আগামী সপ্তাহে সেন্সর বোর্ডে রাশিদ পলাশের 'রঙবাজার' জমা পড়বে।
Published : 02 Sep 2024, 09:00 AM
একটি যৌনপল্লী উচ্ছেদের ঘটনা নিয়ে প্রায় দুই বছর আগে পরিচালক রাশিদ পলাশ নির্মাণ করেছিলেন সিনেমা 'রঙবাজার'। শুটিং ও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ অনেক আগে শেষ হলেও সিনেমাটি নিয়ে বেশিদূর আগাতে পারেননি তিনি। কারণ শঙকায় ছিলেন, সেন্সর বোর্ডে আটকে যেতে পারে তার নির্মাণটি।
তবে ক্ষমতার পালাবাদলে সব দুরাশাকে ঠেলে সরিয়ে সিনেমাটি আগামী সপ্তাহে সেন্সর বোর্ডে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পলাশ।
পরিচালক পলাশ গ্লিটজকে বলেন, “বেশ কয়েকবার সেন্সরে জমা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও একটা আতঙ্ক আমাদের ভেতরে ছিল। সেন্সর বোর্ডে গেলে সিনেমায় এক ধরনের বাঁধা আসতে পারে। আর একবার আটকে গেলে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হবে। তবে এখন দেশের পট পরিবর্তন হয়েছে। আশা করছি, আর সমস্যা হবে না। তাই আগামী সপ্তাহে সিনেমাটি সেন্সরে যাবে আশা করছি।"
সেন্সরে কী ধরনের বিপত্তির ভয় ছিল প্রশ্নে পলাশ বলেন, “সিনেমায় টানবাজারের (নারায়ণগঞ্জের এক সময়ের যৌনপল্লী) উচ্ছেদ পরিকল্পনা এবং উচ্ছেদ পরবর্তী কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেসব গল্প আমরা সিনেমায় তুলে ধরেছি। সিনেমায় বেশকিছু স্পর্শকাতর জায়গা আছে এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে উঠে এসেছে।
“আমরা সিনেমায় অনেকগুলো মুখোশ খোলার চেষ্টা করেছি। সেই জায়গা থেকে আতঙ্ক ছিল। সিনেমাটি প্রস্তুত করে আমরা বেশ কয়েকবার দেখেছি। সেসময় একের পর এক সিনেমা সেন্সর বোর্ডে আটকে দিচ্ছিল। তাই আমিও ভয় পেয়েছিলাম। কারণ সিনেমা একবার আটকে গেলে সেটা সেন্সর বোর্ডের জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে যায়।"
গোলাম রাব্বানীর চিত্রনাট্য ও সংলাপে সিনেমার গল্পে উঠে এসেছে ৪০০ বছরের পুরনো যৌনপল্লী এক রাতেই গুঁড়িয়ে দেওয়ার সত্য ঘটনা।
পলাশের ভাষ্য, "নারায়ণগঞ্জকে পাপ মুক্ত করতে টানবাজার ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই পাপ মুক্ত করতে গিয়ে যে পুরো পাপটি সমাজে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সেটার পেছনেও যে রহস্য ছিল সেই গল্পটা আমরা বলার চেষ্টা করেছি।"
‘রঙবাজারে’ কাজ করেছেন শম্পা রেজা, তানজিকা আমিন, নাজনীন হাসান চুমকি, জান্নাতুল পিয়া, মৌসুমী হামিদ, লুৎফর রহমান জর্জ, মিঠুসহ এক ঝাঁক শিল্পী।
রাজবাড়ির গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় হয়েছে সিনেমাটির শুটিং।
শুটিংয়ের সময় কোনো জটিলতা তৈরি হয়েছিল কী না জানতে চাইলে পলাশ বলেন, “টানা শুটিং করেছিলাম দৌলতদিয়া। সেখানে সবচেয়ে বড় যৌনপল্লীতে আমরা দীর্ঘদিন শুট করেছি। সব অভিনয়শিল্পীরা সেখানেই ছিলেন। সেখানে যাওয়ার আগে শিল্পীদের মধ্যে একটা সাসপেন্স কাজ করছিল। কী পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় সেটা নিয়ে তারা চিন্তিত ছিল।
"কিন্তু আমাকে খুব অবাক করে দিয়ে অভিনয় শিল্পীরা খুব অল্প সময়েই তাদের সঙ্গে মিশে যান। সেখানকার মেয়েরা আমার শিল্পীদের অনেক যত্নে রেখেছিলেন। খাবার-দাবারের ব্যবস্থা করা থেকে যে পরিমাণ সাহায্য তারা করেছেন সেটা অবাক করার মত। শিল্পীরা পল্লীর মেয়েদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে গল্প করছেন, তাদের সঙ্গে মিশে গিয়ে চরিত্রটা খুব দ্রুত কানেক্ট করে নিয়েছেন। সবাই সেখানে থেকে রিহার্সাল করেছেন। আমি খুব অনায়াসে শুটিং শেষ করি এবং শিল্পীরাও বেশ খুশি ছিলেন কাজটি নিয়ে।”
পলাশ বলেছেন, সেন্সরে সিনেমা জমা পড়ার পর দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি সাপেক্ষে প্রযোজকরা চলতি বছরে মুক্তির সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
লাইভ টেকনোলজি প্রযোজিত এই সিনেমায় তিনটি গান রয়েছে। সংগীত আয়োজন করেছেন জাহিদ নীরব।