পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক মঙ্গলবার দুপুর থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
Published : 13 Jun 2023, 05:39 PM
ভাতা বাড়ানো, কয়েক মাসের বকেয়া ভাতা পরিশোধ এবং প্রাপ্য ভাতা নিয়মিত দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালরের অধীনে পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট চিকিৎসকরা।
এসব দাবিতে পাঁচ শতাধিক চিকিৎসক মঙ্গলবার দুপুর থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
সে সময় হাসপাতালের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরাও সেখানে জড়ো হন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তারা।
আন্দোলনকারীদের একজন ডা. তানভীর আমাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারা তিন দফা দাবি জানাতে উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা না বলে দরজা বন্ধ করে দেন।
“আমাদের দাবি ছিল সব ধরনের প্রাইভেট পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনিং চিকিৎসকের ভাতা ২০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে, এই ভাতা নিয়মিত প্রতি মাসে দিতে হবে এবং যাদের ভাতা বকেয়া আছে তাদের ভাতা পরিশোধ করে দিতে হবে।
“কিন্তু তিনি (উপাচার্য) আমাদের সঙ্গে কথা না বলে উনার রুমের কেচিগেট বন্ধ করে দিলেন। উনি বের হচ্ছিলেন না। পরে এখানে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের নামিয়ে দিয়েছেন। তারা এসে আমাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছে। উসকানিমূলক কথাবার্তা বলে পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করেছে।”
বিক্ষোভ চলার মধ্যেই বেলা ২টার দিকে পাঁচজন চিকিৎসকের একটি দল উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিনের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা করেন। তবে চিকিৎসকদের দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে কোনো আশ্বাস সে সময় দেওয়া হয়নি। বরং চিকিৎসকদের নানাভাবে ‘ভয়ভীতি’ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একজন হাবিবুর রহমান সোহাগ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “স্যারের (উপাচার্য) রুমে ২০ জন যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা পাঁচজন ঢোকার পর গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওই রুমে কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অন্তত ৬০ জন ছিলেন। সেখানে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, যদি কাজে ফিরে না যাই, তাহলে কোর্স আউট করা হবে। আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতে যা যা করার তা তিনি করছেন, আমরা নাকি জামায়াত-শিবির।”
“বিসিপিএস (বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস) আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে। আমাদের আশ্বস্ত করেছে, বিষয়টি ভেবে দেখবে। আমরা ১৫ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। এরপর লাগাতার কর্মবিরতিতে যাব।”
আন্দোলনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন ঝামেলা শেষ হয়ে গেছে, আমরা একটা প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে আপনাদের বিস্তারিত বলে দেব। তারা (আন্দোলনকারী চিকিৎসক) বৃত্তির পরিমাণটা বাড়াতে চায়। আমরা সে ব্যাপারে কথা বলে, সরকার যদি দেয়… যত তাড়াতাড়ি দেবে আমরা তত তাড়াতাড়ি তাদের সেটা দিয়ে দেব।”
বিকেলে উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, “যে কোনো আন্দোলনের একটা পদ্ধতি আছে। আমাকে দরখাস্ত দেবে যে, ‘স্যার, এতদিনের মধ্যে যদি না হয়, তাহলে আমরা কিন্তু আন্দোলনে যাব’। আমাকে কিছু না বলে আজকে তারা বটতলা এসে জড়ো হয়েছে।
“এর আগেই আমি কিন্তু মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি, তাদের (নন রেসিডেন্টদের) ভাতা গত ঈদের আগে আমাকে দেওয়া হয়নি। আমি মানবিক কারণে আমার ফান্ড থেকে তাদের ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। নয় মাস তাদের ভাতা বাকি আছে, সেটা আমি চেয়েছি, আশা করছি এই বাজেটে পেয়ে যাব।”