চলচ্চিত্রের ‘স্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগে চলচ্চিত্র থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বয়কট’ হওয়ার পর সমঝোতার আশায় থাকার কথা বলছেন খলঅভিনেতা মিশা সওদাগর; সমঝোতার পথ সবসময় খোলা আছে বলে জানিয়েছে চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনের জোট।
Published : 16 Jul 2020, 04:00 PM
বুধবার দুপুরে এফডিসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানকে বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠন।
এ বিষয়ে জায়েদ খানের কোনও বক্তব্য পাওয়া না গেলেও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি মিশা বলছেন, শিগগিরই এ সঙ্কটের সুরাহা হবে বলে আশা করছেন তিনি।
বুধবার রাতে মিশা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি চাই, একে অপরকে বয়কট না করে ছবি করি। ব্যক্তি স্বার্থে চলচ্চিত্রকে ব্যবহার করে চলচ্চিত্রের অবস্থা আরও খারাপ না করি।
“আমাদের মিলেমিশে কাজ করা উচিত। আমি সমঝোতার পক্ষে। প্রডিউসার, ডিরেক্টরদের নিয়ে কথা বললে আমার গায়েই লাগবে।”
মিশার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক জিজ্ঞাসায় চলচ্চিত্রের ১৮ সংগঠনের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন বলছেন, মিশার জন্য সমঝোতার পথ সবসময় খোলা থাকবে।
কিন্তু সমাধানটা তিনি কীভাবে করবেন, সেটা পরিস্থিতিই বলে দেবে বলে মনে করছেন খোকন।
চলচ্চিত্র নীতিমালার বিরোধিতা করা, পরিচালক বদিউল আলম খোকনের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ানোসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে মিশাকে চারমাস আগে বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮ সংগঠন; বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে তার ঘোষণার দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাখ্যায় মিশা বলেন, নীতিমালায় শিল্পীদের জন্য ‘কনভেন্স’ বন্ধ করা হয়েছে। শিল্পীদের অনেকে কনভেন্সের উপর নির্ভর করে চলে। সমিতির সদস্যদের দাবির প্রেক্ষিতে সমিতির সভাপতি হিসেবে ‘কনভেন্স’ দেওয়ার কথা বলেছি সংগঠনগুলোর নেতাদের।
আর এফডিসির মেকআপ রুমে পরিচালক খোকনের সঙ্গে তার বিতণ্ডার ঘটনাকে ‘দুই বন্ধুর ব্যক্তিগত বিষয়’ বলে দাবি করেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী মিশা।
তবে বিতণ্ডার ঘটনার জেরে ১৮ সংগঠনের তরফ থেকে তাকে কারণ দর্শানো নোটিস পাঠানো হলেও তার জবাব দেননি মিশা। উল্টা পরিচালক খোকনকে শিল্পী সমিতি থেকে বয়কট করা হয়। তার সঙ্গে শিল্পী সমিতির কোনো সদস্য কাজ করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মিশা-জায়েদ খানরা; পরে তার প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে বিভেদ ভুলে একসঙ্গে কাজের আশাবাদ ব্যক্ত করে মিশা বললেন, “প্রযোজকরা আমাদের বাবার মতো, পরিচালকরা মায়ের মতো। আমরা ভুল করলে সেটা তাদের বিবেচনার মধ্যে থাকবে। এখানে ঝগড়ার কিছু নাই। মারামারিরও কিছু নাই। আশা করছি, সব ঠিক হয়ে যাবে।”
তবে ‘বয়কট’ হওয়ার পর ১৮ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মিশা-জায়েদের যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে তাতে সমঝোতায় আরও খানিকটা সময় লাগবে বলে মনে করছেন এফডিসির শীর্ষস্থানীয় এক সংগঠনের নেতা।
সমঝোতা কীভাবে সম্ভব?-এমন প্রশ্নের জবাবে পরিচালক সমিতির মহাসচিব খোকন বলেন, “তারা যদি এসে সুন্দর করে বলতে পারে তাহলে সমাধান হবে না কেন। আমরা তো সিনেমারই মানুষ। আর এমন কিছু নাই যে, জীবনেও আর মীমাংসা হবে না।”
এর আগে ২০১৭ সালের এপ্রিলে চলচ্চিত্রের শীর্ষনায়ক শাকিব খানকে নিষিদ্ধ করেছিল চলচ্চিত্র পরিবার।
পরে চলচ্চিত্র পরিবারের সঙ্গে সমঝোতার পর সেপ্টেম্বরের দিকে তার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।