ্টা করে দেহ।”
“হৃদগতির এই বৃদ্ধির ফলে মনে হতে পারে বুক ধরফর করছে, এমনকি কারও কারও বুকব্যথা হতে পারে”- রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন এই চিকিৎসক।
পানিশূন্যতার মাত্রা যত বেশি হবে ততই এরকম বোধ হওয়ার পরিমাণ বাড়তে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে হতে পারে হৃদরোগের লক্ষণ।
‘টেক্সাস হেল্থ হ্যারিস মেথোডিস্ট হসপিটাল অ্যালিয়ান্স ইন ফোর্ট ওর্থ’য়ের ডা. এরিক হ্যাম্স একই প্রতিবেদনে মন্তব্য করেন, “এই ক্ষেত্রে পানিশূন্যতা হতে পারে হৃদযন্ত্র পরীক্ষার একটা মাধ্যম। দেহে তরলের অভাবে হওয়া বুকে ব্যথা হওয়ার লক্ষণ হতে পারে অন্তর্নিহিত হৃদসংক্রান্ত কোনো সমস্যা।”
আর যে কোনো ধরনের বুকব্যথা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
পানিশূন্যতার অন্যান্য লক্ষণ
শরীর নানানভাবে পানিশূন্যতার কথা জানান দেয়। প্রধান সংকেত হল তৃষ্ণা বোধ করা। এছাড়া অন্যান্য উপসর্গগুলো হল-
মুখ শুকানো
গাঢ় রংয়ের প্রস্রাব
স্বাভাবিকের চাইতে কম ঘাম বা প্রস্রাব হওয়া
শুষ্ক ত্বক
অবসাদ
মাথা ঝিমঝিম করা
পানিশূন্যতা মারাত্মক আকার ধারণ করলে আরও কিছু বিপজ্জনক লক্ষণ দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন’য়ের তথ্যানুসারে সেগুলো হল-
বিভ্রান্তি
জ্ঞান হারানো
প্রস্রাব কমে যাওয়া
দ্রুত হৃদগতি
ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়া
‘শক’
নিজের বা অন্যের মাঝে এসব দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
পানিশূন্যতা রোধে করণীয়
ডা. হ্যাম্স বলেন, “পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হতে না চাইলে সেরা উপায় হল যথেষ্ট পরিমাণে তরল গ্রহণ করা।”
বয়স, দেহের আকার, কাজ-কর্মের ধারা ও আবহাওয়ার ওপর পানি গ্রহণের পরিমাণ নির্ভর করে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান মায়ো ক্লিনিক জানাচ্ছে, দেহের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সারা দিনে অন্তত ৯ থেকে ১২ গ্লাস পানি (বা অন্যান্য তরল) গ্রহণ করার অভ্যাস গড়তে হবে।
ডা. টাব বলেন, “যারা শারীরিকভাবে বেশি কাজ করেন বা ঘাম বেশি হলে (অসুস্থতা বা আবহাওয়ার কারণে) পানি গ্রহণের পরিমাণ বাড়াতে হবে।”
মায়ো ক্লিনিক আরও জানায়- যদি প্রস্রাব ফ্যাকাশে হলুদাভো বা লেবু-পানির মতো রংয়ের হয় তবে বুঝতে হবে দেহে পানির মাত্রা ঠিক আছে। আর রং যদি আপেলের জুস মতো বা গাঢ় হতে থাকে তবে বুঝতে হবে দেহে পানিশূন্যতা হচ্ছে।
আরও পড়ুন
শরীর যেভাবে জানান দেয় পানির অভাব