করোনাভাইরাস সংক্রমণের পাশাপাশি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় এই রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসায় আলাদা হাসপাতাল নির্ধারণ করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
Published : 25 Jul 2021, 05:46 PM
রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কনভেনশন সেন্টারে নির্মাণাধীন ফিল্ড হাসপাতাল পরিদর্শনে তিনি এই কথা বলেন।
এসময় তিনি জানিয়েছেন, এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ২০০ রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এইডিস মশাবাহিত এই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিন জনের মৃত্যুর খবরও দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা হবে।
তিনি বলেন, “স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এই বিষয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই অনুযায়ী আপনারা ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নেবেন।”
জাহিদ মালেক বলেন, “একদিকে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা, আরেকদিকে ননকোভিড রোগীদের চিকিৎসা, নমুনা পরীক্ষা, টিকাদানের পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ।
“সব মিলিয়ে একসঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে। তাই আমরা আজকে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল চিহ্নিত করেছি, যেখানে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা নেব। কারণ, যেখানে করোনা রোগীর চিকিৎসা হয়, সেখানে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা আজকে বসে সেই ব্যবস্থাটুকুও করেছি।”
বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার সকাল আটটা থেকে রোববার সকাল আটটা পর্যন্ত সারাদেশে ১০৫ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছর এটাই একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত রোগী।
নতুন ভর্তি ১০৫ জন রোগীর মধ্যে ১০৪ জনই ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল ভর্তি হয়েছেন।
এ বছর এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। যাদের মধ্যে এখনও ৪২২ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ১ হাজার ১৪৯ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন।
এ বছর মোট আক্রান্তদের মধ্যে ১ হাজার ২০২ জনই জুলাই মাসের, যা মোট আক্রান্তের ৭৬ শতাংশের বেশি।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ ছিল অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। ওই বছর প্রথমবারের মত ডেঙ্গু বিস্তৃত হয় ৬৪ জেলায়।
সেসময় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায় এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৪৮ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা।
যদিও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আড়াইশ’র বেশি মানুষের এই রোগে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
২০২০ সালে মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ কিছুটা কম ছিল। মোট ১ হাজার ৪০৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন। এদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু ডেঙ্গু সন্দেহে নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হলে সাত জনের মৃত্যু এই রোগে হয়েছে বলে নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।