চালের বাড়তি দাম কৃষকদের স্বার্থে: পরিকল্পনামন্ত্রী

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সরকার পারলেও ‘কৃষকদের স্বার্থে’ বাজারে চালের দাম কমানো হচ্ছে না।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Jan 2018, 06:16 PM
Updated : 2 Jan 2018, 06:16 PM

চালের উচ্চ মূল্য নিয়ে সমালোচনার মধ্যে মঙ্গলবার একনেক সভার পর সংবাদ সম্মেলনে মূল্যস্ফীতির এই প্রান্তিকের হিসাব তুলে ধরার সময় একথা বলেন তিনি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৩ ভাগ।

তিন মাসের মূল্যস্ফীতির এ হার প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় কিছুটা বেশি। ওই তিন মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৮৬ ভাগ।

গত কয়েক মাসে চাল ও পেঁয়াজের দাম অনেক বাড়ার পরও মূল্যস্ফীতি কম হওয়ার কারণ সাংবাদিকরা জানতে চাইলে মুস্তফা কামাল বলেন, “মূল্যস্ফীতির হিসাবের ঝুড়িতে পেঁয়াজের ওয়েট (ওজন) খুবই নগন্য। আর চালের ওয়েট বেশি হলেও চালের দাম দ্বিতীয় প্রান্তিকের আগেই বাড়তে শুরু করেছে।”

এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকার চাইলে চালের মূল্য অনেক কমিয়ে আনতে পারে। কিন্তু কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভেবে সরকার করছে না।”

কীভাবে কমানো যায়, সেই উত্তরে তিনি বলেন, “সরকারের কাছে এত চাল জমা আছে, তা বাজার ছাড়লে বাজার সয়লাব হয়ে যাবে।”

গত বছরের এপ্রিলে হাওরে বন্যায় ফসলের ক্ষতির পর থেকে বাড়তে শুরু করে চালের দাম। সে সময় সরকারের গুদামগুলোতে চালের মজুদ ২ লাখ টনেরও নিচে নেমে আসে।

সে সুযোগে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে চালের দাম বাড়িয়ে দেয় বলে মন্ত্রীরা বলে আসছিলেন।

এরপর সরকার ব্যাপক আমদানি করলেও চালের দাম সামান্যই কমেছে।

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সম্প্রতি বলেছিলেন, কৃষকের লাভের জন্য চালের দাম একটু বাড়ুক, সেটা তিনিও চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা দাম অনেক বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে, যা ঠিক নয়।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামাঞ্চলে সাধারণ মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৫ দশমিক ৯৭ ভাগ। আগের প্রান্তিকে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৮৪ ভাগ। শহরাঞ্চলে সাধারণ মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮৬ ভাগ। প্রথম প্রান্তিকে এ হার ছিল ৫ দশমিক ৯১ ভাগ।

বিবিএসের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদনে দেখা যায়, অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ধারাবাহিকভাবে মূল্যস্ফীতি কমেছে। অক্টোবরে ছিল ৬ দশমিক ০৪ ভাগ, নভেম্বর হয় ৫ দশমিক ৯১ ভাগ এবং ডিসেম্বরে হয়েছে ৫ দশমিক ৮৩ ভাগ।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তিন মাসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়লেও আগামী এক মাসের মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।”

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী গত তিন মাসে তার আগের তিন মাসের তুলনায় খাদ্য খাতে- ডাল, ডিম, মাছ, মাংস, এবং শাক-সবজির দাম কমেছে।

আর খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মধ্যে পরিধেয় বস্ত্র, জ্বালানি, বিদ্যুৎ, বাড়িভাড়া, গৃহস্থালী আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সেবা, পরিবহণ এবং শিক্ষা উপকরণ ইত্যাদির দাম বেড়েছে।