“সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি কাম্য ছিল না,” বলেন সালাউদ্দিন লাভলু।
Published : 18 Oct 2023, 12:31 AM
মারামারির কারণে বন্ধ হওয়া ‘সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগ’ মাঠে গড়িয়েছে ঠিকই; তবে অব্যবস্থাপনায় অনেকটাই প্রাণহীন দেখা গেছে বিনোদন তারকাদের খেলার এ আসর।
খেলার সূচি অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনাল ম্যাচ হওয়ার কথা থাকলেও রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেমিফাইনালই শেষ করতে পারেননি আয়োজকরা।
এর আগে সকালে নির্ধারিত ম্যাচ খেলতে মাঠে আসেননি রায়হান রাফীর দলের কেউ। বিকাল ৫টা নাগাদ প্রথম পর্বের খেলা শেষ হয়। বিরতির পর সন্ধ্যায় শুরু হয় সেমিফাইনাল।
প্রথম সেমিফাইনালে চয়নিকা চৌধুরীর দলকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে দীপঙ্কর দীপনের দল। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে সকাল আহমেদের দলের মুখোমুখি হওয়ার কথা সালাউদ্দীন লাভলুর দলের।
কিন্তু দ্বিতীয় সেমিফাইনালে এসে হঠাৎ থেমে যায় খেলা। দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় দুই দলের খেলোয়ার মাঠে থাকলেও খেলা শুরু হয়নি। কেন শুরু হয়নি, তার ব্যাখ্যাও স্পষ্ট করেনি আয়োজক কমিটি।
দুই দলের একাধিক খেলোয়াড়ের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মূলত তালিকার বাইরের খেলোয়াড় মাঠে নামানোকে কেন্দ্র করে দুই দল পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।
রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দুই দলের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছিল আয়োজক কমিটি। এসময় অনেক দর্শক ও সংবাদকর্মী বিরক্ত হয়ে মাঠ থেকে চলে যান।
খেলার অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলার জন্য আয়োজক প্রতিষ্ঠান জি নেক্সটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। কমিটির একাধিক সদস্যের সঙ্গে মাঠে কথা বলতে চাইলে তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলকে উৎসাহ যোগাতে ঢাকার মিরপুর ইনডোর স্টেডিয়ামে তিন দিনের এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল ২৮ সেপ্টেম্বর, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ সেপ্টেম্বর। তবে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতের খেলার পর মারামারির কারণে তা বন্ধ রাখা হয়।
সেদিন রাত ১০টার খেলায় নির্মাতা মোস্তফা কামাল রাজের দলের কাছে অল্প রানে হেরে যায় আরেক নির্মাত দীপংক দীপনের দল। ম্যাচ শেষে রাত সাড়ে ১১টার পর পাল্টাপাল্টি মন্তব্যের জেরে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। খেলোয়াড়দের কটাক্ষের সূত্র ধরে দুই দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।
পরদিন সংবাদ সম্মেলন করে খেলা সাময়িক স্থগিত করে আয়োজক কমিটি। একই সঙ্গে মারামারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। তবে মামলায় কতজনকে আসামি করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেনি আয়োজক প্রতিষ্ঠান।
মঙ্গলবার খেলার মাঠে কয়েকজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন খেলোয়াড়কে এ দিনের খেলায় অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অব্যাহতি পাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন চিত্রনায়ক শরীফুল রাজ, পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নিয়ামূল, মোহন আহমেদ, চিত্রনায়িকা রাজ রীপা ও সোহাগ রানা।
তবে সেদিনের ঘটনার পর ফেইসবুকে পোস্ট করে সিসিএল বয়কটের ঘোষণা দিয়েছিলেন রাজ রীপা। এ চিত্রনায়িকার ভাষ্য, তিনিই সিসিএল বয়কট করেছেন।
মঙ্গলবার মাঠে ছিলেন সালাউদ্দীন লাভলু, দীপঙ্কর দীপন, চিত্রনায়ক বাপ্পি, সাইমন সাদিক, রোশান, নাদিয়া, শখসহ অনেকেই। আর চঞ্চল চৌধুরী, আফরান নিশো, তমা মির্জা, মেহজাবীন, তাসনিয়া ফারিণদের না পেয়ে হতাশ হন দর্শক।
চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক গ্লিটজকে বলেন, “অনেকটা হুট করেই প্রস্তুতি ছাড়া আমরা ম্যাচ খেলেছি, তবে আনন্দ পেয়েছি। আমরা এই খেলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের জন্য শুভকামনা জানাতে চাই। আশা করি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো করবে।”
সালাউদ্দিন লাভলু বলেন, “সেলিব্রেটি ক্রিকেট লিগে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি কাম্য ছিল না। পরে আমরা আলোচনা করে ম্যাচগুলো শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সবাইকে আসতে বলা হয়েছে। অনেকে আসেননি, হয়তো ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে।”
মোট আটটি দলে ভাগ হয়ে বিনোদন অঙ্গনের তারকা ও কলাকুশলীরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। প্রতি দলে নারী-পুরুষ তারকারা অংশ নিয়েছেন ১৮ জন করে।
এসব দলের নেতৃত্বে আছেন গিয়াস উদ্দিন সেলিম, সালাহউদ্দিন লাভলু, শিহাব শাহীন, চয়নিকা চৌধুরী, দীপংকর দীপন, সকাল আহমেদ, মোস্তফা কামাল রাজ ও রায়হান রাফী।