শুক্র এবং শনিবার এই প্রদর্শনী হবে উত্তরার রবীন্দ্র সরণী ও বটতলা মুক্ত মঞ্চে। এই প্রদর্শনীতে দুই দিনে চারটি সিনেমা দেখান হবে।
Published : 30 Aug 2024, 05:23 PM
বানভাসিদের সহায়তায় রাজধানীর উত্তরায় দুই দিনে চারটি সিনেমা দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। সিনেমা প্রদর্শনীর পাশাপাশি বন্যার্তদের সহায়তায় তহবিল সংগ্রহের কাজ চলবে।
দেশের সিনেমা নির্মাতাদের মধ্যে কয়েকজন ‘বন্যার্তদের পাশে চলচ্চিত্রকর্মীরা’ শিরোনামে এই আয়োজন করেছেন।
পরিচালক রাশিদ পলাশ গ্লিটজকে বলেছেন, শুক্র এবং শনিবার এই প্রদর্শনী হবে উত্তরার রবীন্দ্র সরণী ও বটতলা মুক্ত মঞ্চে। এই প্রদর্শনীতে দুই দিনে চারটি সিনেমা দেখান হবে।
শুক্রবার উদ্বোধনী দিনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দেখান হবে রাশিদ পলাশের ‘পদ্মাপুরাণ’ সিনেমাটি।
পলাশ গ্লিটজকে বলেন, "আমরা যারা সিনেমার কারিগর, আমাদেরই কিছু ভাই এখন নোয়াখালী, ফেনীতে ঘুরে ঘুরে ত্রাণ বিতরণ করছেন। চার পাঁচদিন ধরে তারা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। একটা টিম যাচ্ছে আরেকটা টিম আসছে। আমরা বিভিন্নভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। সেই জায়গা থেকেই উন্মুক্ত স্থানে চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছি। এটা উত্তরা থেকে শুরু হল আমরা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন জায়গায় যাব।"
বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের সহযোগিতা করাই এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য জানিয়ে পলাশ বলেন,"আমাদের সিনেমাগুলো মানুষ দেখুক এবং বন্যার্তদের জন্য যার যার জায়গা থেকে কিছু না কিছু সাহায্য করুক। মানুষের অংশগ্রহণ বা মানুষের একত্রিত করার জন্য এই উদ্যোগ। আমরা মানুষকে জমায়েত করার চেষ্টা করছি।"
এই প্রদর্শনীতে কোনো টাকা লগ্নি করতে হয়নি এবং নির্মাতাদের সম্বলিত প্রচেষ্টায় এই আয়োজন করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পলাশ।
তিনি বলেন," এখান থেকে আমরা কোনো ধরনের ব্যবসাও করছি না। যার যা কিছু আছে তা নিয়েই এই উদ্যোগ, কেউ সাউন্ড বক্স, কেউ প্রজেক্টে দিচ্ছে, কারো লাইট এভাবেই এই আয়োজন হচ্ছে।"
‘পদ্মাপুরাণ’ সিনেমাটি নিয়ে রাশিদ বলেন,"এই সিনেমাটি যখন নির্মাণ করেছিলাম তখন মানুষের সহযোগিতা ছিল বলেই সম্ভব হয়েছে। এতদিন পরে আবার সিনেমাটি মানুষকে দেখানোর সুযোগ হচ্ছে এটাও বড় একটা ব্যাপার। আমরা যেহেতু চলচ্চিত্র কর্মী সিনেমাই আমাদের সম্পদ। আমরা সিনেমাগুলো মানুষকে দেখিয়ে আহ্বান জানাব যে আমাদের দেশের এতগুলা জেলা পানিতে ভাসছে আপনারা তাদের পাশে দাঁড়ান।"
পদ্মাতীরের জনগোষ্ঠির জীবন নিয়ে নির্মিত নীরিক্ষাধর্মী চলচ্চিত্র ‘পদ্মাপুরাণ’। এতে তিন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী সাদিয়া মাহি।
মাহি ছাড়াও এতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন চম্পা ও শম্পা রেজা। সঙ্গে আরও আছেন প্রসূন আজাদ, বিপাশা কবির, কায়েস চৌধুরী, শিমুল খান।
একই দিনে সাড়ে আটটায় দেখানো হবে মুহাম্মদ কাইউমের পরিচালনায় ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমাটি। ভাটি অঞ্চলের কৃষিজীবী মানুষের জীবন-সংগ্রামের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। হাওরের অধিবাসী দরিদ্র মানুষের জীবিকার সংকট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার কাহিনীও দেখানো হয়েছে এই সিনেমায়।
এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবিশ, উজ্জ্বল কবির হিমু, সুমি ইসলাম, সামিয়া আকতার বৃষ্টি, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলম ও আবুল কালাম আজাদ।
দ্বিতীয় দিন শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় প্রদর্শিত হবে খিজির হায়াত খানের ‘ওরা ৭ জন’। সাতজন মুক্তিযোদ্ধার যুদ্ধের ময়দানের বীরত্বগাথা এবং একটি আত্মঘাতী রেসকিউ মিশন অবলম্বন করে চলচ্চিত্রটির গল্প আবর্তিত হয়েছে।
এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন ইন্তেখাব দিনার, শিবা শানু, জয় রাজ, জাকিয়া বারি মম, নাজিয়া হক অর্ষা, সাইফ খান, ইমতিয়াজ বর্ষণ, শাহরিয়ার ফেরদৌস সজিব, নাফিস আহমেদ, খালিদ মাহবুব তুর্য, আজম খান, তাসনিম তাশফী, খিজির হায়াত খানসহ আরো অনেকে।
এই প্রদর্শনী শেষ হবে খন্দকার সুমনের ‘সাঁতাও’ দেখিয়ে। রংপুর অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের জীবন ও সংকটের গল্পে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।
যেখানে দেখানো হয়েছে কৃষকের সংগ্রামী জীবন, নারীর মাতৃত্বের সর্বজনীন রূপ ও সুরেলা জনগোষ্ঠীর সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না।
সিনেমার কৃষক চরিত্রে অভিনয় করেন অভিনেতা ফজলুল হক ও তার স্ত্রীর ভূমিকায় রয়েছেন আইনুন পুতুল।
অন্যান্য চরিত্রে আরও অভিনয় করেছেন সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার, আফরিনা বুলবুল, রুবল লোদী, আলমগীর কবীর, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল।