চট্টগ্রামে এবার বিজয় মঞ্চের কর্মসূচি সীমিত থাকছে

আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচি ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভার কারণে বিজয় মঞ্চের কর্মসূচি সীমিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2022, 03:00 PM
Updated : 30 Nov 2022, 03:00 PM

চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উপলক্ষে মাসব্যাপী পণ্য মেলার আয়োজন থাকলেও আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচির কারণে এবারের বিজয় মঞ্চের আয়োজন চার দিনের অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ থাকছে বলে জানিয়েছে মেলা পরিষদ।

বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে মেলার কর্মসূচি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, ১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় আউটার স্টেডিয়ামে বিজয় মেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মাসব্যাপী পণ্য মেলার উদ্বোধন করবেন।

এবারের আয়োজনে আরও থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা, মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, বিজয় শিখা প্রজ্জ্বালন, বিজয় র‌্যালি ও নারী সমাবেশ।

এরমধ্যে ১৩ ডিসেম্বর বিকালে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের গোলচত্বরে বিজয় শিখা প্রজ্জ্বালন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভা, ১৫ ডিসেম্বর বিজয় মেলা পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভা এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিজয় মঞ্চের আয়োজন।

ইউনুছ বলেন, “৪ ডিসেম্বর পলোগ্রাউন্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা, ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন, ১৮ ডিসেম্বর নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন এবং ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। এসব কর্মসূচিতে সবার অংশগ্রহণের সুবিধার্থে বিজয় মঞ্চের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মো. ইউনুছ বলেন, “পুরাতন সার্কিট হাউজ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক স্থাপনা। ১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ১ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর রফিক, এম এ হান্নান ও ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রথম এখানেই বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

“এই স্থানে বিজয় স্তম্ভ স্থাপনের দাবি আমরা দীর্ঘদিন ধরে করছি। শুরুতে বিজয় মেলার অনুষ্ঠান পুরাতন সার্কিট হাউজের মাঠে হত। কিন্তু বিএনপির আমলে মীর নাছিরের নির্দেশে তা উচ্ছেদ করে আর যাতে করতে না পারি সেজন্য সেখানে শিশু পার্ক করা হয়। স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে দিতে তারা এ কাজ করে। আমাদের দাবি এটা সংরক্ষণ করা।”

বিজয় মেলা পরিষদের আয় ও বার্ষিক অডিট বিষয়ে জানতে চাইলে মো. ইউনুছ বলেন, “মেলার জন্য এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের আউটার মাঠ আমরা চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজেকেএস) কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়েছি ১০ লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে। মেলা করার জন্য কোনো স্থায়ী মাঠ আমাদের নেই।

“পরিষদের এক কোটি টাকার এফডিআর করে রেখেছি। আরও এক কোটি টাকা পাইপ লাইনে আছে। আমাদের পরিষদের চেয়ারম্যানের ইচ্ছে পরিষদের জন্য এক খণ্ড জমি, যেখানে একটি কমপ্লেক্স করা যাবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রতি বছর অডিট করেছি।”

‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বীর বাঙালির অহংকার’ স্লোগান নিয়ে ১৯৮৯ সাল থেকে বিজয়ের মাসে এই মেলার আয়োজন করা হয়। এবার মেলার ৩৪তম আয়োজন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজয় মেলা পরিষদের কো-চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বদিউল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা পান্টু লাল সাহা, জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, এস এম মাহবুবুল আলম, সৈয়দ মাহমুদুল হক, ফরিদ মাহমুদ, মো. ইউসুফ, এস এম আবদুল হালিম প্রমুখ।