ঘাম কমাতে সারা শরীরে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা কতটা উপযোগী?

ঘামের দুর্গন্ধ দূর করার পাশাপাশি ঘাম হওয়া কমাতে ডিওডোরেন্ট কাজ করে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 March 2023, 07:41 AM
Updated : 16 March 2023, 07:41 AM

ঘাম দেহের একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ করার উপায় হল ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা।

বাহুমূলে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার ঘাম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

তবে ঘাম কমাতে সারা শরীরে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা নিরাপদ কিনা সে প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বোর্ড প্রত্যয়িত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ জেমি ডিরোসা ও রায়মা গার্লাপাতি তাদের মনোভাব সম্পর্কে জানান রিয়েলসিম্পল ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

ডিওডোরেন্ট যেভাবে ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে

ডিওডোরেন্ট নয় বরং এতে থাকা অ্যান্টিপার্সপারেন্ট বা ঘাম নিরোধক উপাদান, ঘাম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

ডা. ডিরোসা বলেন, “ডিওডোরেন্টের গায়ে ‘ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টিপার্সপারেন্ট’ লেখা থাকে। ডিওডোরেন্ট দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণ করে, অ্যান্টিপার্সপারেন্ট অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।“

অ্যান্টিপার্সপারেন্ট মূলত ঘামগ্রন্থি আবদ্ধ করে ঘাম নিঃসরণ বন্ধের সংকেত দেয়। ফলে ঘাম নিয়ন্ত্রণ থাকে।

অ্যান্টিপার্সপারেন্ট’য়ের উপাদান হিসেবে সাধারণত ব্যবহার করা হয় ‘অ্যালুমিনিয়াম সল্ট’। যা একবার দ্রবীভূত হয়ে ঘাম গ্রন্থিকে বন্ধ করতে সাহায্য করে।

ডা. ডিরোসা ব্যাখ্যা করেন, “অ্যান্টিপার্সপারেন্ট সময়ের সাথে সাথে হ্রাস পায়। ফলে অধিকাংশ ডিওডরেন্ট পুনরায় ব্যবহার করতে হয়।”

অ্যান্টিপার্সপারেন্ট কতটা কার্যকর তা বোঝার একটা কৌশল হল রাতে ডিওডোরেন্ট মেখে ঘুমানো। যা শোষিত হতে প্রায় আট ঘন্টা সময় লাগবে।

সারা শরীরে ডিওডোরেন্ট মাখা কতটা কার্যকর?

এমন প্রশ্নের উত্তরে ডা. ডিরোসা বলেন, “দেহের নির্দিষ্ট অংশে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার ঘাম নিয়ন্ত্রণ করে।”

আমাদের দেহের বেশিরভাগ অংশে ঘাম গ্রন্থি আছে। আর পায়ের পাতায় এর সংখ্যা বেশি। তাই ডিওডোরেন্ট ও অ্যান্টিপার্সপারেন্ট অতিরিক্ত ঘাম কমাতে যে কোনো জায়গায়ই ব্যবহার করা যায়।

ডা. গার্লাপাতি বলেন, “ত্বকের সাথে ত্বক ঘষা লাগে এমন স্থানে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা যায়। অ্যান্টিপার্সপারেন্ট ঘামগ্রন্থিতে সক্রিয় ভূমিকা রেখে ঘাম নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।”

পেটের ভাঁজ, উরু ও স্তনের নিচের অংশ যেখানে ব্যাক্টেরিয়া হওয়ার সম্ভাবনা বেশি সেখানে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা যায়।

তিনি বলেন, “এসব জায়গায় ডিওডোরেন্ট ব্যবহার ত্বকের ঘষা লাগার কারণে হওয়া জ্বলুনি কমাতে সহায়তা করে।”

বাহুমূলের পাশাপাশি দেহের অন্যান্য অংশে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করতে চাইলে ‘রোলঅন’য়ের পরিবর্তে ডিওডোরেন্ট স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে।

“ডিওডোরেন্ট স্প্রে নানান রকম সুগন্ধি সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। এগুলো বডি স্প্রে বা সুগন্ধির মতো করে ব্যবহার করা যায়”, বলেন ডা. গর্লাপাতি।

সারা শরীরে ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা কি নিরাপদ?

“সংক্ষেপে উত্তর হল ‘হ্যাঁ’। তবে সারা শরীরে একই সময়ে পুরো ডিওডোরেন্ট দেওয়া সম্ভব না”, বলেন ডা. ডিরোসা।

ঘাম দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তাই সারা দেহের ঘামগ্রন্থিকে আবদ্ধ করে তার কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করলে দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।

তাই তিনি পরামর্শ দেন, “দেহের যেসব অংশে আলো ও বাতাস চলাচল করতে পারে না, সেখানে সামান্য ডিওডোরেন্ট ব্যবহার করা উচিত।”

তাছাড়া, এটা ব্যবহারের আগে ‘প্যাচ টেস্ট’ করে নেওয়ার কথাও বলেন ডা. ডিরোসা। অন্যথায় ত্বকে সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে।

নিরাপত্তা রক্ষায়, ডিওডোরেন্টে থাকা ‘অ্যালুমিনিয়াম সল্ট’ নিরাপদ কিনা, তা নিয়ে দ্বিধা ও বিতর্ক রয়েছে।

ডা. ডিরোসা বলেন, “স্তন ক্যান্সারে হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ না মিললেও যাদের কিডনি অনেক বেশি দুর্বল তাদের পক্ষে সঠিক উপায়ে অ্যালুমিনিয়াম অপসারণ করা সম্ভব হয় না। তাই তাদের এটা এড়িয়ে চলাই ভালো।”

আরও পড়ুন:

Also Read: লোমকূপ আবদ্ধ হওয়া ঠেকাতে

Also Read: রান্নার উপকরণ দিয়ে ঘামের গন্ধ দূর

Also Read: বাহুমূলের দুর্গন্ধ দূর করার উপায়