সরকার সব বাজেটেই পরবর্তী নির্বাচনের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এতে ‘অন্যায়’ কিছু নেই, মন্তব্য কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের।
Published : 02 Jun 2023, 07:32 PM
নির্বাচনী বছরে জনতুষ্টির প্রচেষ্টা বাজেটের মাধ্যমে চালানোর বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, নির্বাচন আর বাজেট পরস্পর সম্পর্কিত। বাজেট নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার জন্য উপকারী হতেই পারে।
শুক্রবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, “আমি আগেই বলেছি, আমাদের বাজেট হচ্ছে দেশের মানুষের জন্য আর নির্বাচনও হচ্ছে দেশের মানুষের জন্য।“
অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের এবারের মেয়াদের শেষ বাজেট এটি। এ বাজেটের ছয় মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করার কথা রয়েছে।
তবে মূল্যস্ফীতিসহ বহুমুখী চাপে থাকা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে বাজেটে নির্বাচনমুখী খুব বেশি পদক্ষেপের দেখা মেলেনি। সাধারণের জন্য অন্যান্য বছর নির্বাচনের আগে জনতুষ্ঠির জন্য যেসব পদক্ষেপ ও নীতি নির্ধারণী ঘোষণা থাকে এবার সেগুলো সেভাবে করা হয়নি। যদিও ভর্তুকি কমাতে আইএমএফের চাপ থাকলেও তা পুরোপুরি রাখেননি অর্থমন্ত্রী। জ্বালানি ও বিদ্যুতের দাম আগামীতে বাজারমূল্যের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘোষণা দিলেও ভুর্তকি বজায় রেখেছেন এবং মোট ভর্তুকি বাড়িয়েছেন।
অপরদিকে ব্যয় সাশ্রয়ের বর্তমান নীতি থেকে বেরিয়ে পর্যায়ক্রমে প্রকল্পে গতি আনার কথা বলেছেন। এর মাধ্যমে তিনি সরকারি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অর্থনীতিকে সচল রাখার পদক্ষেপ নিতে চেয়েছেন।
এমন প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
এর জবাবে অর্থমন্ত্রী একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটা অচল মন্তব্য করে বলেন, দুটোকেই সচল রাখার জন্য বাজেটের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। পাশাপাশি নির্বাচনের জন্য যদি কোনো উপকার হয়, হবে। সেটা মানুষের জন্যই হবে এবং মানুষ এটার ভাগ পাবে।
“আমি মনে করি যে, এভাবে আমরা চলি।”
একই প্রশ্নে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, সরকার সব বাজেটেই পরবর্তী নির্বাচনের বিষয় বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এতে ‘অন্যায়’ কিছু নেই।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য বলেন, “এটা ১৫তম বাজেট; প্রত্যেকটা বাজেটে আমরা দিয়েছি আগামীর যে নির্বাচন হবে, ১৪ এর নির্বাচন, ১৮ এর নির্বাচন এবং ২৩ এর নির্বাচন… সব নির্বাচনেই একটি রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্য থাকে, সেই নির্বাচনে আমরা জিততে চাই।
“নির্বাচনে জিততে হলে এদেশের জনগণকে, সাধারণ মানুষকে, গরিব দুঃখী মানুষকে কীভাবে আমরা তাদের যে চাহিদা, তাদের যে দুঃখ-দুর্দশা এটাকে কমিয়ে তাদেরকে একটি সুন্দর জীবনের দিক নির্দেশনা কীভাবে দিতে পারি। কাজেই ২৩ সালের নির্বাচন না, সকল নির্বাচনকেই আমরা লক্ষ্য রাখি।”
তিনি বলেন, “কাজেই বাজেটে বরাদ্দ করি যে, যার মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষকে, জনগণকে আমরা খুশি করতে পারি। সুতরাং আমরা যদি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাজেট দিই, এতে আমি মনে করি না যে কোনো অন্যায়। সবসময় আমরা মানুষের কল্যাণমূলক চিন্তা করেই বাজেট দিই।”
কৃষিমন্ত্রী দাবি করেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহার থেকে শুরু করে তিন মেয়াদের সরকার আওয়ামী লীগ যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তার সবগুলো পূরণ করেছে। তার ধারাবাহিকতায় দেশের জিডিপি চার লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে এখন ৪৪ লাখ কোটি টাকা হয়েছে।
বাজেট আইএমএফের শর্ত মেনে নয়: অর্থমন্ত্রী