সাদা সাদা, কালা কালা- গানের ছন্দ যেমন দেহ নাচায় তেমনি রংও মনের ওপর প্রভাব ফেলে।
কখনও কি খেয়াল হয়েছে, রঙিন পোশাক কিংবা লালের পরিবর্তে অন্য রংয়ের লিপস্টিক দেওয়াতে মনটাই ভালো হয়ে গেল। কিংবা অস্থির মন হল শান্ত।
মনের ওপর রংয়ের প্রভাব বিষয়টা মিথ্যে নয়। আবার একেক রং একেকভাবে প্রভাব ফেলে।
যেমন- লাল রং সাধারণত শক্তিশালী ও আকর্ষণীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আবার সকলের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য নয়।
নিউ মেক্সিকো’র ‘লাইফস্ট্যান্স হেল্থ’য়ের স্বাস্থ্য পরিচালক ড. জিনিফার হেতিমা এই বিষয়ে রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “প্রাণী ও মানুষ দুইয়ের জন্যই লাল রং আগ্রাসনের পাশাপাশি হরমোন নিঃসরণ এবং প্রভাববিস্তারকারী হিসেবে প্রভাব রেখে থাকে।”
“অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, লাল রং খেলোয়ারদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তারা অন্যান্য দলের তুলনায় বেশি সুবিধা পায়। যখন বাড়তি শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের প্রয়োজন তখন রংয়ের মনস্তাত্বিক বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগিয়ে লালের মতো রং পরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।”
আমেরিকার পরিবেশ বিজ্ঞানী লি চেম্বার মনে করেন, “পোশাক আমাদের অনুভূতি ও আচরণের ওপর প্রভাব রাখে এবং রং আমাদের মনের উপর প্রভাব ফেলে।”
ব্যক্তির ওপর নির্ভর করে রংয়ের প্রভাব
মন ও অনুভূতির ওপর অনেক রংই অবদান রাখে যেমন- শক্তিশালী ও দৃঢ় অনুভতির জন্য লাল, কালো, গাঢ় বেগুনি। আনন্দ ও চঞ্চল্ভাবের জন্য কমলা, হলুদ, উজ্জ্বল সবুজ। দুঃখীভাবের ক্ষেত্রে ধূসর।
তবে মানুষ ভেদে অভিজ্ঞতা প্রত্যেকের কাছেই রংয়ের ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করতে পারে।
শিকাগো’র সনদস্বীকৃত মনোবিজ্ঞানী বেথানি কুক বলেন, “আমাদের ব্যক্তিগত মনোভাব অনেকক্ষেত্রেই আমাদের সংস্কৃতি বা জীবন অভিজ্ঞতার সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সাধারণ নীতিমালার মতো নাও হতে পারে। যেমন- লাল রংয়ে শক্তিশালী বোধ করা, নীল রংয়ে শান্ত ইত্যাদি।”
জীবনে রংয়ের মনস্তত্ব যোগ করার পন্থা
রংয়ের মনস্তত্ব একটা সুন্দর বিষয় যা ক্রমগত পরিবর্তনও হতে পারে। এটা বোঝার সহজ উপায় হল কোন রংয়ে মন ভালো হয় আর কোন রংয়ে কিছুটা স্থির অনুভব করেন- তা পর্যবেক্ষণ করা।
দিনের বেলায় বাইরে যেয়ে কোন রংটা চোখে আটকে যাচ্ছে ও ভালো অনুভব করাচ্ছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে হবে। এটা কোনো পোশাক বা সাইনবোর্ড বা যে কোনো কিছু হতে পারে।
এর মধ্য দিয়ে নিজেকে উৎসাহ দেয় এমন রং খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।
মন ভালো রাখে এমন রং সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেলে সে অনুযায়ী নিজের পছন্দের রংয়ের তালিকা করে নিন।
ড. চেম্বারের মতে, “ব্যক্তিগত রংয়ের তালিকা তৈরি করতে পারলে সে অনুযায়ী পোশাক দিয়ে ওয়ারড্রোব গুছিয়ে নেওয়া যাবে। ফলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পোশাক পরিধানে মন উৎফুল্ল থাকবে।”
আসল বিষয় হল
নির্দিষ্ট কোনো রং পরিধান মনের ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখে। কোন রং আপনাকে খুশি রাখতে পারে তা বুঝতে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, অনুধাবন ও গুরুত্বের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
পছন্দের রংয়ের পোশাক পরা, ব্যাগ ব্যবহার ইত্যাদি ভালো অনুভূতি সৃষ্টি করে। বড় বা ছোট যে কোনো মানুষের ক্ষেত্রেই পছন্দের রংয়ের জিনিসপত্র ব্যবহার আনন্দদায়ক।
আরও পড়ুন