“বিএনপিকে নির্বাচন-ভীতিতে পেয়ে বসেছে। সেজন্য ছাপানো ব্যালটেও ‘না’ এবং ইভিএমেও ‘না’ বলছেন তারা।”
Published : 05 Apr 2023, 09:27 PM
বিএনপি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন থেকে ‘পালালে’ একসময় দলটাই ‘হারিয়ে যাবে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বুধবার বিকালে চট্টগ্রামের এম এম আলী রোডে চট্টগ্রামে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিউ) এর বিশেষ সমাবর্তনের পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন ‘অনেকটা বিএনপির দাবি মেনে নিয়েই’ ইভিএম থেকে সরে ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
“আসলে বিএনপি ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের নিজেদের ওপরই কোনো আস্থা নাই। ক্রমাগতভাবে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেলে, এক সময় পুরো বিএনপি দলটাই জনগণের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।”
বিএনপি এতদিন ইভিএমে ভোট করার বিরোধিতা করে এসেছে, কারণ তাদের ভয়, ইভিএমে ‘কারচুপির সুযোগ’ আছে। এখন নির্বাচন কমিশন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সব আসনে ব্যালটে ভোট করার ঘোষণা দেওয়ার পরও নির্বাচন নিয়ে বিএনপি আগ্রহ পাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব।
গত দুই নির্বাচনের উদাহরণ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, “নিজেদের ওপর আস্থা নেই বলেই বিএনপি জনগণ থেকে দূরে সরে গেছে, সেটা তারা জানে। যার কারণে বিএনপিকে নির্বাচন-ভীতিতে পেয়ে বসেছে। সেজন্য ছাপানো ব্যালটেও ‘না’ এবং ইভিএমেও ‘না’ বলছেন তারা।”
তিনি বলেন, “আপনারা যদি একটু খতিয়ে দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন, বিএনপি ২০০৮ সালের নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। ২০১৪ সালে নির্বাচন থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ডান-বাম, অতিডান-অতিবাম ও তালেবানসহ সবাইকে নিয়ে ঐক্য করেছিল। ঐক্য করে তারা আসন পেয়েছিল মাত্র ছয়টি। পরে মহিলা আসনসহ হলো মোট সাতটি।”
বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, “নির্বাচন কমিশন অনেকটা তাদের দাবি মেনে নিয়েই ইভিএম থেকে সরে প্রিন্ট ব্যালটে ভোট করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এখানে তো বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর দাবিটাই মেনে নেওয়া হয়েছে বলে বলা যায়। সুতরাং এখন নির্বাচনের জন্য যদি তাদের দল গোছায় এবং নির্বাচনে আসে সেটি তাদের জন্যই মঙ্গল হবে।”
বিএনপি ‘পানি ঘোলা’ করার চেষ্টায় দেশ-বিদেশে ‘অপপ্রচার চালাচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান।
তিনি বলেন, “বিদেশিদের হাতে-পায়ে ধরে দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরি করা যায় কিনা সেই চেষ্টায় তারা সর্বদা লিপ্ত আছে। তবে এগুলো করে কোন লাভ হবে না।“
‘নারীদের অগ্রগতি হয়েছে’
এর আগে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের সমাবর্তন বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে নারীদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এখন দেশের প্রতিটি সেক্টরে নারীরা কাজ করছেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, পুলিশের এসপি-ডিসি আছেন নারী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রুবানা হকের অর্জনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “একজন রুবানা হককে দেখলে আপনি অনুমান করতে পারবেন কীভাবে নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে। তিনি ৮০ শতাংশ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প মালিক সমিতি বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব দিয়েছেন।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে শুধু রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নয়, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নও হয়েছে মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা শুধু শিক্ষিতই নয়, স্বনির্ভরও হয়ে ওঠে, সমাজে অবদান রাখার যোগ্যতা অর্জন করে।
“এশিয়ান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা অনেক দিক দিয়েই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় অনেক বেশি যোগ্য। আপনারা এখানকার শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দিচ্ছেন।”
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সমাজের ও নারীদের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখছে বলেও মন্তব্য করেন হাছান মাহমুদ।
সমাবর্তনে সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ব্যাসেল- এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক অ্যান্ড্রি শেনকারকে সম্মানসুচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বিনা খুরানার সভাপতিত্বে উপাচার্য রুবানা হক, প্রতিষ্ঠাতা উপ-উপাচার্য কামাল আহমেদ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নেহাল আহমেদ বক্তব্য দেন।