ফেইসবুকের বাজে অভিজ্ঞতা থেকে নিঃসঙ্গতা

ফেইসবুক ও টুইটারের মতো অনলাইন সামাজিক মাধ্যমের তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলো থেকে মানুষ একাকী হয়ে যেতে পারে; বিশেষ করে যারা তরুণ।

লাইফস্টাইল ডেস্ক আইএএনএস/বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Jan 2019, 11:39 AM
Updated : 24 Jan 2019, 11:39 AM

মিডিয়া টেকনোলজি অ্যান্ড হেল্থ (এমটিএইচ)’য়ের ওপর করা যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অফ পিটসবার্গ’স সেন্টারের একটি গবেষণায় এরকম ফলাফলই পাওয়া গিয়েছে।

নতুন প্রজন্মের প্রত্যেকেরই ইন্টারনেট জগতে আছে আলাদা এক জীবন। ফেইসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার ইত্যাদি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে আছে অনলাইন জীবনের অংশগুলো। আর গবেষণা বলছে, এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা একজন ব্যক্তির বাস্তব জীবনে বয়ে আনতে পারে নিঃসঙ্গতার অন্ধকার, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উপর এই ঝুঁকি সবচাইতে বেশি।

“দুশ্চিন্তার বিষয় হল সামাজিক যোগাযোগে ভালো কোনো অভিজ্ঞতা ব্যবহারকারীদের খুব একটা ভালো অনুভূতি দেয় না, তবে খারাপ অভিজ্ঞতা বাড়ায় একাকিত্বের হতাশায় ভোগার আশঙ্কা।” এমনটাই বলেন গবেষকরা।

গবেষণার প্রধান লেখক, এমটিএইচ’য়ের পরিচালক ব্রায়ান প্রাইম্যাক বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উদ্দেশ্য হল মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা। তবে আশ্চর্যজনক এবং অবাক করার বিষয় হল, আমাদের তদন্ত বা পর্যবেক্ষণ এই মাধ্যমেগুলো মানুষের একাকিত্বের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করছে।”

‘আমেরিকান জার্নাল অফ হেল্থ প্রোমোশন’ জার্নালে এই গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়- ‘নিজেকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করা একাকিত্বেরই অপর নাম। আর এরসঙ্গে স্বাস্থ্যহানিও জড়িয়ে আছে। যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হতাশাগ্রস্ততা।’

এই গবেষণার জন্য প্রাইম্যাক ও তার দল ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সি ১,১৭৮ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষণ করেন। দেখা হয় কী মাত্রায় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক ও নেতিবাচক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয় এবং এর কারণে তারা নিজেকে কতটা একা অনুভব করেন।

নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মাত্রা প্রতি ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণকারীদের একাকিত্বের মাত্রা বেড়েছে ১৩ শতাংশ। তবে ইতিবাচক অভিজ্ঞতার মাত্রা বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের একাকিত্বের তেমন উন্নতি হয়েছে বলে জানায়নি।

গবেষণার আরেক লেখন জেইমি সিডানি বলেন, “ভালো অভিজ্ঞতার তুলনায় বাজে অভিজ্ঞতাকে বেশি মুল্য দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে প্রায় প্রতিটি মানুষের মাঝে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরও বেশি প্রযোজ্য।”

প্রাইম্যাক যোগ করেন, “চিকিৎসকদের উচিত মানুষকে অনলাইন-ভিত্তিক বাজে অভিজ্ঞতাগুলোর সঙ্গে আরও চিন্তাশীলভাবে মোকাবেলা করার অনুপ্রেরণা দেওয়া। ফলে নেতিবাচক অভিজ্ঞতার শিকার হওয়া এবং সেটা থেকে একাকিত্বের শিকার হওয়া আশঙ্কা কমবে।”

গবেষকরা বলেন, “যেহেতু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেক বেশি বিস্তৃত, তাই এখানে বাজে অভিজ্ঞতার শিকার হওয়ার কারণ এবং শিকার হওয়া মানুষগুলোকে কীভাবে সহযোগিতা করা যায় সে বিষয়ে গভীর চিন্তার প্রয়োজন আছে।”

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন