কোভিড-১৯ চিকিৎসা কিংবা নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন নেই, এমন হাসপাতালে রোগীদের না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
Published : 20 Jul 2020, 09:35 PM
রিজেন্ট ও সাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেকেজি হেলথ কেয়ারের নানা কাণ্ডের পর সোমবার এই পরামর্শ দেওয়া হয়।
রিজেন্ট হাসপাতাল ও জেকেজি হেলথ কেয়ার সরকারের অনুমোদন নিয়েই করোনাভাইরাসের রোগীদের চিকিৎসা এবং নমুনা সংগ্রহ করছিল। তবে তাদের জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর সেই অনুমোদন বাতিল করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত অনেক বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার সরকারের অনুমোদন, উপযুক্ত কিটস, যন্ত্রপাতি এবং দক্ষ জনবল ছাড়াই কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় প্রতারণা করছে বলে শোনা যাচ্ছে।
“মানুষ এসব বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার নামে প্রতারিত হচ্ছে এবং জীবনকে হুমকি মুখে ফেলছে।
“এমতাবস্থায় জনসাধারণকে কেবলমাত্র সরকারি হাসপাতাল ও সরকার অনুমোদিত বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে কোভিড-১৯ পরীক্ষা ও চিকিৎসা গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেওয়া যাচ্ছে।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ সংক্রান্ত তথ্য ব্যবস্থাপনা, গণযোগাযোগ ও কমিউনিটি মবিলাইজেশন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. মোস্তফা মঈন উদ্দিনের স্বাক্ষরে এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি আসে।
কেউ প্রতারণা করছে জানতে পারলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেছে অধিদপ্তর।
দুই হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা
নোংরা পরিবেশ, লাইসেন্স না থাকাসহ কয়েকটি অভিযোগে ঢাকার উত্তরার দুটি হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের সহযোগিতায় উত্তরা এলাকায় অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরেরে হাসপাতাল শাখার মেডিকেল অফিসার ডা. মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উত্তরার শিন শিন জাপান হাসপাতাল, আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতাল এবং উত্তরা লেকভিউ হাসপাতালে অভিযান সোমবার অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনটি হাসপাতালই উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত। দুটি হাসপাতালে ঢাকা মহানগর পুলিশের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালান। অন্য হাসপাতালটিতে যান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
মেহেদী হাসান বলেন, “আল আশরাফ জেনারেল হাসপাতালের কোনো লাইসেন্স ছিল না। অভিযানের সময় সেখানে হাসপাতালের কোনো কর্মী ছিল না। কোনো রোগীও ছিল না। তবে সে সময় কোনো নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে না থাকায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি।”
হাসপাতালটি বন্ধ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে চিঠি পাঠাবেন বলে জানান তিনি।
লেকভিউ হাসপাতালে ২০১৬ সালের পর লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। এজন্য তাদের পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, শিন শিন জাপান হাসপাতালে ল্যাবরেটরির পরিবেশ নোংরা এবং ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ পাওয়া গেছে।
“তাদের ল্যাবরেটরি অপূর্ণাঙ্গ, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। সেখানে ঘুমানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে যেটা অনুমোদিত না। সব মিলিয়ে ল্যাবের পরিচ্ছন্নতা সন্তোষজনক নয়। ওই হাসপাতালে একটা ফার্মেসি আছে। ফার্মেসিতে লাইসেন্সের শর্ত মানা হচ্ছিল না। ফার্মাসিস্টের রেজিস্ট্রেশন নেই। সেখানে নন ফার্মাসিউটিক্যাল আইটেম বিক্রি করছিল, যা লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ। কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে সেগুলোর উৎপাদন ও মেয়াদের তারিখ ছিল না। এ কারণে তাদের দুটি মামলায় পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”