ভালো খারাপের বিষয়টা নির্ভর করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর।
Published : 23 May 2024, 08:06 PM
প্রায় সবারই ধারণা ইন্টারনেট মানুষের মনে খারাপ প্রভাব ফেলে।
তবে নেদারল্যান্ডের ‘টিলবার্গ ইউনিভার্সিটি’র গবেষকরা দাবি করছেন, এই সেবার অপকারের চাইতে উপকারই বেশি।
পর্যবেক্ষণ ভিত্তিক এই গবেষণার প্রধান ডা. ম্যাটি ভোরি সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “প্রায় সবাই মনে করেন প্রযুক্তির শক্তিতে চলা ইন্টারনেট মহামারীর মতো মানসিক ক্ষতি করছে। তবে আমাদের গবেষণা বলছে উল্টো।”
‘টেকনোলজি, মাইন্ড অ্যান্ড বিভেইভিওর’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণার জন্য ঘরে বা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে আটটি বিভিন্ন বিভাগের ওপর পাওয়া তথ্য যাচাই করা হয়। যেগুলোর মধ্যে ছিল- পরিতৃপ্তি ও সামাজিক জীবন।
পর্যালোচনার জন্য ‘গালআপ ওয়ার্ল্ড পোল’য়ের বাৎসরিক প্রতিবেদন থেকে ১৬৮টি দেশের ২৫ লাখ মানুষের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। যেখানে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল- যারা ব্যবহার করেন না তাদের তুলনায় ইন্টারনেট যারা ব্যবহার করেন তাদের কতটুকু কল্যাণ হয়েছে?
ভোরি বলেন, “এই ধরনের সাধারণ প্রশ্নের নানান রকমের উত্তর আসতে পারে, আর সেসব বিবেচনা করেই গবেষণায় তথ্যগুলো পর্যালোচনা করা হয়।”
তিনি জানান, যারা ব্যবহার করেন তাদের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ জানিয়েছেন- ইন্টারনেট তাদের জীবনে নানান সুফল বয়ে এনেছে।
গবেষণায় যুক্ত না থেকেও জার্মানির ‘ইউনিভার্সিটি অফ উর্জবুর্গ’য়ের ‘সাইকোলজি অফ কমিউনিকেইশন অ্যান্ড নিউ মিডিয়া’র অধ্যাপক মার্কাস আপিল বলেন, “বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই গবেষণা খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর তথ্য পর্যালোচনাও করা হয়েছে বেশ ভালোভাবে।”
তিনি আরও বলেন, “অন্যান্য অনেক গবেষণায় মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করে কল্যাণকর বিষয়ে মিশ্র তথ্য পাওযা গেছে। আসলে খারাপ বা ভালো কিছুর জন্য ইন্টারনেটের কোনো অবদান নেই, সম্পূর্ণটাই নির্ভর করছে মানুষ এটা দিয়ে কী করছে সেটার ওপর।”
ভোরি বলেন, “আমাদের গবেষণটা পর্যবেক্ষণমূলক। তাই বিস্তারিত তথ্যের জন্য অংশগ্রহণকারীদের আথিক বিষয় নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। আমাদের ফলাফলে সাধারণভাবে দেখা যেতে পারতো- যাদের টাকা বেশি তারা স্বাস্থ্যসম্পর্কিত বিষয়ে আগ্রহ বেশি হয়। সেটা কিন্তু হয়নি।”
বিভিন্ন প্রভাবক বিশ্লেষণ ও যুক্ত করে দেখা গেছে যাদের আয়ের পরিমাণ কম তারাও ইন্টারনেট ব্যবহার করে সুবিধা পেয়েছে।
তাহলে ইন্টারনেট বন্ধ রাখবেন নাকি ‘স্ক্রল’ করে যাবেন?
অনলাইন ব্যাংকিং, কেনাকাটা, নানান কিছু খুঁজে বের করা, ঠিকানা খোঁজা- ইন্টানেটের ব্যবহার এখন অনেক বিস্তৃত। এমনকি বিনোদন বা খবরও আসে এর মাধ্যমে। আর সেই হিসেবে ব্যবহারকারীর ধরনও নানান রকম।
ভোরি বলেন, “সামাজিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বৈজ্ঞানিক হিসেবে আমাদের হাতে পর্যাপ্ত সময় ছিল না যে, প্রতিটা খারাপ প্রভাবের বিপরীতে সমাধান কী? তবে এতটুকু বলতে পারি সাবধানতার প্রয়োজন রয়েছে।”
যদি ইন্টারনেটের কোনো কিছু খারাপ লাগে সেটা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
অ্যাপিল বলেন, “কোনো কিছু দেখতে গিয়ে যদি মনে অস্বস্তি কাজ করে তবে বন্ধ করে অন্য কিছু দেখুন।”
আরও পড়ুন
ফেইসবুকের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে নিঃসঙ্গতা