আশুগঞ্জ নদী বন্দরের ব্যয় বেড়েছে ৪৫৮ কোটি টাকা

ভারতীয় ঋণের (এলওসি) আওতায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 August 2022, 04:13 PM
Updated : 16 August 2022, 04:13 PM

আশুগঞ্জ নৌবন্দরকে ‘আরও আধুনিক’ করে গড়ে তুলতে নকশা পরিবর্তন করায় এ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৩৫ শতাংশ, সেই সঙ্গে মেয়াদও বাড়ছে আরও দুই বছর।

ভারতীয় ঋণের (এলওসি) আওতায় বাস্তবায়নাধীন ‘আশুগঞ্জ অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার নদী বন্দর স্থাপন’ প্রকল্পের ব্যয় ৪৫৮ কোটি টাকা বেড়ে হচ্ছে মোট ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। সংশোধিত প্রকল্পে ২০২৪ সালের মধ্যে এ কাজ শেষ করার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্প সংশোধনের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান।

বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে সড়ক ও রেল সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল ও ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ অনেক বেড়ে যাবে। আবার মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্যও অনেক বেড়ে যাবে।

“ভবিষ্যতের বাণিজ্য সম্প্রসারণের কথা মাথায় রেখে অন্যান্য বন্দরের সঙ্গে সমন্বয় করে কার্গো হ্যান্ডলিং সক্ষমতা আরও বাড়ানোর উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।”

যে ৪৫৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ছে, তাতে ভারতীয় এলওসি থেকে অতিরিক্ত যোগান দেওয়া হবে ৩০১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সব মিলে এ প্রকল্প এলওসি থেকে ৭৩২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা পাবে। এর আগে ভারতের দেওয়ার কথা ছিল ৪৩১ কোটি টাকা।

সংশোধনীর কারণে ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিলের ব্যয় ১৫৬ কোটি টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ১৮ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ সরকারের তহবিল থেকে ৮৬২ কোটি টাকার যোগান দেওয়ার কথা ছিল।

মন্ত্রী বলেন, “আমাদের পূর্বাঞ্চলে ভারতের সেভেন সিস্টার। ভারতের কেন্দ্র বা পশ্চিমাঞ্চল থেকে এই সাত রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগ কঠিন ও অনেক সময়ের দরকার হয়। অথচ ভারতের এই সাত রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ এবং খুব কম সময়ে যাতায়াত করা যায়।

“ভারতের এই সাত রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বিপুল বাণিজ্যিক সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আশুগঞ্জ নদী বন্দরকে আধুনিকায়ন করে সক্ষমতা আরও বাড়াতে প্রকল্পটি সংশোধন করা হয়েছে।”

তিনি জানান, এ নদী বন্দরের পরিসর ও সক্ষমতা বাড়াতে নকশা পরিবর্তন করা হয়েছে। এছাড়া বন্দরের অবকাঠামোগত সুবিধাসহ জেটি সুপারস্ট্রাকচার, পাইলিং, জেটি ফিটিং সংক্রান্ত কার্যক্রমেও ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।

একনেক বৈঠকে এদিন আশুগঞ্জ প্রকল্পটিসহ ২ হাজার ৫০৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ের মোট ছয়টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৬২৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা আর বাকি ৮৭৬ কোটি ৬২ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা থেকে যোগান দেওয়া হবে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হল-

>> ‘সোনাপুর-কবিরহাট-কোম্পানিগঞ্জ (বসুরহাট)-দাগনভূঁইয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-১৪৮) যথাযথ মানে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প; ব্যয়: ৪৫৭ কোটি টাকা।

>> ‘গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক (জেড-৭৬০৬) এর ২৮তম কিলোমিটারে চুনকুড়ি নদীর উপর চুনকুড়ি সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প; ব্যয়: ৭৪৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।

>> ’কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ৪৬৯ কোটি ১৫ লাখ টাকা।

>> ‘বিসিক মুদ্রণ শিল্প নগরী (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প; ব্যয় বেড়েছে ১২৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

>> ‘বরেন্দ্র এলাকায় খালে পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্প-২য় পর্যায়’ প্রকল্প; ব্যয় ২৪৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা।