মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে গণহত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন অভিনয়শিল্পীরা। ইতিমধ্যে মানববন্ধনও করেছেন চলচ্চিত্র পরিবার। এবার রোহিঙ্গাদের পক্ষে দাঁড়ালেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী দিলারা জামান।
Published : 19 Sep 2017, 06:24 PM
শুটিংয়ে কিংবা অবসরে, ঘণ্টায় ঘণ্টায় টিভির সামনে বসছেন তিনি। রোহিঙ্গাদের খবর দেখতেই এই আগ্রহ তার। রোহিঙ্গাদের দুর্দশার খবরগুলো দেখে আঁতকে উঠেন। মনের অজান্তেই চোখে জল ছলছলিয়ে উঠে। মোটা ফ্রেমের চশমাটা খুলে নীরবে চোখের জল ফেলেন। আর প্রার্থনা করেন রোহিঙ্গাদের জন্য।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে বুকে চেপে রাখা খানিকটা কষ্ট ভাগ করলেন গ্লিটজের সঙ্গে, “বুক ফেটে কান্না আসছে। ছোটবেলায় ইতিহাসে পড়তাম আইয়ামে জাহেলিয়ার কথা, ওই যুগটাই যেন ফিরে এসেছে।
ওদের সহায়তার জন্য ত্রাণ আসছে। কিন্তু ত্রাণ দেওয়ার সময় হাজার হাজার মানুষ। একটা ট্রাক গেলে কয়েক হাজার লোক জড়ো হচ্ছে। ওরা কী খাবে, কী করবে। কিছুই বুঝতে পারি না।”
তিনি বললেন, “আমি প্র্যাকটিসিং মুসলিম। কিন্তু এটা মানি, সবার আগে মানুষ। তারপর আমার ধর্ম। পৃথিবীর সব ধর্মের মূলকথা কিন্তু এক। মানুষকে ভালোবাসবে, কাউকে কষ্ট দেবে না, সত্য কথা বলবে। মূলকথা সব ধর্মে একই।
রোহিঙ্গাদের উপর চলা নির্যাতনের ভয়াবহতাও তুলে আনলেন আলাপচারিতায়, “মানুষগুলো কষ্ট করে নদী পার হয়ে আসছে। অনেকে পানিতে ডুবেও যাচ্ছে। খবরে দেখলাম একজন মহিলা বলেছে, দু’টো বাচ্চাকে পানিতে সে ফেলে দিয়েছে। সেখানে আরো লাশ আছে। কুকুর, বিড়াল খাচ্ছে টেনেটুনে। কী নির্মম!”
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট দিলারা জামানা। বললেন, “আমরাও তো বিশাল একটা শক্তির দেশ না। তবুও আমরা তাদের দূরে ঠেলে দিইনি। কষ্টের পরও আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি। যেভাবে হোক সাহায্যের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে সবাই।”
তবে রোহিঙ্গা সংকটের সহসাই কোনো সুরাহা দেখছেন না তিনি। বললেন, “আন্তর্জাতিক পলিটিক্সও আছে এর মধ্যে। মনে হয় না ওরা দেশে ফিরতে পারবে। সু চি-র তো সামরিক সরকারের উপর তেমন কোনো প্রভাব নেই। মনে হয় না সে কিছু করতে পারবে। কোনো সমাধান দেখছি না।”