‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’ দেখে বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন ভারতে নরওয়ের রাষ্টদূত; তার জবাব দিলেন রানি মুখার্জি, যিনি এই সিনেমায় নাম ভূমিকায় ছিলেন।
নরওয়েতে গিয়ে সন্তানদের নিজের কাছে পেতে বাঙালি এক নারীর লড়াইয়ের সত্য গল্প নিয়ে এই সিনেমাটি, যা রূপায়ন করেছেন আরেক বাঙালি রানি।
গত ১৭ মার্চ মুক্তি পায় ‘মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে’। এরপর রাষ্ট্রদূত হ্যান্স জেকব ফ্রাইডেনলেন্ড বলেছিলেন, সিনেমার অনেক কথাই সত্য নয়। তার দেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে এই সিনেমায়।
হিন্দুস্তান টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী রানির সেই প্রসঙ্গ ধরে বলেন, “সবারই নিজস্ব মতামত থাকতে পারে।
“এই সিনেমা কাউকে আঘাত করার জন্য বানানো হয়নি। এটা একজন মায়ের গল্প, যেটা মানুষকে জানানো প্রয়োজন ছিল। অনেকেরই তা দেখা উচিৎ। বিশ্বের এই ধরনের ঘটনাগুলো সম্পর্কে মানুষকে সচেতন হতে হবে।”
সিনেমার গল্প পুরোপুরি সত্য দাবি করে রানি বলেন, “‘এতে পরিষ্কার দেখানো হয়েছে যে, সাধারণ মানুষরা এর জন্য দায়ী নয়। বরং তারা যারা ক্ষমতাবান হয়ে তার অপব্যবহার করেছেন।
“সবাই নিজেদের দেশ নিয়ে আবেগপ্রবণ, তাই তারা দেশের ভাবমূর্তিকে রক্ষা করতেই চাইবেন। কিন্তু একজন ভারতীয় হিসাবে আমি কী বুঝব, যখন আমার দেশের সরকার এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিল? যদি সাজানো ঘটনাই হত, তা হলে কী সরকার জড়িয়ে পড়ত?”
অসীমা ছিব্বা নির্মিত এ সিনেমা সাগরিকা ভট্টাচার্যের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে। সিনেমায় দেখান হয়, দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর সঙ্গে নরওয়েতে পাড়ি জমান কলকাতার ওই সাধারণ গৃহবধূ, সবকিছু চলছিল ঠিকঠাকভাবে, তবে একদিন বিপত্তি বাধায় সেখানকার আইন।
সন্তানদের ঠিকমতো দেখভাল করতে পারছেন না- এমন অভিযোগে নরওয়ের শিশু সুরক্ষা সেবা বিভাগ ছিনিয়ে নেয় তার দুই সন্তানকে। এরপর সন্তানদের ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে আদালতে ছোটেন মা, কঠোর নিয়মের বিরুদ্ধে একাই চালিয়ে যান রুদ্ধশ্বাস লড়াই, ভুল বোঝাবুঝি হয় তার স্বামীর সঙ্গেও।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সাগরিকা আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেছিলেন, “আমি নরওয়ের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যে আপত্তি জানাচ্ছি। এত বছর পরও নরওয়ে সরকার আমার কাছে ক্ষমা পর্যন্ত চায়নি। তারা আমার জীবন নষ্ট করেছে, আমার সম্মান নষ্ট করেছে। আমার সন্তানরা এখনও ওই ঘটনার স্মৃতি বয়ে বেড়াচ্ছে। ওই সময় শুধু ভারত সরকারই আমাকে সাহায্য করেছিল।”