টবগী-১ কূপে ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ

ওই কূপ থেকে দৈনিক গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছে বাপেক্স।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2022, 03:21 PM
Updated : 3 Nov 2022, 03:21 PM

ভোলা জেলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের টবগী-১ কূপ খননের পর প্রায় ২৩৯ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের (বিসিএফ) সম্ভাব্য মজুদ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভূতাত্ত্বিক তথ্য এবং কারিগরি পরীক্ষার (ডিএসটি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩২/৬৪ ইঞ্চি আকারের চোক ব্যবহার করে এই কূপ থেকে দৈনিক গড়ে ২০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া সম্ভব। এই হিসাব ঠিক থাকলে ওই কূপ থেকে আনুমানিক ৩০-৩১ বছর গ্যাস পাওয়া যবে। 

“গ্রাহক পর্যায়ে ১১ টাকা করে যদি ধরি, তবে ওই মজুদের মূল্য দাঁড়াবে ৮ হাজার কোটি টাকার মত। আর যদি এলএনজির মূল্যে ধরি, তাহলে অনেক হবে।”

দুই বছর আগে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানির (বাপেক্স) ভূতাত্ত্বিক জরিপের ভিত্তিতে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে টবগী ১ কূপ থেকে দৈনিক ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার আশার কথা জানানো হয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের মধ্যে দেশে গ্যাসের উত্তোলন বাড়াতে সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে মোট ৪৬টি অনুসন্ধান, উন্নয়ন ও ওয়ার্কওভার কূপ খননের পরিকল্পনা করেছে। এর অংশ হিসেবে ভোলায় গ্যাস খুঁজতে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ার কোম্পানি গ্যাজপ্রমের সঙ্গে বাপেক্সের চুক্তি হয়।

Also Read: ভোলায় একটি গ্যাস কূপে খনন শুরু, আরও দুটি করবে গ্যাজপ্রম

ভোলায় গ্যাস খুঁজতে বাপেক্সের সঙ্গে যুক্ত হল গ্যাজপ্রম

বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে চায় গ্যাজপ্রম

বাপেক্সের সক্ষমতা বাড়লেও শাহবাজপুরে গ্যাজপ্রম কেন, বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন 

সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরের ১৯ অগাস্ট টবগী-১ অনুসন্ধান কূপ খননের কাজ শুরু করে গ্যাজপ্রম। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ৩ হাজার ৫২৪ মিটার গভীরতা পর্যন্ত খনন কাজ সম্পন্ন হয়। এরপর মঙ্গলবার সেখানে সম্ভাব্য মজুত ও উৎপাদনের হার নিরূপণে কারিগরি পরীক্ষা হয়।

শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রে থেকে টবগী-১ কূপ এলাকাটি আনুমানিক ৩ দশমিক ১৭ কিলোমিটার দূরে। ৭ নভেম্বর থেকে কূপটি উৎপাদনক্ষম করার লক্ষ্য নিয়ে এখন কাজ চলছে বলে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।

দুই বছর আগে বাপেক্সের একটি অনুসন্ধান দল ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ করে ভোলার তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পায়। পরে সেগুলোর নাম দেওয়া হয় ইলিশা ১, ভোলা নর্থ ২ ও টবগী ১ গ্যাস কূপ। এগুলো নিয়ে দ্বীপ জেলা বর্তমান গ্যাস কূপের সংখ্যা দাঁড়ায় নয়টি।

টবগী-১ এর মত বাকি দুটো কূপও গ্যাজপ্রম খনন করবে। তবে সেই কাজ কবে শুরু হবে সে তারিখ জানায়নি বাপেক্স।

বর্তমানে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রতিদিন গড়ে উত্তোলন হচ্ছে ৪৫-৪৬ মিলিয়ন ঘনফুট, যা চারটি বিদ্যুৎকেন্দ্র, একটি কারখানা ও আবাসিকে সরবরাহ করা হচ্ছে।

১৯৯৩-৯৪ সালের দিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নে শাহবাজপুরে গ্যাসক্ষেত্র খনন শুরু হয়। সেখানে বর্তমানে চারটি কূপ থেকে গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। শাহবাজপুরে প্রায় ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট (টিসিএস) গ্যাস মজুদ রয়েছে।

এছাড়া শাহবাজপুর ইস্ট কূপে ৭০০ বিলিয়ন ঘনফুট এবং ভোলা নর্থ গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ রয়েছে বলে বাপেক্সের ধারণা।