“১৫ অগাস্ট, ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস এবং ২১শে অগাস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টাকারীরা সবই একই সূত্রে গাঁথা,” বলেন মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
Published : 04 Nov 2022, 12:44 AM
জাতীয় চার নেতাকে যথার্থভাবে স্মরণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
বৃহস্পতিবার বন্দর নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে জেল হত্যা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “জাতীয় চার নেতা বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাদেরকে আমরা যথার্থভাবে স্মরণ করছি না। আমি চাই এদেরকে যথার্থভাবে স্মরণ করার মাধ্যমে আমরা আমাদের অস্তিত্বের শেকড়কে খুঁজে পাব।”
নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সাবেক সিটি মেয়র নাছির বলেন, “অনেকেই দাবি করেছেন এই দিন থেকে রাষ্ট্রীয় দিবস পালন করা হোক। আমি মনে করি, এই দিনটি প্রতিদিন আমাদের অন্তরে থাকবে। কারণ তারাই আমাদের বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছেন।”
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার ভূমিকা, মূল্যায়ন ও অবদানকে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাতে ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “যদি তা পারতাম, আজ জিয়াউর রহমানের মত একজন কুখ্যাত স্বাধীনতা বিরোধীকে সামনে রেখে বিএনপি ও জামাত যেভাবে স্বাধীনতা বিরোধী অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে, তাকে প্রতিহত করতে পারতাম। এই সত্যটিকে আমাদেরকে উপলদ্ধি করতে হবে।
“বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার সুযোগে এবং সম্প্রতি রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে যে মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে, তাতে আমরাও সংকটে আছি। এই সংকট কেন হলো, কী কারণে হচ্ছে তা জনগণকে বোঝাতে হবে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে প্রচেষ্টাগুলো চালিয়ে যাচ্ছেন, তার বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে।”
সব সংকীর্ণতা পরিহার করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণকারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে নাছির বলেন, “ঐক্যের শক্তিই আমাদেরকে সামনের পথ দেখাবে। এই দৃঢ় প্রত্যয়ে বলীয়ান হয়ে তৃণমূল স্তর থেকেই দলীয় আদর্শে যারা বিশ্বাসী এবং ব্যক্তিক সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে আছেন- তাদেরকে নিয়েই দলকে সংগঠিত করতে হবে।”
সভায় নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “১৫ অগাস্ট, ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস এবং ২১শে অগাস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টাকারীরা সবই একই সূত্রে গাঁথা। এরা এখনও সক্রিয়।
“এদের আমরা নিমূর্ল করতে পারি নাই বলেই আমরা কেউ নিরাপদ নয়। এদের নির্মূল করতে পারলেই আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং শান্তি ও সাম্য নিশ্চিত হবে। শত্রুরা চারিদিকে বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলতে চাই। এরা যাদের পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে তাদের মধ্যে যারা আছেন তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি।”
মাহতাব বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শুভ সূচনা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে ৪ঠা ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ড ময়দানে যে নির্দেশনা দেবেন, তাকে অনুসরণ করেই আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের বিজয় অর্জিত হতে হবে।”
নগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন, খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু; সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক আদনান, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী মো. হোসেন, আবু তাহের, মো. শহিদুল আলম।
সভার শুরুতে জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।