আজীবন সম্মাননা পেলেন এ জে মিন্টু, সোহেল রানা, কাজী হায়াৎ ও আলমগীর
Published : 13 May 2024, 04:56 PM
প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মত দেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের হাতে সেরা কাজের পুরস্কার তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।
কয়েকজন অভিনয় শিল্পী ও পরিচালককেও আজীবন সম্মাননা জানিয়েছে এ সংগঠন।
রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শনিবার এক আয়োজনে ‘স্বপ্নধরা বিএফডিএ অ্যাওয়ার্ড ২০২২-২৩’ শিরোনামে এই পুরস্কার ও সম্মাননা দেওয়া হয়।
এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন সিনেমা পরিচালক এ জে মিন্টু, কাজী হায়াৎ, চিত্রনায়ক সোহেল রানা এবং এম এ আলমগীর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যপ্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি কাজী হায়াতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস)-এর সভাপতি রাজু আলীম ও সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ সহ শোবিজ তারকারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
পরিচালক এ জে মিন্টু বলেন, “গত ২৬ বছর ধরে আমি পরিচালনায় নেই। আমি একজন চলচ্চিত্রের মানুষ সেটিই ভুলতে বসেছিলাম। তবে এ সম্মাননা পেয়ে মনে হচ্ছে যে, আমি একজন চলচ্চিত্রের মানুষ।”
“চলচ্চিত্র আমার প্রেরণা ও বেঁচে থাকা” মন্তব্য করে আপ্লুত কাজী হায়াৎ বলেন, “১৯৭৪ থেকে ২০২৪, প্রায় ৫০ বছর। তবে কি আমার বিদায়? আমি বিদায় চাই না। আমি চলচ্চিত্র থেকে বিদায় নিতে চাই না। আমি মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত চলচ্চিত্রের মানুষ হয়ে বাঁচতে চাই। আজীবন সম্মাননা পাওয়াতে মনে হচ্ছে আমার বিদায়।“
সোহেল রানা বলেন, “বলার অনেক কিছু ছিল। কিন্তু আজ আর বলব না। কারণ, বলার ইচ্ছেটা অনেকটা মিলিয়ে গেছে। সুন্দর একটি আয়োজন করায় সবাইকে ধন্যবাদ। এটার যেন হঠাৎ করে মৃত্যু না হয়। বাংলাদেশ তৈরি হওয়ার আগেই বাংলা সিনেমা তৈরি হয়েছে।“
সবাইকে চলচ্চিত্রের সঙ্গে থাকার অনুরোধ জানান এই অভিনেতা।
আলমগীর বলেন, “সত্যিকার অর্থে আমি ততটা মেধাবী শিল্পী নই। তবে একজন ভাগ্যবান শিল্পী। আমি খুব বড় বড় পরিচালকদের সাথে কাজ করেছি।…আজ তাদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।“
পরিচালক সমিতির মহাসচিব শাহীন সুমন বলেন, “পৃথিবীর যে কোনো দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার শক্তিশালী গণমাধ্যম হচ্ছে সেই দেশের চলচ্চিত্র। নতুন প্রজন্ম তার শেকড়ের গন্ধ খুঁজে পায় সেই দেশের চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি আয়োজনের স্বপ্ন দেখেছিলাম। অবশেষে সুন্দরভাবে শেষ করতে পারায় সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।“
অনুষ্ঠানে গান পরিবেশনা করেন কোনাল-বালাম ও কনা-ইমরান। আর নাচে আঁচল-শিপন মিত্র, মাহিয়া মাহি-জয় চৌধুরী, নিরব-পরীমণি-ইমন, মেহজাবীন চৌধুরী, জিয়াউল রোশান-মন্দিরাসহ আরো অনেক শিল্পীকে পাওয়া যায়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্বপ্নধরার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ উর রশিদ এবং এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ-এর চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান।
জয়ীদের সংক্ষিপ্ত তালিকা
২০২২ সালের সেরা
চলচ্চিত্র: পরাণ
পরিচালক: রায়হান রাফী (পরাণ)
অভিনেতা: শরিফুল রাজ (পরাণ)
অভিনেত্রী: বিদ্যা সিনহা মিম (পরাণ)
চিত্রনাট্যকার: মাহমুদ দিদার (বিউটি সার্কাস)
সংগীতশিল্পী (পুরুষ): অয়ন চাকলাদার (চল নিরালায়, পরাণ)
সংগীতশিল্পী (নারী): দিলশাদ নাহার কনা (তার হাওয়াতে, অপারেশন সুন্দরবন)
সংগীত পরিচালক: ইমন সাহা
গীতিকার: জনি হক
২০২৩ সালের সেরা
চলচ্চিত্র: প্রিয়তমা
পরিচালক: হিমেল আশরাফ (প্রিয়তমা)
অভিনেতা: শাকিব খান (প্রিয়তমা)
অভিনেত্রী: শবনম বুবলী (প্রহেলিকা)
চিত্রনাট্যকার: হৃদি হক (১৯৭১ সেই সব দিন)
সংগীতশিল্পী (পুরুষ): বালাম (প্রিয়তমা)
সংগীতশিল্পী (নারী): কোনাল (প্রিয়তমা)
সংগীত পরিচালক: প্রিন্স মাহমুদ
গীতিকার: সোমেশ্বর অলি
ওয়েব ফিল্ম ২০২২
চলচ্চিত্র: টান
পরিচালক: রায়হান রাফী (টান)
অভিনেতা: সিয়াম আহমেদ (টান)
অভিনেত্রী: মেহজাবীন চৌধুরী (রেডরাম)
ওয়েব ফিল্ম ২০২৩
চলচ্চিত্র: বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি
পরিচালক: শিহাব শাহীন (বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি)
অভিনেতা: জোভান (পরী)
অভিনেত্রী: তাসনিয়া ফারিণ (বাবা সামওয়ান ইজ ফলোয়িং মি)