দেশজুড়ে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯২২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন বিভিন্ন হাসপাতালে। এসময়ে আরও মৃত্যু হয়েছে দুজনের।
শনিবার এইডিস মশাবাহী এ রোগে আক্রান্তদের নতুন তথ্য নিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হয়েছে ৩০ হাজার ২৯ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, এ সংখ্যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এবছর মৃত্যুর পরিসংখ্যানও দ্বিতীয় সর্বোচ্চের অবস্থানে পৌঁছেছে।
এর আগে ডেঙ্গু বিস্তারের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করা ২০১৯ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০২১ সালে যা ছিল ২৮ হাজার ৪২৯ জন।
আর কয়েক দিন পরপরই এক দিনে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ার তথ্য মিলছে। গত এক দিনে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ছিলেন বছরের সর্বোচ্চ। এর আগে গত বুধবার একদিনে ৯০০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুজনকে নিয়ে সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত দেশে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ১৬৪ জনের মৃত্যু হয়, যা দেশে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু। ২০২১ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১০৫ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবশেষ সংবাদ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীর মধ্যে ৫২০ জন ঢাকায় এবং ৪০২ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ঢাকার বাইরে সবচেয়ে বেশি ১২০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগে।
এছাড়া ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন জেলায় ৮৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ জন, খুলনা বিভাগে ৬১ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৫ জন, রংপুর বিভাগে ৬ জন, বরিশাল বিভাগে ৮২ জন এবং সিলেট বিভাগে দুইজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন সবশেষ ২৪ ঘণ্টায়।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৪০৪ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২ হাজার ৩২৮ জন। অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ৭৬ জন।
এ পর্যন্ত যে ১১২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৬৬ জন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং একজনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগের নরসিংদী জেলায়। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে দুইজন, খুলনা বিভাগে দুইজন এবং বরিশাল বিভাগে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
সাধারণত বর্ষায় ডেঙ্গু রোগের জীবাণুবাহী এইডিস মশার উৎপাত বাড়ে। ওই সময় এ মশার কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে। তবে এ বছর এ রোগের প্রকোপ বেড়েছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। বর্ষা পেরিয়ে দেরিতে হওয়া বৃষ্টি এইডিস মশার বিস্তারের সময়কাল বাড়িয়ে দিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, অক্টোবরের প্রথম ২২ দিনে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ হাজার ৯৩৭ জন। এ সংখ্যা যে কোনো একক মাসের চেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বরজুড়ে ৯ হাজার ৯১১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অপরদিকে মারা যাওয়া ১১২ জনের মধ্যে ৫৭ জনের প্রাণ গেছে অক্টোবরের ২২ দিনে। এর চেয়ে বেশি মৃত্যু হয় সেপ্টেম্বরে ৩৪ জনের।