ব্যায়াম করলেও কি সাদা ভাত রুটি বাদ দিতে হয়?

খারাপ নয়, বরং সাদা কার্বোহাইড্রেইট বাদামি থেকে ভিন্ন।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2022, 09:49 AM
Updated : 30 August 2022, 09:49 AM

পরিশোধিত আটা, ময়দা, চাল- মানে সাদা কার্বোহাইড্রেইট আসলে ক্ষতিকর না যদি নিয়মিত ব্যায়ামে অভ্যস্ত হওয়া যায়।

স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার শুরুতেই মানুষ কার্বোহাইড্রেইট বাদ দিয়ে দেন। তবে সমস্যা হল এই পুষ্টি উপাদান পেটে না গেলে আর নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ক্রমেই শরীর জোর হারাবে, পেশির ঘনত্ব কমবে, দেখা দিতে পারে ‘এক্সারসাইজ ফ্লু’।

ইনসাইডার ডটকম’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই বলেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পোর্টস নিউট্রিশন কোচ’ ডা. মাইক মোলয়।

খারাপ কার্ব বলে কিছু নেই

জন হপকিন্স মেডিসিন’য়ের ডা. নেস্তোরাস মাথিওডাকিস বলেন, “শরীর কার্বোহাইড্রেট’কে ভেঙে তৈরি করে গ্লুকোজ। এটাই আমাদের প্রধান কর্মশক্তির উৎস। মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, ‍যকৃত, পেশি সবারই দরকার এই গ্লুকোজ।”

যুক্তরাষ্ট্রের আরেক পুষ্টিবিদ ইলিং সাই বলেন, “প্রচলিত একটি ভুল ধারণা হল সাদা ভাত, পাস্তা, পাউরুটি, আলু ইত্যাদি থেকে আসা কার্বোহাইড্রেইট ক্ষতিকর। এটা ঠিক যে এই প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো থেকে পরিপূর্ণ শষ্য বা বাদামি খাবার থেকে বেশিমাত্রায় ভোজ্য আঁশ মেলে, তবে এদেরকে ক্ষতিকর বলাটা ভুল হবে। এগুলো শুধুই ভিন্ন।”

“পরিপূর্ণ শষ্য বা ‘হোল গ্রেইন’ ধরনের খাবারে শষ্যের ব্র্যান বা ভূষি, ‘জার্ম’ বা অঙ্কুর্‌ এবং এন্ডোস্পারর্ম সবগুলো উপাদানই থাকে। পরিশোধিত ‘হোয়াইট কার্বোহাইড্রেইট’য়ে থাকে শুধুই ‘এন্ডাস্পার্ম’।

‘জার্ম’ ও ‘ব্র্যান’য়ে থাকে ভোজ্য আঁশ, বি ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ। ‘এন্ডোস্পার্ম’য়ের থাকে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট।

নিউ ইয়র্ক’য়ের পুষ্টিবিদ শানা স্পেন্স ইনসাইডার ডটকম’য়ে জানান, “কার্বোহাইড্রেইট’য়ের সঙ্গে ভোজ্য আঁশ যত বেশি থাকবে, শরীরে সেটা ততই ধীরে ভাঙবে, ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা হুট করে বেড়ে যাবে না।”

ব্যায়ামের আগে ‘ফাস্ট কার্ব’ হতে পারে ভালো

মোলয় বলেন, “ব্যায়ামের আগে ভোজ্য আঁশ কম এমন কার্বোহাইড্রেইট খাওয়া ভালো। কারণ তা শরীরে দ্রুত ভেঙে কর্মশক্তি যোগাবে। এই ধরনের খাবারকে বলা হয় ‘ফাস্ট কার্ব’, ‘কুইক কার্ব’ ইত্যাদি। সেটা হতে পারে ওটমিল কিংবা কলা-রুটি।”

নেভাডা’র স্পোর্টস মেডিসিন ফিজিশিয়ান জন এম. মার্টিনেজ বলেন, “পেশিতে ‘গ্লাইকোজেন’য়ের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় আনার জন্য ব্যায়ামের পর শরীরে আবার কার্বোহাইড্রেইট ও প্রোটিন দরকার। এজন্য দরকার ভোজ্য আঁশ বেশি এমন কার্বোহাইড্রেইট যেমন- লাল চালের ভাত, পরিপূর্ণ শষ্যের পাস্তা, কিনোয়া ইত্যাদি।”

কার্বের ধরনের ওপর দুঃশ্চিন্তা না করা

ব্রিটিশ ডায়েটেটিক অ্যাসোসিয়েশন’য়ের নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ প্রিয়া টিউ বলেন, “নিয়মিত যদি ব্যায়াম করেন তবে কোন ধরনের কার্বোহাইড্রেইট কখন খেলেন এই বিষয় নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। ব্যায়ামের পর এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে খাবার খেলেই চলবে। আমি তাই করি। ব্যায়ামের আগে ‘ফাস্ট কার্ব’ তখনই প্রয়োজন হবে যখন আপনি অনেকক্ষণ না খেয়ে আছেন তখন।”

ক্যালোরি এবং প্রোটিন জরুরি

শরীর স্বাস্থ্যবান রাখতে তিনটি বিষয় জরুরি। ক্যালরির মাত্রা শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য কম থাকতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে আর পর্যাপ্ত প্রোটিন খেতে হবে।

কার্বোহাইড্রেইট নিয়ে বেশি মাথাব্যথার দরকার নেই। আর্ ধৈর্য্য রাখতে হবে। শরীর রাতারাতি স্বাস্থ্যবান হয়ে যায় না কখনই।

আরও পড়ুন

Also Read: যেসব খাদ্যশস্য ওজন কমাতে সহায়ক

Also Read: যেসব খাবারে চুল পড়া কমে

Also Read: লাল চাল বনাম সাদা চাল

Also Read: সাদা ভাত খাওয়ার প্রভাব