‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ ১০ সিনেমা হলে

আগামী শুক্রবার মুক্তি পাবে প্রদীপ ঘোষ নির্মিত সিনেমাটি, যাতে প্রীতিলতাকে রূপায়ন করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা।

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Feb 2023, 06:08 PM
Updated : 1 Feb 2023, 06:08 PM

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মুক্তি সংগ্রামী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জীবনের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ মুক্তি পাচ্ছে ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারিতে।

আগামী শুক্রবার সিনেপ্লেক্সসহ দেশের ১০টি সিনেমা হলে মুক্তি পাবে বলে জানিয়েছেন নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের উপন্যাস ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ অবলম্বনে সরকারি অনুদানে নির্মিত সিনেমাটিতে প্রীতিলতার চরিত্রে অভিনয় করছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা এবং বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের চরিত্রে অভিনয় করছেন মনোজ প্রামাণিক। মাস্টারদা সূর্যসেন চরিত্রে অভিনয় করছেন কামরুজ্জামান তাপু। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাপ্পা মজুমদার।

মুক্তি উপলক্ষে বুধবার বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো। এতে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. সাজ্জাদ হোসেন, ড. বিশ্বজিৎ চন্দ্র, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্তসহ সিনেমার শিল্পী ও কলাকুশলীরা।

সিনেমাটির মুক্তি নিয়ে প্রদীপ ঘোষ গ্লিটজকে বলেন, “আমরা প্রথমে সবগুলো মাল্টিপ্লেক্সের পাশাপাশি প্রযুক্তির দিক দিয়ে উন্নত হলগুলোতে মুক্তি দিচ্ছি। কেননা সিনেমার সাউন্ডসহ অন্যান্য দিক দিয়ে যথাযত ফিল পেতে হলে উন্নত প্রযুক্তিতে দেখতে হবে।

“তাছাড়া আমাদের প্রাথমিক টার্গেট শিক্ষার্থীরা। প্রীতলতার দেশপ্রেম ও চিন্তা-চেতনা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই। এজন্য হাতে গোনা কয়েকটি হলে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা।”

ছবিটির নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রদীপ বলেন, “আমি চেয়েছিলাম চট্টগ্রামের আন্দোলন নিয়ে সিনেমা বানাতে। যেখানে মাস্টার দ্য সূর্যসেন, প্রীতিলতাসহ অন্যান্য বিপ্লবীদের সংগ্রাম তুলে ধরা হবে।

“তখন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আমাকে বললেন, ‘সূর্যসেনকে নিয়ে ভারতে সিনেমা হয়েছে। কিন্তু প্রীতিলতাকে নিয়ে আলাদাভাবে কোনো কাজ হয়নি’। তিনি আমাকে বিপ্লবী এই নারীকে নিয়ে কাজ করতে উৎসাহ দিলেন।”

নির্মাতা বলেন, “এরপর প্রীতিলতাকে নিয়ে পড়তে গিয়ে দেখলাম, তিনি দুঃসাহসী এক নারী ছিলেন। লম্বা চুল হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছোট চুলের মতো ভাঁজ করে চুল বাঁধতেন। কারণ হলো, তিনি চুলের খোপার ভেতর পিস্তল অথবা কার্তুজ লুকিয়ে রাখতেন। তখন মনে হয়েছে প্রীতিলতাকে নিয়েই সিনেমা বানাতে হবে আমার।”

তবে এই সিনেমা নির্মাণে নানা চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে জানিয়ে বলেন, “সেলিনা হোসেনের উপন্যাসে প্রীতিলতার যেটুকু ঘটনা এসেছে তা পর্যাপ্ত বলে মনে হয়নি। এরজন্য প্রচুর পড়তে হয়েছে। বলা যায় প্রীতিলতার উপর পিএইচডি হয়ে গেছে।

“তবে প্রীতিলতার একক ও আসল ছবি পাওয়া যায়নি। যে ছবিটা আমরা দেখি, সেটি একজন বিপ্লবীর জেলে বসে আঁকা ছবির স্টুডিও ভার্সন। কলেজের যে ছবি পাওয়া যায়, তাতে ডিটেইলিং নেই। ফলে প্রীতিলতাকে জানতে অনেক বেশি খাটতে হয়েছে।”

প্রীতিলতা হয়ে উঠতে খাটতে হয়েছে অভিনেত্রী তিশাকেও। তিনি গ্লিটজকে বলেন, “এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করতে পারা যেকোনো অভিনেত্রীর জন্য সম্মানের বিষয়। আমাকে যখন এই চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয় আমি দুইবার চিন্তা করিনি। বলেছিলাম, অবশ্যই আমি করব। ইতিহাস নির্ভর যেকোনো কাজ করতে আমার ভালো লাগে। আর সেটি যদি নাম ভূমিকায় হলে তাহলে ভালো লাগা তো আরও বেড়ে যায়।”

তিনি বলেন, “যেহেতু প্রীতিলতাকে নিয়ে কোনো ভিডিও ডকুমেন্ট আমাদের কাছে ছিল না, তাই প্রীতিলতাকে ধারণ করা চ্যালেঞ্জের ছিল। বই পড়ে চরিত্রগুলো আমাদের সবার ধারণ করতে হয়েছে। কতটুকু পেরেছি সেটি দর্শক ভালো বলতে পারবে। তবে আমরা আমাদের তরফ থেকে শতভাগ চেষ্টা করেছি।”

১৯৩২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেনের নির্দেশে প্রীতিলতা হামলা করেছিলেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে ইউরোপিয়ান ক্লাবে। ২৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে হামলা শেষে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হন তিনি, পরে পটাশিয়াম সায়ানাইড খেয়ে আত্মাহুতি দেন।