Published : 12 Jun 2023, 07:11 PM
‘মায়োপিয়া’ বা স্বল্প দৃষ্টিশক্তির সমস্যা দেখা দেয় যখন কর্নিয়ায় আকৃতি বেশি বাঁকা বা চোখের মনি আকারে বড় হয়ে যায়। ফলে চোখে আলোক রশ্মি ভুলভাবে বেঁকে যায়।
দিন দিন মায়োপিয়া রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অনুমান করা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৫০ শতাংশ মানুষ মায়োপিয়া ভোগার সম্বানরা রয়েছে।
দুর্বল দৃষ্টিশক্তির লক্ষণ
ভারতের ‘ফোর্টিস হাসপাতাল মুলুন্দ’য়ের জ্যেষ্ঠ চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. গিরিজা সুরেশ বলেন, “শিশুর মায়োপিয়ার প্রাথমিক লক্ষণ হল- কাছ থেকে টেলিভিশন দেখা, বই কাছে ধরা, চোখ কুঁচকানো, চোখ চুলকানো বা ঘষা, মাথাব্যথা ইত্যাদি।”
চোখ ঘন ঘন ঘষা ও চোখে পানি আসা বিষয়টাকে অবহেলা করা যাবে না। সাধারণত দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে আসলে শিশু বার বার চোখ ঘষে থাকে, ফলে চোখে পানি আসে।
তাছাড়া শিশু যদি বলে যে, টেলিভিশন বা স্কুলের বোর্ড ঠিক মতো দেখতে পাচ্ছে না, তাহলে দেরি না করে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
টেরাচোখা হলেও সাবধান হতে হবে
চোখের সমস্যা দ্রুত ধরা পড়লে চিকিৎসা করে চশমা নেওয়া যায়। দুই চোখের অসম প্রতিসরণ ও ‘অলস চোখ’য়ের সমস্যা নিরসনে সহায়ক হয়। কখনও কখনও ছোট খাট ‘স্কুইন্ট’ বা চোখ টেরা হওয়ার সমস্যাও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।
শিশুর বিকাশের বয়সগুলোতে দৃষ্টিশক্তি বিকাশে সহায়তা করা শিক্ষাগত, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হয়।
ডা সুরেশের মতে, “সতর্কতা হিসেবে স্কুলে যাওয়ার আগেই পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করে দেখা উচিত। পারিবারিক ইতিহাসে মায়োপিয়া আছে এমন শিশুদের তিন বছরের মধ্যেই পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। বয়ঃসন্ধিকাল না আসা পর্যন্ত শিশুদের বছরে একবার চোখ পরীক্ষা করান উচিত।”
শিশুর কি স্থায়ীভাবে চশমার প্রয়োজন আছে?
ডা সুরেশ বলেন, “এটা বোঝা প্রয়োজন যে, মায়োপিয়া আক্রান্ত সকল শিশুরই চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। অল্প বয়সি শিশুদের চশমা ব্যবহারের মাত্রা কম। নিয়মিত চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন; যেন দরকার হওয়া মাত্র চশমা গ্রহণ করা যায়।”
দুর্বল দৃষ্টি প্রতিরোধের উপায়
বাচ্চাদের এই অবস্থা প্রতিরোধে ‘গ্যাজেট’ যেমন - ফোন, ট্যাবলেট, ভিডিও গেইমসের ব্যবহার সীমিত করতে হবে। দিনের আলোতে শিশুদের বাইরে খেলতে উত্সাহিত করতে হবে।
অনেক সময় যেসব শিশুর মায়োপিয়া হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাদের, এই সমস্যার গতি কমাতে নির্দিষ্ট চোখের ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষ করে ছয় বছরের বেশি বয়সি শিশুদের জন্য।
যদিও মায়োপিয়া সম্পূর্ণভাবে ঠিক করা যায় না। তবে এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে এর বিকাশকে ধীর করা যায়।
মনে রাখতে হবে
ডা সুরেশ বলেন, “অভিভাবকদের উচিত সন্তানের দৃষ্টিশক্তির ওপর খেয়াল রাখা। যে কোনো লক্ষণ ও উপসর্গ খুঁজে দেখা, যেন মায়োপিয়া প্রাথমিকভাবেই নির্ণয় করা যায় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এতে শিশুর সামগ্রিক সুস্থ বিকাশ অব্যাহত থাকবে।”
আরও পড়ুন
চোখ ভালো রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস