“ওয়ান হেলথ ধারণা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সবশেষ কোভিড মহামারীর সময় মানুষ দেখেছে,” বলেন তিনি।
Published : 12 Jun 2023, 08:19 PM
মানুষ, প্রাণী ও প্রকৃতির মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক রেখে সবার স্বাস্থ্য অটুট রাখার ‘ওয়ান হেলথ’ ধারণার সুফল পেতে দেশের প্রান্তিক এলাকায় কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
তিনি বলেছেন, “ওয়ান হেলথ সার্ভিস আরও শক্তিশালী করতে হবে। এটাকে প্রত্যন্ত এলাকায় মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। শুধু ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে মিটিং করে ওয়ান হেলথ সার্ভিসের লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।
“আমি আশা করি, ওয়ান হেলথের সঙ্গে জড়িত দেশ-বিদেশের সব মন্ত্রণালয়, সংস্থার মধ্যে কার্যকর সমন্বয় সাধন করতে হবে। একটি জোরালো লজিস্টিক সাপোর্ট প্রয়োজন, হাজারো সেমিনার, হাজার পরামর্শ কোনো কাজে আসবে না। এজন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।”
সোমবার ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে তিন দিনের ‘ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ কনফারেন্স’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতি দুই বছর পর পর ওয়ান হেলথ বাংলাদেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে ২০১৯ সালের পর সেই আয়োজনে ছেদ পড়েছিল।
৪ বছর বাদে এবার সম্মেলনের ১১তম আসর বসেছে, যেখানে দেশ-বিদেশের কয়েকশ চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, মৎস্য ও প্রাণিস্বাস্থ্যের চিকিৎসক এবং পরিবেশবিদরা অংশ নিচ্ছেন।
রেজাউল করিম বলেন, “ওয়ান হেলথ ধারণা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সবশেষ কোভিড মহামারীর সময় মানুষ দেখেছে। মানুষকে এটা স্বীকার করতেই হবে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে এটা প্রমাণিত- বিশ্বের অন্তত ৭০ শতাংশ সংক্রামক রোগ প্রাণীদেহ থেকে উৎপত্তি হয়, পরে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এজন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করা দরকার।
“প্রাণীর অসুস্থতা মানে শুধু তারাই নয়, প্রকারান্তরে মানুষের অসুস্থতা। এজন্য প্রাণীর চিকিৎসা শুধু তাদের জন্য নয়, মানুষের জন্যও।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশীদ আলম অনুষ্ঠানে বলেন, “মৎস্য বা প্রাণী স্বাস্থ্য, মানুষের স্বাস্থ্য কিংবা পরিবেশ-একটা আরেকটার উপর নির্ভরশীল। সবটা মিলিয়েই পৃথিবীর স্বাস্থ্য, মানুষের স্বাস্থ্য। সেই ধারণাকে ধারণ করেই আজ ওয়ান হেলথ প্ল্যাটফর্ম কাজ করছে।”
বাংলাদেশ এরইমধ্যে ওয়ান হেলথের অনেকগুলো কাজ করেছে জানিয়ে ডা. খুরশীদ বলেন, “আরও কিছু কাজ শক্তভাবে করা উচিত। সার্ভেইলেন্স এবং ওয়ান হেলথের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা স্টেকহোল্ডার তাদের মধ্যে তথ্য আদানপ্রদান ও প্রকৃত ব্যবস্থাপনা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে ইনটিগ্রেশন করা।”
স্টেকহোল্ডার, বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য, প্রাণিস্বাস্থ্য, বন্যপ্রাণী, এনভায়রনমেন্টাল হেলথের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক ডা. খুরশীদ।
“আমরা যে লক্ষ্যে পৌঁছুতে চাই, সেটা স্থির করে একটা সময় নির্ধারণ করে দেওয়া- যে সময়ের মধ্যে আমরা যেটা অর্জন করব।… আমরা আশা করব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পলিসি এবং প্রিন্সিপল আপনারা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।”
সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ‘অত্যন্ত জরুরি’ বিষয় মন্তব্য করে স্বাস্থ্যের ডিজি বলেন, “সংক্রমণের জন্য চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। রোগীকে হাসপাতালে বেশি সময় থাকতে হচ্ছে, বেড অকুপেন্সি বাড়ছে, রোগী ভুগছে, অ্যান্টিবায়োটিক একটার পর একটা দেওয়া হচ্ছে; যার ফলে খরচ বেড়ে যাচ্ছে।”
উদ্বোধনী সেশনে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট, ওয়ান হেলথ বাংলাদেশের ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেটর ডা. নিতিশ চন্দ্র দেবনাথ, আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এমদাদুল হক তালুকদার, প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা।