মূল্যস্ফীতি: শহরের চেয়ে গ্রাম ভুগছে বেশি

“সারা দুনিয়ায় মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, আমাদেরও বেড়েছে,” বললেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Oct 2022, 03:42 PM
Updated : 11 Oct 2022, 03:42 PM

অবশেষে অগাস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য একসঙ্গে প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস); দেখা যাচ্ছে, শহরের চেয়ে গ্রামে এবং খাবারের চেয়ে জীবন চালানোর অন্যান্য খাতে মানুষের খরচ বেড়েছে বেশি।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মঙ্গলবার একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে জানান, অগাস্ট মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে, অর্থাৎ আগের বছরের একই মাসের তুলনায় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর সেপ্টেম্বরে এই হার হয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ।

তার মানে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিলেন, সেই একই পণ্য বা সেবার জন্য এ বছরের সেপ্টেম্বরে খবর হয়েছে ১০৯ টাকা ১০ পয়সা।

পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত বছরের অগাস্টে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে এই হার ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ ছিল।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, অগাস্টে খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বর মাসে কিছুটা কমে হয় ৯ দশমিক ০৮ শতাংশ।

খাদ্য বহির্ভূত খাতে অগাস্টে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৮ দশমিক ৮৫, যা সেপ্টেম্বরে হয়েছিল ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ।

গ্রামাঞ্চলের অগাস্ট মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ৭০ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে তা ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ হয়েছে।

এর মধ্যে খাদ্য খাতের মূল্যস্ফীতি ছিল অগাস্টে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ, সেপ্টেম্বরে ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

আর দুই মাসে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে ৯ দশমিক ১৮ এবং ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

শহরাঞ্চলে অগাস্টে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ; সেপ্টেম্বরে তা ৯ দশমিক ০৩ শতাংশ হয়েছে।

এর মধ্যে খাদ্য উপখাতে দুই মাসে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ এবং ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত উপখাতে যথাক্রমে ৮ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং ৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে।

গত দুই মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য এর আগে বিবিএস প্রকাশ না করলেও ৫ অক্টোবর পরিকল্পনা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরকে ধারণা দিয়েছিলেন, অগাস্টে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫ শতাংশে ওঠার পর সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে।

মঙ্গলবার একনেক সভার পর মূল্যস্ফীতির তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরে মান্নান বলেন, “মূল্যস্ফীতি মন্দ জিনিস। অর্থনীতির গোটা সিস্টেম থেকে এটা বেরিয়ে আসে। আমাদের একার পক্ষে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না।

Also Read: অগাস্ট-সেপ্টেম্বর দু’মাসেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি

“ইংল্যান্ডের মূল্যস্ফীতি এখন ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। সে দেশের অর্থমন্ত্রী ইতিমধ্যেই পূর্বাভাস দিয়েছেন, আগামী বছর এটা ১৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে।”

বিশ্ববাজারে পণ্যের মূল্য যেমন বাড়ছে, তেমনই জাহাজ ভাড়াও বাড়ছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “তেল-গ্যাসের দাম বাড়ছে; সেই তেল-গ্যাস সব জায়গায় ব্যবহার করতে হয়। এই পণ্য দুটির দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতি বাড়বেই।”

মূল্যস্ফীতি কীভাবে আরও নিয়ন্ত্রণ করা যায়, একনেক বৈঠকে সার্বিকভাবে সেই চেষ্টা চালাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রী মান্নান।

অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, “মূল্যস্ফীতি বাড়বে- এটা সবাই আশঙ্কা করছিল। সারা দুনিয়ায় বেড়েছে, আমাদেরও বেড়েছে। এখন আমাদের কমা শুরু হয়েছে।”

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. মামুন-আল-রশীদ, আইএমইডি সচিব আবু হেনা মুরশেদ জামানসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।