হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার আবারও অবনতি ঘটেছে।
Published : 15 Nov 2020, 10:35 AM
পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত এই অভিনেতা গত ৬ অক্টোবর থেকে কলকাতার বেল ভিউ ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। কিন্তু চিকিৎসকরা এখন আর সেভাবে আশা দিতে পারছেন না বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
হাসপাতালের একজন চিকিৎসককে উদ্ধৃত করে হিন্দুস্থান টাইমস লিখেছে, চিকিৎসায় এখন আর সাড়া দিচ্ছে না সৌমিত্রর দেহ।
“এখান থেকে ভালো কিছু ঘটার সম্ভাবনা খুব কম। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছি, এখন কেবল অলৌকিক কিছুই পারে তাকে এ অবস্থা থেকে ফিরিয়ে আনতে।”
করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় গত মাসে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ৮৫ বছর বয়সী সৌমিত্রকে। প্রায় দশ দিন চিকিৎসার পর ১৬ অক্টোবর তার করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে, শরীরিক অবস্থারও কিছুটা উন্নতি হয়।
কিন্তু অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতা থাকায় তার অবস্থার আবার অবনতি হতে শুরু করে। প্রস্টেটের পুরনো ক্যান্সারও আবার ফিরে আসে, সেই সঙ্গে ছিল শ্বাসতন্ত্রের পুরনো সমস্যা।
তিন দিন আগে সৌমিত্রর শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার করেছিলেন চিকিৎসকরা। এর মাঝেই শুক্রবার থেকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।
সত্যজিত রায়ের অপু ও ফেলুদা চরিত্রের রূপায়ন করে চলচ্চিত্র সমালোচকদের মনে স্থায়ী আসন নিয়ে আছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অনেকে তাকে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম সেরা অভিনেতা হিসেবে বিবেচনা করেন।
সত্যজিতের ৩৪টি সিনেমার মধ্যে ১৪টিতেই তিনি অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন মৃণাল সেন, অজয় করের মত পরিচালকদের সঙ্গেও।
১৯৫৯ সালে সত্যজিৎ রায়ের হাত ধরে ‘অপুর সংসার’-এ প্রবেশের পর অক্লান্তভাবে অসংখ্য বাংলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গেছেন সৌমিত্র। পাশাপাশি বহু নাটকেও অভিনয় করেছেন; লিখেছেন গান ও নাটক, এই বয়সেও আবৃত্তি করেন প্রায়ই।
চলচ্চিত্রে ভারতের সর্বোচ্চ সম্মাননা দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার ছাড়াও ফ্রান্স সরকারের ‘লিজিয়ন অব দ্য অনার’ পদকে ভূষিত হয়েছেন এই অভিনেতা। ২০০৪ সালে তাকে ‘পদ্মভূষণ’ খেতাবে ভূষিত করে ভারত সরকার।