র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবসার জানান, সরকারি হাসপাতাল থেকে কোনো রোগীকে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে কমিশন পান দালালরা। পরিস্থিতি ভেদে পাঁচ হাজার টাকাও কমিশন পান তারা।
Published : 20 Mar 2024, 05:48 PM
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে ৩৮ জন দালালকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
আটক হওয়া ৩৮ দালালদের মধ্যে ১৪ জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড এবং বাকী ২৪ জনকে এক মাসের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক নুরুল আবসার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ পেয়েই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে অভিযান চালিয়ে দালালদের আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, হাসপাতালে কয়েক শ্রেণির দালাল চক্র আছে। তাদের মধ্যে একটি চক্র বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা রোগীর স্বজনদের হাসপাতালে চিকিৎসার অপ্রতুলতার কথা বলে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাদের আবারা কেউ কেউ হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দিলে কম দামে করিয়ে দেয়ার কথা বলে বাইরের ডায়গনিস্টক সেন্টারে নিয়ে যান কমিশনের বিনিময়ে।
এছাড়াও হাসপাতালে থাকা নায্যমূল্যের দোকানের পরিবর্তে বাইরের দোকান থেকে রোগীর স্বজনদের ওষুধ কিনতে প্রলুব্ধ করারও একটি চক্র আছে হাসপাতালে।
র্যাব জানায়, সাধারণ রোগীরা অজ্ঞতার কারণে হাসপাতালে পদে পদে বাধাপ্রাপ্ত হয়। রোগীদের গাড়ি থেকে নামানোর পর ট্রলির ব্যবস্থা করা, ওয়ার্ডে নিয়ে সিট পাইয়ে দেয়ার কথা বলেও টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র।
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একটি চক্র চিকিৎসা নিতে আসা রোগী হাসপাতালে প্রবেশের পরপরই দূরারোগ্য রোগের ভীতি সঞ্চার করে দেয় স্বজনদের মনে। তখন তারা সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীকে বেসরকারি কোনো ক্লিনিকে নিয়ে যান।
এদিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কথাও উল্লেখ করেছে র্যাব।
এ চক্রের সদস্যরা রোগীদের স্থানান্তর, কিংবা মৃত্যুর পর লাশবাহী গাড়ি নিয়েও বাণিজ্য করে। তারা হাসপাতালের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও সেগুলো অকেজো এবং নানা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ব্যক্তি মালিকানাধীন অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে।
আটক দালালদের বরাত দিয়ে র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবসার জানান, কোনো রোগীকে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে কমিশন পান দালালরা। পরিস্থিতি ভেদে পাঁচ হাজার টাকাও কমিশন পান তারা।