রাখাইন খাবারের রেস্তোরাঁ ‘ফালং জি’

শামুক, ঝিনুকের পাশাপাশি রয়েছে বিন্নি চালের ভাত। আরও মিলবে কাঁকড়া, ‍মুন্ডি, রামেন-সহ বার্মিজ ও রাখাইন খাবারের নানান পদ।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2023, 06:16 AM
Updated : 30 May 2023, 06:16 AM

রেস্তোরাঁর দেয়াল ঘেঁষা চেয়ার টেবিলে বসে খাবারের অর্ডার টুকছিলেন রাখাইন মেয়ে জমা।

কিছুক্ষণ পর সেই যখন বেতের ট্রেতে সাজিয়ে গুছিয়ে মুন্ডির বাটি আর শামুকের সালাদের প্লেট এনে রাখলো তখন একটু অবাক হতেই হল। খাবার পরিবেশনের জন্য তাদের আলাদা কোনো মানুষ নেই।

পাহাড়ি না বলে বরং রাখাইন ও বার্মিজ খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন জমা’র মা মালায়ইন। রেস্তোরাঁর নাম দিয়েছেন ‘ফালং জি’।

মায়ের সাথে মেয়ে ছাড়াও সাহায্য করার জন্য রয়েছে তার ছেলে ওয়াং।

ছেলের সাথেই কথা বলে জানা গেল, গত বছর অগাস্ট মাসে কক্সবাজার শহরের ভেতর বার্মিজ মার্কেটের পেছনে বুদ্ধিস্ট টেম্পল রোডে কায়াং পাড়ায় মা, মেয়ে, ছেলে মিলে এই রেস্তোরাঁ চালু করেন।

এর আগে তারা বাসা থেকে খাবার ‘হোম ডেলিভারি’ করতেন।

রাখাইন আর বার্মিজ খাবারের পসরা সাজানো এই রেস্তোরাঁয় সকালে মিলবে- বিন্নি ভাত ও ফ্রাইড রাইস।

দুপুরে পাওয়া যায়- স্কুইড সালাদ, পাহাড়ি মুরগির তরকারি, হাঁস, বাঁশ কোড়ল, তিন মিশালি ভর্তা।

স্পেশাল দুটি পদের মধ্যে রয়েছে চা পাতার সালাদ, যাকে বলে ‘লাফাসু’। আরেকটি হল ‘তুজা’, যা কিনা সিদ্ধ সবজি দিয়ে মরিচ ভর্তা।

বিকাল থেকেই পাওয়া যাবে মুন্ডি আর রামেন। তবে দুটি খাবারই শীতকালের জন্য সেরা। গরম আর ঝালের অদ্ভূত মিশেল।

এছাড়াও রাতের খাবারে মিলবে- সাদা ভাতের সঙ্গে শামুকের সালাদ, ঝিনুকের তরকারিসহ অন্যান্য খাবার।

তবে সব সময় সব খাবার থাকেও না। খাবারের মূল্যসীমা ১৫ থেকে ‍শুরু করে ২৫০ টাকা।

ওয়াং বলেন, “খাবারের বেশিরভাগ কাঁচামাল তারা সংগ্রহ করেন কক্সবাজারের চৌফলদন্ডী বাজার থেকে। সেখানের সাগর পাড়ের মানুষেরা শামুক ঝিনুক সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে আসেন।”

খাবারের স্বাদেও মিলবে ভিন্নতা। কারণ মসলাগুলো কিছুটা হলেও আলাদা।

রান্না কে করেন?

জানতে চাইলে পাশেই দাঁড়ানো মালায়ইন বলে উঠলেন, “আমি-ই করি।”

আপাতত শহরের ভেতর ছোট পরিসরে রেস্তোরাঁর যাত্রা শুরু করলেও, অচীরেই কক্সবাজারের লাবণী সৈকতের দিকে বড় করে খাবারের পসরা সাজানোর স্বপ্নের কথা জানালেন ওয়াং।

বের হয়ে আসার সময় ‘ফালং জি’র মানে জিজ্ঞেস করতে ওয়াং বললেন,

“কক্সবাজারের প্রাচীন নাম ‘ফালং জি’, আমাদের সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই নামেই কক্সবাজারকে ডাকতো।”

আর সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেই খাঁটি রাখাইন খাবারের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন তারা।