শুক্রবার জুমার নামাজের পর বনানী কবরস্থানের পাশে গুলশান কমিউনিটি মসজিদে তার কুলখানি হবে।
Published : 30 Jul 2024, 07:07 PM
বাবা সংগীতজ্ঞ কমল দাশগুপ্তের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ব্যান্ডতারকা শাফিন আহমেদ।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বনানী কবরস্থানে বাবার কবরে তাকে সমাহিত করা হয়।
এ সময় শাফিনের ভাই হামিন আহমেদসহ পরিবারের সদস্য ও স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
শাফিন আহমেদের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, প্রয়াত এই শিল্পীর আত্মার মাগফিরাত কামনায় আগামী শুক্রবার জুমার নামাজের পর বনানী কবরস্থানের পাশে গুলশান কমিউনিটি মসজিদে তার কুলখানি হবে।
মাইলস ব্যান্ডের অন্যতম ভোকালিস্ট শাফিন আহমেদ ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে গত ২৫ জুলাই মারা যান। গত ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা ছিল শাফিন আহমেদের। কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তাকে ফেরানো যায়নি।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকায় আসে শাফিনের মরদেহ। এর আগে ভার্জিনিয়ার দার আল নুর ইসলামিক কমিউনিটি মসজিদে শুক্রবার তার প্রথম জানাজা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানের আজাদ মসজিদে হয় শাফিনের দ্বিতীয় জানাজা। এ সময় তাকে শেষ বিদায় জানাতে হাজির হন সহকর্মী ও স্বজনেরা। উপস্থিত ছিলেন ব্যান্ডশিল্পী মাকসুদ, নকীব খান, ফোয়াদ নাসের বাবু, শেখ মনিরুল আলম টিপু, সাঈদ হাসান টিপু, গীতিকার-সুরকার প্রিন্স মাহমুদ, আসিফ ইকবাল, লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবির বকুল, সংগীত পরিচালক শওকত আলী ইমন, সঙ্গীতশিল্পী জয় শাহরিয়ারসহ অনেকে।
বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনের দুই মহারথী সংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম এবং সুরকার কমল দাশগুপ্তের ছেলে শাফিন নিজে ছিলেন বেইজ গিটারিস্ট, সুরকার এবং গায়ক। ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম।
শাফিন আহমেদকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে, তার পাশেই চিরনিদ্রায় শুয়ে আছেন শাফিনের মা কিংবদন্তি নজরুল সঙ্গীতশিল্পী ফিরোজা বেগম।
বড় ভাই হামিন আহমেদসহ ইংল্যান্ডে পড়তে গিয়ে পশ্চিমের সংগীতের সঙ্গে সখ্য হয় শাফিনের। শুরু হয় তার ব্যান্ড সংগীতের যাত্রা।
পরে ফরিদ রশিদের হাত ধরে ১৯৭৯ সালে তারা গড়ে তোলেন ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। প্রথম কয়েক বছর তারা বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে ইংরেজি গান গাইতেন। এরমধ্যেই প্রকাশিত হয় দু’টি ইংরেজি গানের অ্যালবাম ‘মাইলস’ ও ‘এ স্টেপ ফারদার’। পরে মাইলসের বাংলা গানের প্রথম অ্যালবাম ‘প্রতিশ্রুতি’ বের হয় ১৯৯১ সালে।
ওই অ্যালবামের জনপ্রিয়তার পর বিটিভিতে বিভিন্ন গানের অনুষ্ঠানে দেখা যেতে থাকে মাইলসকে। ধীরে ধীরে মাইলস দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ডদলে পরিণত হয়।
মাইলসের জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘গুঞ্জন শুনি’, ‘সে কোন দরদিয়া’, ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘ধিকি ধিকি’, ‘পাহাড়ি মেয়ে’, ‘নীলা’, ‘কি যাদু’, ‘কতকাল খুঁজব তোমায়’, ‘হৃদয়হীনা’, ‘স্বপ্নভঙ্গ’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘শেষ ঠিকানা’, ‘পিয়াসী মন’, ‘বলব না তোমাকে’, ‘জাতীয় সঙ্গীতের দ্বিতীয় লাইন’ ও ‘প্রিয়তমা মেঘ’।
মাইলস থেকে বেরিয়ে পরে শাফিন আহমেদ গড়ে তোলেন ‘ভয়েস অব মাইলস’ নামের ব্যান্ড।