আলিয়ার কাছে ২০২২ ছিল ‘সিনেমার মত’

বিয়ে ও সন্তান ক্যারিয়ারে কী পরিবর্তন আনল, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতেও রাজি নন আলিয়া। তার বিশ্বাস, কাজকে ভালোবাসলে, কাজ নিজে থেকেই তার কাছে আসবে।

গ্লিটজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Jan 2023, 10:17 AM
Updated : 1 Jan 2023, 10:17 AM

ফেলে আসা বছরটি ‘সিনেমার’ মত মনে হয় বলিউড অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের কাছে। ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ এ বছরটিতে বিয়ে করা আর সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তই ছিল তার বিচারে ‘সেরা’।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার সাথে আলাপচারিতায় নিজস্ব এ উপলব্ধির কথা তুলে ধরেছেন কাপুর পরিবারের পুত্রবধূ। ইংরেজি বছরের প্রথম দিন জানা গেল, নিজেকে কখনোই বেশি সুখী ভেবে আত্মতৃপ্তিকে ভোগেন না আলিয়া। নিজেকে ‘পরিপূর্ণ’ও বলে মনে করেন না, বরং একজন অভিনয় শিল্পী হিসেবে তিনি ‘আত্মবিশ্বাসী’। 

২০১৮ সাল থেকে রণবীর কাপুরে সাথে আলিয়ার বন্ধুত্ব, সেই থেকে প্রেম। চলতি বছরের এপ্রিলেই বিয়ে সারেন আলোচিত এই জুটি। আর গত ৬ নভেম্বর কন্যা সন্তানের মা-বাবা হনবলিউডের এই তারকা দম্পতি।

আলিয়াকে এ বছর সঞ্জয় লীলা বনসালির ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ এবং অয়ন মুখার্জির ‘ব্রহ্মাস্ত্র: পার্ট ওয়ান – শিবাতে’ সিনেমায় দেখা গেছে। ‘গাঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’ সিনেমায় যৌনকর্মী গাঙ্গুবাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করে আলোচিত হন আলিয়া। এছাড়া তিনি ‘ডার্লিংস’এ প্রযোজনা এবং অভিনয়ও করেছেন, যা নেটফ্লিক্সে বেশ ভালো চলেছে।

বিয়ে ও সন্তান ক্যারিয়ারে কী পরিবর্তন আনল, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাতেও রাজি নন আলিয়া। তার বিশ্বাস, কাজকে ভালোবাসলে, কাজ নিজে থেকেই তার কাছে আসবে।

Also Read: নতুন মায়েদের জন্য আলিয়ার পরামর্শ

Also Read: আলিয়া-রণবীরের কোলে এল কন্যা সন্তান

Also Read: সি সেকশন এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন আলিয়া

টাইমস অব ইন্ডিয়া: বলা যায় ২০২২ সালটি ছিল আলিয়া ভাটের। ইন্ড্রাস্ট্রিকে চারটি সিনেমা দিয়েছেন, প্রযোজক-উদ্যোক্তা হয়েও আত্মপ্রকাশ করেছেন। এবং প্রেমিক রণবীর কাপুরকে বিয়ে করে সন্তানের মা হয়েছেন। বছরটি কি স্বপ্নের চেয়েও কম কিছু?

আলিয়া ভাট: ব্যক্তিগত-পেশাগত দুইদিক থেকেই ভালো একটি অবস্থান থেকে বছরটা শুরু হয়। আমার জীবনে আমার নিয়ন্ত্রণ করার মত কিছু ছিল না, মনে হয়েছে প্রতিটি ধাপই ‘পরাবাস্তব’। ২০২২ সাল যেভাবে আমার কাছে এসেছে, ঠিক একটি সিনেমার মত। এ বছরে মুক্তি পাওয়া গাঙ্গু্বাই কাথিয়াবাড়ি, ব্রক্ষ্মাস্ত্র বা আরআরআর- যে সিনেমার কথাই বলি না কেন, এগুলো অনেক বছরের কাজের ফসল।

এ কথা সবাই জানে যে আশার সঙ্গে আশাভঙ্গেরও সম্ভাবনা থাকে। সব ঠিকঠাক না থাকলে হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যেতে পারে। সেই ধাক্কা সামলাতে নিজেকে প্রস্তুত করারও সময় পাওয়া যায় না সবসময়। একজন অভিনেতা হয়ত তার সেরাটা দিতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সবকিছু দর্শকের হাতে।

আমি সৌভাগ্যবান, আমার সিনেমাগুলো শুধু প্রশংসিতই হয়নি, কাজগুলো দিয়ে দর্শকদের সঙ্গে আলোচনাও তৈরি হয়েছে, যা আমার জন্য বড় ব্যাপার এবং আমি কৃতজ্ঞ। দিন শেষে অভিনেতার ক্যারিয়ার একটি রিপোর্ট কার্ড। আমার রিপোর্ট কার্ডে সুন্দরভাবে আমি ‘টিক’ চিহ্ন পেয়েছি। চ্যালেঞ্জ একটাই, সেটা হল, ভালো নম্বর পেতে হবে। ভালো না করলে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

Also Read: আলিয়া-রণবীরের ঘরে আসছে নতুন অতিথি

Also Read: গর্ভকালেও দারুণ ব্যস্ত আলিয়া, বললেন ‘কাজেই শান্তি’

Also Read: আলিয়ার সাধের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রিত শুধুই মেয়েরা

তাহলে বলতে চান আপনার রিপোর্ট কার্ডটি আপনার ক্যারিয়ারের পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করবে?

হ্যাঁ, ভালো ফল করলে ব্যাপারটা দুর্দান্ত, কম নম্বর পেলে কিছুই ঠিক থাকবে না। আমার ২০২২ সাল ভালো গেছে, কিন্ত সামনে নতুন বছর অপেক্ষা করছে। নিজেকে ধাক্কা দিয়ে চালিয়ে নিতে হবে, প্রচুর কাজ করতে হবে, পরিশ্রমতো করতেই হবে। সাফল্যকে সবসময় মাথায় রাখা যাবে না। কিন্তু কৃতজ্ঞ থাকতে হবে।

আপনার ভেতরের মানুষটা যেমন, তেমন মানুষ হওয়ার জন্য আপনার অনুপ্রেরণা কী?

জীবনে ‘সঠিক’ বা ‘ভুল’ বলে কিছু নাই। আমার জন্য কার্যকর সেটা, অন্যের জন্য নাও হতে পারে। আমি সব সময় আমার মনের কথা শুনে চলেছি। আমার মনে হয়, জীবন নিয়ে পরিকল্পনা করে লাভ নেই, কারণ জীবন নিজেই তার পরিকল্পনা করে, আমাদের কেবল জীবনের দেখানো পথে চলতে হয়।

হ্যাঁ, আমি আমার ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিয়ে করার এবং সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ কেউ বলে যে মাতৃত্ব আমার কাজের ধারাতে পরিবর্তন এনে দেবে? যদি সেটা হয়েও তাকে, সেটি নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না। বিয়ে-সন্তান নিয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে আমার মনে কোনো খচখচানি নেই। এগুলো জীবনের স্বাভাবিক ঘটনা। বিয়ে করা এবং সন্তান নেওয়া আমার সেরা সিদ্ধান্ত।

Also Read: রণবীর-আলিয়া: সিনেমার আগেই জীবনে জুটি

Also Read: মাতৃত্ব যে পরিবর্তন এনেছে আলিয়ার জীবনে

একজন মা হিসেবে আমার প্রতিটি মুহূর্ত অর্থবহ। এছাড়া আমার অভিনয় জীবনের প্রতিও আমার বিশ্বাস আছে। আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন এবং সত্যিকারে ভালো অভিনেতা হন, মানুষজন যদি আপনার সঙ্গে কাজ করতে পছন্দ করে, তাহলে কাজ আপনার কাছে নিজে থেকেই আসবে। আর যদি কাজ না আসে, তো তাই হোক। মোট কথা আমি আমার কাজকে মূল্য দেই, কিন্তু কাজের বাইরের জীবনকে বেশি মূল্য দেই। কাজ ও জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে চাই।

মাতৃত্ব কি জীবনের প্রতি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিয়েছে?

সম্পূর্ণ। আমি মানুষটি সেই আগের আলিয়াই আছি, কিন্তু আমার সব কিছু বদলে গেছে। কারণ মাতৃত্ব জীবনে সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা নিয়ে আসে। জীবনে ‘অগ্রাধিকার’ ও ‘দায়িত্ব’ একসাথে নতুন অর্থ নিয়ে আসে। মন ও মনন আগের চেয়ে প্রসারিত হয়।