হরতাল আর অবরোধের ফাঁদে পড়ে ভরা মৌসুমেও পর্যটকদের আনাগোনা আশংকাজনক হারে কমে গেছে ভ্রমণ পিপাসুদের প্রিয় সিলেট অঞ্চলে।
Published : 16 Jan 2015, 03:50 PM
পর্যটক না আসায় এ শিল্পকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগে গড়ে ওঠা সহস্রাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট খাঁ খাঁ করছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তেমনি হোটেল-মোটেলে কর্মরত লোকজন অনেকটা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পড়ে অসহায় দিনযাপন করছেন।
এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নাশকতার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় অনেক প্রবাসীও দেশে আসছেন না। এতে সিলেটের পর্যটন শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন এ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টোয়াব কর্মকর্তারা।
এই হরতাল-অবরোধের কারণে পর্যাপ্ত পর্যটক না পাওয়ায় চলতি মৌসুমে শত কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করেছিলেন এবার একটি লাভের মুখ দেখবেন। বাড়বে পর্যটকের আনাগোনা।
কিন্তু বর্তমান পর্যটন মৌসুমেও বিএনপিসহ ২০ দলের টানা অবরোধ ও হরতালে সে আশা ভেস্তে যেতে বসেছে।
তাহমিন আহমদ বলেন, মূলত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই চার মাসকে পর্যটন মৌসুম ধরা হয়।
এ সময় প্রকৃতির টানে সিলেটের জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, লালাখাল, পাংথুমাই, ভোলাগঞ্জ, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর, বাইক্কা বিল, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া, হামহাম জলপ্রপাত, শ্রীমঙ্গলের চা বাগান, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর, টেকেরঘাট ও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঢল নামে দেশি-বিদেশি পর্যটকের।
ভ্রমণকারীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো।
এছাড়া হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসেন সিলেটে।
চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই হোটেল ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাঁধলেও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে নাশকতা ও হরতাল-অবরোধে পর্যটকদের আগমন থমকে গেছে। অনেক পর্যটক সিলেটে আসা বাতিল করে হোটেল বুকিংও বাতিল করেছেন, বলেন তাহমিদ।
সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, এখনই হোটেল-মোটেলের ব্যবসাবান্ধব সময়, কিন্তু হরতাল অবরোধে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
শুধু দেশি পর্যটকরা নয়, রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রবাসীরাও আসছেন না দেশে। এর প্রভাব পড়ছে এ শিল্পে।
প্রতিবছর যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোতে বসবাসকারী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী ডিসেম্বরে ছুটিতে দেশে আসেন। কিন্তু এবার রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রবাসীরা দেশে আসছেন কম।
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে নিরাপত্তার অভাবে সিলেটে পর্যটক আসা কমছে বলে মনে করেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
তবে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিষয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, পর্যটকরা নিরাপত্তা চাইলে তা দিতে প্রস্তত রয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের পর্যটকরা সিলেট আসার আগে পুলিশ সুপার অফিসে চিঠি দিলে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।