মানসিক নির্যাতন, লিঙ্গ বৈষম্যমূলক আচরণ এবং নিম্ন মজুরি দেওয়ার দায়ে সাবেক সহকারীকে মোটা অংকের জরিমানা দিতে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্কার জয়ী অভিনেতা রবার্ট ডি নিরোর।
বিবিসি বলছে, কিছুদিন আগে এক মামলায় হেরে গেছেন অভিনেতা নিরো; তারই খেসারত গুণতে হচ্ছে।
আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সাবেক সহকারী গ্রাহাম চেজ রবিনসনকে ১২ লাখ ডলার দিতে হবে।
নিরোর বিরুদ্ধে এই অর্থ ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিলেন রবিনসন।
২০১৯ সালে নিরোর বিরুদ্ধে করা মামলার অভিযোগে রবিনসন বলেছিলেন, অস্কারজয়ী ওই অভিনেতা তার সঙ্গে 'অনেকটা উপপত্নী'র মত আচরণের চেষ্টা করেছিলেন। এছাড়া তার (রবিনসন) সঙ্গে নানা সময়ে 'অসঙ্গতিমূলক' আচরণ করেছেন নিরো, যা প্রত্যাশিত ছিল না। কাজের বিনিয়মে 'কম বেতন' পাওয়ারও অভিযোগ ছিল রবিনসনের।
২০০৮ সালে নিরোর সঙ্গে কাজ শুরু করেন রবিনসন। প্রথমে ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেলেও নিরোর প্রোডাকশন হাউস ক্যানাল প্রোডাকশনের আর্থিক দিকটাও দেখভাল করতেন। সেই সঙ্গে এই নারীকে প্রোডাকশন বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদোন্নতি দেন নিরো।
১১ বছর চাকরি করে ২০১৯ সালে পদত্যাগ করে নিরোর বিরুদ্ধে 'মানসিক যন্ত্রণা এবং সুনাম নষ্টের' অভিযোগে মামলা ঠুকে দেন রবিনসন।
সে সময় রবিনসনের ভাষ্য ছিল, " কাজের সময়ে বিনাকারণে ধমক-ধামকও দেওয়া ছাড়াও নিরো কথাবার্তায় অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করতেন এবং লিঙ্গ বৈষম্য প্রকটভাবে দেখা যেত তার কথা ও আচরণে।"
রবিনসনের ওই অভিযোগ অস্বীকার করে নিরো বলেন, "আমি কখনও আপত্তিকর ব্যবহার তার (রবিনসন) সঙ্গে করিনি। তবে কাজের ক্ষেত্রে কখনও কখনও আমি মেজাজ হারিয়েছি। "
এরপর নিরো ক্যানাল প্রোডাকশনের তহবিল তছরুপের অভিযোগে রবিনসনের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ ডলারের মামলা করেন।
কিন্তু আটদিনের শুনানিতে দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণের পর জুরিরা রবিনসনের বিরুদ্ধে আর্থিক অসদাচরণের কোনো প্রমাণ পাননি। যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ ও ঘটনা নিরোর বিরুদ্ধে যাওয়ায় রবিনসনকে ১২ লাখ ডলার দিতে নিরোকে নির্দেশ দেয় আদালত।
রায় ঘোষণার সময় নিরো আদালতে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছে বিবিসি।
মাসখানেক আগে ৭৯ বছর বয়সে সপ্তম সন্তানের বাবা হওয়ার খবর দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন নিরো।
এই তারকা ব্যক্তি জীবনে একাধিক বিয়ে করেছেন। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’, ‘দ্য গডফাদার : পার্ট টু’, ‘র্যাগিং বুল’, ‘অ্যাওয়েকেনিংস’ ও ‘দ্য ইন্টার্ন’র মত জনপ্রিয় সিনেমা।
তার অভিনীত সিনেমার সংখ্যা শখানেকের বেশি। পুরস্কারের ঝুলিটাও তার বেশ বড়। বেশ কয়েকটি ছবির সেরা অভিনেতা হিসেবে অস্কারে মনোনীত হন তিনি। ‘দ্য গডফাদার টু’ ও ‘র্যাগিং বুল’ সিনেমা তাকে এনে দেয় অস্কার। এ ছাড়া ব্রিটিশ একাডেমি অ্যাওয়ার্ড ও গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসহ বিভিন্ন পুরস্কারও পান তিনি।