ভেন্টিলেটরেও বাঁচানো যাচ্ছে না কোভিড-১৯ রোগীদের

নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাসপ্রশ্বাস দিতে ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হলেও যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে তাতেও রক্ষা হচ্ছে না।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2020, 08:42 PM
Updated : 23 April 2020, 08:58 PM

এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিউ ইয়র্কের সবচেয়ে বেশি কোভিড-১৯ রোগী যারা দেখভাল করছেন, সেই নর্থওয়েল হেলথের অধীনে ভেন্টিলেশনে থাকা অধিকাংশ রোগীরই মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্বে এখন নতুন করোনাভাইরাসের রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি নিউ ইয়র্ক শহরে। শহরটির আড়াই লাখের বেশি বাসিন্দা এখন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত, যা যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্তের এক-চতুর্থাংশের বেশি। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৮ লাখ।

করোনাভাইরাসে শুধু নিউ ইয়র্কেই মৃত্যু ঘটেছে ১৫ হাজারের বেশি মানুষের, যা গোটা যুক্তরাষ্ট্রের মৃতের এক-তৃতীয়াংশ। যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা ৪৬ হাজার ছাড়িয়েছে।

শুধু নিউ ইয়র্ক শহরে যত মানুষ মারা গেছে, তার চেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে শুধু ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে।

সেই নিউ ইয়র্কের নর্থওয়েল হেলথের অধীনে থাকা যে ২১ শতাংশ রোগী মারা গেছে, তাদের ৮৮ শতাংশই ভেন্টিলেশনে ছিলেন বলে জানিয়েছে সিএনএন।

নতুন করোনাভাইরাস বৈশ্বিক মহামারী রূপ নিলে সব দেশেই ভেন্টিলেটর নিয়ে ত্রাহি অবস্থা তৈরি হয়। কারণ রোগীদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় এই যন্ত্রটিরই বেশি প্রয়োজন পড়ছিল। যারা শ্বাস নিতে পারছিলেন না, এর মাধ্যমে তাদের ফুসফুসে বাতাস পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু নর্থওয়েল হেলথের প্রায় ৬ হাজার রোগীর অর্ধেকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, গুরুতর অসুস্থ এই রোগীদের বাঁচাতে ভেন্টিলেটর কোনো ভূমিকা রাখছে না।

নর্থওয়েলের গবেষকদের এই গবেষণাপত্র আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

সংস্থার চিকিৎসক সাফিয়া রিচার্ডসন সিএনএনকে বলেন, ১২ শতাংশ কোভিড-১৯ রোগীর ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়।

তারা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধৌ্য যাদের অবস্থা গুরুতর হয়, তাদের অর্ধের বেশি উচ্চ রক্তচাপের রোগী, ৪১ শতাংশের রয়েছে স্থূলতার সমস্যা, আর ৩৪ শতাংশের রয়েছে ডায়াবেটিস।

“যারা মারা গেছে, তাদের মধ্যে যারা ডায়াবেটিস, তাদেরই বেশি ভেন্টিলেটর কিংবা আইসিইউ লাগছিল,” বলা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনে।

গবেষণায় আরও দেখা গেছে, রোগীদের মধ্যে নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা বেশি। আর ১৮ বছরের নিচে কারও মৃত্যু হয়নি।

রোগের লক্ষণের ক্ষেত্রে এক-তৃতীয়াংশ জ্বরের কথা বলেছে। ১৭ শতাংশের নিঃশ্বাস ঘন হয়ে আসছিল। ৩০ শতাংশের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়েছিল।

আক্রান্তদের ১৪ শতাংশের আইসিইউ সুবিধা লেগেছিল, ৩ শতাংশের ডায়ালাইসিস করতে হয়েছিল।

নর্থওয়েল হেলথের গবেষকরা এই পর্যন্ত মৃত ও সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীদের ফাইল বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পেয়েছেন; ফলে এতে আংশিকের চিত্র ফুটে উঠেছে। সব রোগীর তথ্য বিশ্লেষণে এই এতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে তারা মনে করছেন।